বছর ঘুরলেই পঞ্চায়েত ভোট। তাই উত্তর ২৪ পরগনায় যে ২১টি পঞ্চায়েত সমিতিতে দল ক্ষমতায় রয়েছে, সেখানে উন্নয়নের কাজে গতি বাড়াতে চান জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। আর তাই সেই সব কাজে নজরদারি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিলেন তাঁরা।
রবিবার মধ্যমগ্রামে জেলা তৃণমূল কার্যালয়ে দলের কোর কমিটির বৈঠকে ওই সিদ্ধান্ত হয়েছে। তৃণমূল সূত্রে খবর, ওই বৈঠকে ঠিক হয়েছে, এখন থেকে ১৫ দিন অন্তর পঞ্চায়েত সমিতিতে বৈঠক ডাকতে হবে সভাপতিকে। সেখানে উপস্থিত থাকতে হবে সমিতির সহ-সভাপতি, দলীয় বিধায়ক, সাংসদ, ব্লকের দলীয় সভাপতি, জেলা কমিটির এক প্রতিনিধি এবং ওই বিধানসভা কমিটির দলীয় সভাপতিকে। তাঁরা পঞ্চায়েত সমিতি এলাকায় কোন কোন প্রকল্পের কাজ থমকে রয়েছে বা শুরু করা যায়নি তা নিয়ে আলোচনা করবেন। দ্রুত সমস্যার সমাধান করে উন্নয়নের কাজে গতি আনবেন। বৈঠকের প্রতিটি ‘রেজুলেশন কপি’ জেলা তৃণমূল কার্যালয়ে পাঠাতে হবে। পরে তা রাজ্য কমিটির কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।
জেলা তৃণমূল সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক জানিয়েছেন, কোনও পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি যদি বৈঠক ডাকতে গাফিলতি করেন বা আমন্ত্রিত সদস্যেরা বৈঠকে যেতে অনীহা প্রকাশ করেন, তা হলে তাঁদের বিরুদ্ধে দলীয় স্তরে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পুরসভাগুলির ক্ষেত্রেও একই রকম ভাবে ১৫ দিন অন্তর বৈঠক করতে হবে সংশ্লিষ্ট সকলে নিয়ে। কারণ, জেলায় বেশ কিছু গ্রামীণ পুরসভা রয়েছে।
কেন এমন সিদ্ধান্ত?
তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশ মানছেন, জেলার কিছু পঞ্চায়েত সমিতি এলাকায় নানা কারণে উন্নয়নের কাজ শ্লথ গতিতে চলছে। কোথাও অর্থাভাবে কাজ থমকে রয়েছে, কোথাও আবার সমিতির সভাপতি সকলকে নিয়ে চলছেন না বলে অভিযোগ উঠছে। বিধায়ক-সাংসদেরা সমিতির কাজকর্ম সম্পর্কেও খুব বেশি ওয়াকিবহাল নন। সমন্বয়ের অভাব আছে। রয়েছে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের সমস্যাও। তাই নজরদারিতে জোর দেওয়া হয়েছে। তা ছাড়া, বিধায়ক ও সাংসদ তহবিলের অর্থ বণ্টনের সমস্যাও এর ফলে এড়ানো যাবে বলেই মনে করছেন নেতারা।
দলের এই সিদ্ধান্ত উন্নয়নের কাজে গতি আনবে বলেই মনে করছে বিভিন্ন পঞ্চায়েত সমিতি। গাইঘাটা পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি ধ্যানেশ নারায়ণ গুহের মতে, ‘‘বৈঠক হলে সমস্যাগুলোর দ্রুত সমাধান হবে। কাজে গতিও আসবে।’’ হাবরা-১ পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি জাকির হোসেন বলেন, ‘‘অর্থাভাবে অনেক কাজ করা যায় না। ওই বৈঠকে আলোচনা হলে সমস্যা মিটবে বলেই মনে হচ্ছে।’’