ঝুড়ি-ঝুড়ি: বাজারে বড় ইলিশ। নগেন্দ্রবাজারে। নিজস্ব চিত্র
নিম্নচাপের বৃষ্টির আগে মৎস্যজীবীদের ফিরতে হচ্ছিল খালি হাতে। কিন্তু দুর্যোগ কাটার পরে ইলিশ ধরার ক্ষেত্রে পরিস্থিতি অনেকটাই অনুকূল হয়েছে। মঙ্গল- বুধবার এই মরসুমের অনেক পরিমাণে ইলিশ উঠেছে বলে মৎস্যজীবীরা দাবি করেছেন। দু’দিনে কাকদ্বীপ মহকুমায় গভীর সমুদ্র থেকে এসেছে প্রায় সাড়ে ৩০০ মেট্রিক টন ইলিশ। মৎস্য বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, বৃষ্টিতে মিষ্টি জলের জোগান সমুদ্রে বাড়তেই এই সুফল মিলছে।
মৎস্যজীবীরা জানালেন, দুর্যোগের মরসুম কেটে যেতেই দরাজ সমুদ্র। গত দু’দিনে এক একটি ট্রলারে অনেক মাছ পাওয়া গিয়েছে। আগে যেখানে ১ কুইন্টাল মাছ ধরতে ঘাম বেরিয়ে যাচ্ছিল, সেখানে ৪-৫ কুইন্টাল ইলিশ ধরে ফিরছে এক একটি ট্রলার। নামখানার ট্রলারের মাঝি শ্যামাপদ জানা বলেন, ‘‘দীর্ঘ দিন ধরে ইলিশ পাচ্ছিলাম না। এখন ৬ কুইন্টাল মাছ পাওয়া গিয়েছে। বেশিরভাগই ৫০০ গ্রাম ওজনের উপরে।’’
কাকদ্বীপ মৎস্যজীবী সংগঠনের নেতা বিজন মাইতি, সতীনাথ পাত্ররা বলেন, ‘‘খারাপ আবহাওয়ার জন্য প্রচুর ট্রলার বন্দরে অপেক্ষা করতে বাধ্য হচ্ছিল। ইলিশের টানে মঙ্গলবার থেকেই সেগুলি গভীর সমুদ্রে যেতে শুরু করেছে।’’
কী ভাবে হঠাৎ পট পরিবর্তন?
ইলিশ প্রকল্পের ভারপ্রাপ্ত মৎস্য গবেষক সপ্তর্ষি বিশ্বাস বলেন, ‘‘বর্ষায় ইলিশ উজানে আসে। তবে এই বৃষ্টি সেই অনুঘটকের কাজ করছে। আশা করছি, এই সম্ভাবনা আগামী এক দেড় মাস চলবে।’’ মৎস্যজীবীরা জানান, আবহাওয়া খানিকটা পরিষ্কার হতেই পূবালি বাতাসও বইতে শুরু করেছে।
ভরা বর্ষায় ইলিশের বাজারে গত কয়েক দিনে প্রায় আগুন লেগে গিয়েছিল। পাথরপ্রতিমা বাজারে দীর্ঘ দিন ইলিশের দেখাই মেলেনি। কাকদ্বীপ বা ডায়মন্ড হারবারের বাজারগুলিতে ভাল সাইজের ইলিশের জন্যও সাধারণ মানুষকে দিতে হয়েছে ৮০০-১০০০ টাকা পর্যন্ত। হঠাৎই ইলিশের আমদানির এই রদবদলে দাম কিছুটা কমে আসার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন পাইকার, আড়তদারেরা। বুধবার থেকেই ডায়মন্ড হারবার পাইকারি বাজার নগেন্দ্রবাজারে আসতে শুরু করেছে পর্যাপ্ত ইলিশ মাছ।