পরিদর্শন: রুদ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতাল। নিজস্ব চিত্র
কর্মীর অভাবে বন্ধ হয়ে রয়েছে স্যালাইন দেওয়া। ডাক্তারও কম। টাকা দিতে না পারায় রক্ত পরীক্ষা হচ্ছে না। একই বিছানায় জ্বর নিয়ে শুয়ে রয়েছেন একাধিক মানুষ। এই চিত্র বাদুড়িয়ার রুদ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালের।
ব্লক প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে খবর, জ্বরে কাহিল হয়ে পড়েছে রামচন্দ্রপুর-উদয়, নয়াবস্তিয়া-মিলনি, যদুরহাটি উত্তর, জসাইকাটি-আটঘরা পঞ্চায়েতের ২৫-৩০টি গ্রামের বহু মানুষ। রামচন্দ্রপুর পঞ্চায়েতে স্বাস্থ্য শিবির খোলা হলেও ঠিকমতো চিকিৎসক পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ। জ্বর নিয়ে ভর্তি মোর্তজা মণ্ডল, তামান্না পারভিনের কথায়, ‘‘হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি ঠিকই। কিন্তু চিকিৎসা ব্যবস্থা নেই বললেই চলে।’’ মাগুরখালির বাসিন্দা সিরাজুল মণ্ডল বলেন, ‘‘সাত দিন ভর্তি রয়েছি টাকার অভাবে রক্ত পরীক্ষা করা হয়নি।’’
শুধু তাই নয়, বাসিন্দাদের অভিযোগ, এত লোকের রক্ত পরীক্ষা হাসপাতালের পক্ষে করা সম্ভব হচ্ছে না। তার জন্য হাসপাতালে থাকা পিপি ল্যাবে (একটি বেসরকারি সংস্থা যেখানে কম টাকায় রক্ত ও সব রকমের পরীক্ষা করা হয়) ৮০০ টাকা নিয়ে ৫০০ টাকার রসিদ দিচ্ছে। এ প্রসঙ্গে বিএমওএইচ সুশীল বণিক বলেন, ‘‘বিষয়টি নিয়ে আমাকে কেউ কোনও অভিযোগ করেনি।’’
রবিবার রুদ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালে এই অবস্থা দেখে ক্ষোভে ফেটে পড়েন বিধায়ক কাজি আব্দুর রহিম দিলু। বিধায়ক এসেছে খবর পেয়ে একজন চিকিৎসক-সহ ওই গ্রামীণ হাসপাতালে ছুটে আসেন বিএমওএইচ সুশীলবাবু। ক্ষুব্ধ কংগ্রেস কর্মীরা পরিষেবা নিয়ে তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান। সুশীলবাবু জানান, গত এক মাস ধরে প্রতিদিন জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালের বহির্বিভাগে ছ’শোর উপর রোগী আসছেন। তাঁদের মধ্যে ৪০-৫০জন করে ভর্তি হচ্ছেন। ইতিমধ্যে ছ’জনের শরীরে ডেঙ্গির লক্ষণ দেখতে পাওয়া গিয়েছে। তাঁদের শহরের হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।
বিধায়ক বলেন, ‘‘হাসপাতালে পরিষেবা না মেলায় মানুষ বাধ্য হয়ে হাতুড়ের কাছে ছুটছেন। সমস্যার কথা স্বাস্থ্য দফতরে জানানো হবে।’’ বসিরহাটের মহকুমাশাসক নীতিশ ঢালি, বাদুড়িয়ার বিডিও সুপর্ণা বিশ্বাসও বিভিন্ন গ্রামে পরিস্থিতি দেখতে যান।