কাঁচরাপাড়ায় যুবক খুন, ধৃত তিন বন্ধু

রাজুর মা দুর্গাদেবী বলেন, ‘‘রবিবার রাত ১০টার পরে বাপি এবং শ্রীবাস এসে জানতে চায়, রাজু বাড়ি ফিরেছে কিনা! আমি না-বলায় বাপি জানায়, রাজুকে কেউ গুলি করে চলে গিয়েছে। ও রাস্তায় পড়ে রয়েছে।’’ এর সঙ্গেই দুর্গাদেবীর সংযোজন, ‘‘মনে হচ্ছে ওরাই খুনের পিছনে রয়েছে।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ব্যারাকপুর শেষ আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০১৮ ১২:১১
Share:

রাজু নট্ট

মদের আসরে চার বন্ধু একসঙ্গে ছিলেন। তারপরে বাজি কিনে একসঙ্গেই পুড়িয়েছেন। তার পরে রাস্তাতে গুলিতে খুন হয়ে গেলেন চার জনের এক জন।

Advertisement

রবিবার রাতে উত্তর ২৪ পরগনার কাঁচরাপাড়ায় কল্যাণী ঝিলপাড়ের কাছে ওই ঘটনায় নিহতের নাম রাজু নট্ট (৩২)। তাঁর বাড়ি কাঁচরাপাড়ার বাগ মোড়ের ধরমবীর কলোনিতে। তাঁকে খুনের অভিযোগে সোমবার রাতে গ্রেফতার করা হয় বন্ধু বাপি পোদ্দার, শ্রীবাস শীল এবং সুভাষ দাসকে। ধৃতেরা রাজুর পড়শিও।

ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের এক কর্তা জানান, মদের আসরে বচসার জেরেই রাজু খুন হন বলে মনে হচ্ছে। তবে, এর পিছনের কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ধৃতদের বক্তব্যে নানা অসঙ্গতি ধরা পড়েছে। নিহতের পরিবারের লোকেরা ওই তিন জনের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেছেন।

Advertisement

রাজুর মা দুর্গাদেবী বলেন, ‘‘রবিবার রাত ১০টার পরে বাপি এবং শ্রীবাস এসে জানতে চায়, রাজু বাড়ি ফিরেছে কিনা! আমি না-বলায় বাপি জানায়, রাজুকে কেউ গুলি করে চলে গিয়েছে। ও রাস্তায় পড়ে রয়েছে।’’ এর সঙ্গেই দুর্গাদেবীর সংযোজন, ‘‘মনে হচ্ছে ওরাই খুনের পিছনে রয়েছে।’’

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজু পেশায় রং মিস্ত্রি। রবিবার কাজ থেকে ফিরে রাতে তিনি বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। সেই সময়ে তাঁর সঙ্গে ছিল বাপি এবং শ্রীবাস। কাঁচরাপাড়া রেল স্টেশনের কাছে কল্যাণী ঝিলের ধারে তাঁরা মদের আসর বসান। সেখানে সুভাষ যোগ দেয়। রাত পর্যন্ত আসর চলে। তার পরে চার জনে বাজি কিনতে যায়। ঝিলপাড়ে ফিরে তারা দীর্ঘ সময় ধরে বাজি পোড়ায়। কিন্তু তারপরে রাজু কখন খুন হলেন, সেই উত্তরই জানার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা। বাপি এবং শ্রীবাসের থেকে দুর্গাদেবীরা খবর পেয়ে পড়শিদের নিয়ে ঝিলপাড়ে গিয়ে দেখেন, রাজু রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন। তাঁকে কল্যাণী জেএনএম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন। পুরনো গোলমালের জেরে এক পড়শি রাজুকে খুন করেন, এই সন্দেহে ওই রাতে তাঁরা বাড়িতে রাজুর বন্ধুরা ভাঙচুরও চালায়।

কিন্তু তদন্তকারীদের সন্দেহ গিয়ে পড়ে তিন বন্ধুর উপরেই। তদন্তকারীদের দাবি, ধৃতদের বয়ানে বিস্তর গরমিল রয়েছে। এক জন বলছে, বাজি পোড়ানোর পরে সকলেই বাড়ি ফিরে যান। অন্য জন দাবি করছে, তারা তিন জনে বাড়ি ফিরলেও রাজু ফের বাজি কিনতে যান। পরে তারা ফোনে খবর পান, রাজুকে কেউ গুলি করেছে। জেরা করেই আসল রহস্য উদ্ঘাটন করা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন