মহাত্মা গাঁধীর চশমা গিয়েছে ন’বার! আর রাষ্ট্রগুরু সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের চশমা খোয়া গিয়েছে ছ’বার। সেই চশমা বানাতে বানাতে ক্লান্ত ব্যারাকপুর পুরসভা।
ব্যারাকপুর হেরিটেজ শহর। মোড়ে মোড়ে মণীষীদের মূর্তি। কোনওটা ব্রোঞ্জ, কোনওটা গ্র্যানাইট, কোনওটা আবার পাথরের। সেই মূর্তি নিয়েও বিপাকে পড়েছে ব্যারাকপুর পুরসভা। তিন বছরের মধ্যে ছ’বার রাষ্ট্রগুরুর চশমা এবং ন’বার গাঁধীজির চশমাও চুরি গিয়েছে। তা-ও খোদ ব্যারাকপুরে জমজমাট জায়গা রেলস্টেশন আর বাস স্ট্যান্ডের মাঝে আইল্যান্ড থেকে আর অন্যটি চিড়িয়ামোড় থেকে।
রাষ্ট্রগুরু সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় বাড়ি ব্যারাকপুরেই। মহাত্মা গাঁধীও একাধিক বার এই শহরে এসেছেন। দু’জনের মূর্তিই ঘটা করে বসানোর পরে পুরসভা নিয়মিত পরিস্কার করায়। প্রথমে দু’বার চশমা চুরি হওয়ার পরে ব্রোঞ্জের চশমাই করানো হয়েছিল। কিন্তু এমন নাছোড়বান্দা চুরি দেখে লোহার পাত দিয়ে পুরনো দিনের চশমার ফ্রেম বানিয়ে লাগানো হয়েছে। তা-ও চুরি হয়ে যাওয়ায় গত মঙ্গলবার ব্যারাকপুরে মুখ্যমন্ত্রী আসার আগে লোহার তারের চশমা লাগানো হয়েছে।
এই সেই মূর্তি।
কিন্তু উঁচু মূর্তিগুলি থেকে চশমা চুরি হচ্ছে কী করে? যাচ্ছেই বা কোথায়? ব্যারাকপুর পুরসভার চেয়ারম্যান উত্তম দাস বলেন, ‘‘চশমা চোরেরা আসলে নেশার জিনিস জোগাতে এই কাজ করছে। এরা স্টেশন চত্বরেই থাকে। বেশি রাতে সুযোগ বুঝে মূর্তির গা বেয়েই উঠে চুরি করে।’’ তিনি জানান, গাঁধীজির হাতের লাঠিটিও দু’-এক বার নেওয়ার চেষ্টা করেছে চোরেরা। কিন্তু সফল হয়নি। এ দিকে যে দু’টি মূর্তি থেকে বারবার চশমা চুরি হচ্ছে, সে দু’টির খুব কাছে ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের সদর কার্যালয়ের দু’টি দফতর আছে। ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের এক কর্তা বলেন, ‘‘এ বার দেখছি মূর্তির চোখে চশমা টিকিয়ে রাখতে নাইট ভিশন সিসি ক্যামেরা বসাতে হবে। এমনিতে তো এই এলাকায় রাত পাহারা থাকেই। কিন্তু পাহারাদারেরা ঘুরে ঘুরে টহল দেন। সেই ফাঁকে কেউ চুরি করে নিচ্ছে।’’
আরও খবর
আগাম জামিনের আবেদন বিক্রমের
চশমার পিছনে ইতিমধ্যেই পুরসভা বেশ কিছু টাকা খরচ করেছে। পুরপ্রধান বলেন, ‘‘টাকা খরচ হয়েছে ঠিকই, চশমা পরাতে পরাতে আমরাও ক্লান্ত। কিন্তু লজ্জার বিষয় এটাই, ব্যারাকপুর শহরে এত বার চুরি হচ্ছে। এটা বন্ধ করতেই হবে।’’