TMC

থামছে না গোলমাল, তাতছে শিল্পাঞ্চল

নৈহাটি পুরসভার বিদায়ী কাউন্সিলর গণেশ বছরখানেক আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ব্যারাকপুর শেষ আপডেট: ১০ অগস্ট ২০২০ ০১:২৬
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

গত দু’দিন বোমা পড়েছিল তৃণমূল নেতাদের অফিসে-বাড়িতে। শনিবার রাতে বীজপুরে বোমা পড়ল বিজেপি নেতার গাড়িতে। যদিও গণেশ দাস নামের ওই বিজেপি নেতা জখম হননি। তবে তাঁর গাড়িটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেই রাতেই হালিশহরের বালিভাড়া এলাকায় এক বিজেপি কর্মীকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। দু’টি ক্ষেত্রেই অভিযোগের তির তৃণমূলের দিকে। তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করে বিষয়টিকে পাড়াগত গোলমাল বলে দাবি করেছে।

Advertisement

বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার রাতে বালিভাড়ার একটি ক্লাবঘরে বসে তাস খেলছিলেন কয়েকজন। অভিযোগ, রাত ১০টা নাগাদ সেখানে কয়েকজন যুবকের দল সেখানে চড়াও হয়। তাঁদের হাতে লাঠি-উইকেট ছিল। তারা মাণিক দাসের খোঁজ করছিল। মাণিক বলেন, “ওদের হাতে লাঠি দেখে আমি জানাই, মাণিক নামের কেউ এখানে নেই। ওরা কাকে একটা ফোন করতে বাইরে যায়। তারই মধ্যে ক্লাবের একটি দিকে অঙ্গনওয়াড়ির ক্লাস হয়। আমি দরজা খুলে সে দিক দিয়ে পালানোর চেষ্টা করি। কিন্তু ওরা দেখে ফেলে। দরজা ভেঙে আমাকে মারধর করতে শুরু করে। মেরে মাথা ফাটিয়ে দেয়।” মাণিক জানান, রাম মন্দিরের ভূমি পুজোর দিন তিনি কয়েকজনের সঙ্গে জয় শ্রীরাম ধ্বনি দিয়েছিলেন। আর একটি বিজেপির ফ্লেক্স লাগিয়েছিলেন। এই ঘটনার পিছনে স্থানীয় এক তৃণমূল নেতার ষড়যন্ত্র্র রয়েছে বলে অভিযোগ মাণিকের।

নৈহাটি পুরসভার বিদায়ী কাউন্সিলর গণেশ বছরখানেক আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। তিনি জানান, মাণিককে মারধর করা হয়েছে শুনে তিনি দেখতে যান। মাণিকদের বীজপুর থানায় যেতে বলেন অভিযোগ করার জন্য। তিনি সেখানে গেলেও থানার বাইরে অপেক্ষা করতে থাকেন। সে সময়ে দু’টি বাইকে করে চারজন তাঁকে অনুসরণ করছিল। তিনি বলেন, “থানা থেকে ফেরার সময়ে কিছুটা আসার পরেই আমার গাড়ির সামনে পর পর দু’টি বোমা পড়ে। দ্রুত গাড়ি নিয়ে সেখান থেকে বেরিয়ে আসি। তারপরে পুরো রাস্তায় আমার গাড়ির উপরে তিনবার বোমাবাজি হয়েছে। নৈহাটি পুরসভা থেকে কিছুটা দূরে ফের দু’টো বোমা পড়ে। আমার গাড়িতে। গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আমি কোনওক্রমে প্রাণে বেঁচে যাই।”

Advertisement

কারা তাঁর গাড়িতে বোমা মারল? গণেশ বলেন, “আমি কাউকে দেখিনি। ফলে বলতে পারব না। তবে আমার ধারণা, এর পিছনে তৃণমূল রয়েছে। নৈহাটির বিধায়ক পার্থ ভৌমিকের অঙ্গুলি হেলনে আমাকে প্রাণে মারার ষড়যন্ত্র হচ্ছে।”

এই অভিযোগ অস্বীকার করে পার্থ বলেন, “বালিভাড়ার গোলমাল পুরোপুরি পাড়াগত বিবাদের ফল। দু’দিন আগে ওই এলাকায় তৃণমূলের একটি ফ্লেক্স ছেঁড়া হয়েছিল। এটাকে ওরা রাজনৈতিক রঙ লাগাচ্ছে।”

গণেশ দাসের গাড়িতে বোমা মারার অভিযোগ প্রসঙ্গে পার্থর বত্তব্য, “পুলিশের কাছে আমার অনুরোধ, তাঁরা যেন এই ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের গ্রেফতার করে। তা হলেই প্রমাণ হয়ে যাবে, এর পিছনে কারা আছে। ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিংহ চাইছেন, এখানকার রাজনীতিটা পুরোপুরি সমাজবিরোধীদের হাতে চলে যাক। সেই জন্য তিনি আমাদের নেতাদের বাড়িতে-অফিসে বোমাবাজি করাচ্ছেন। কিন্তু এটা চলতে পারে না। মানুষ এটা ধরে ফেলেছে। সেই জন্য তিনি এখন নিজেদের লোকেদের গাড়িতে বোমা ফেলছেন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন