ঘরে ঢুকে গুলি করে খুন সোনারপুরে

তদন্তকারীদের অনুমান, কোনও ব্যক্তিগত আক্রোশের জেরে সুদীপ্ত খুন হয়েছেন। সুদীপ্তের ছেলে ও স্ত্রী অবশ্য পুলিশকে জানিয়েছেন, ওই সময় বৃষ্টি পড়ছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০১৮ ০২:৩২
Share:

শোকার্ত: সমীর মিস্ত্রির (ইনসেটে) পরিবার। —নিজস্ব চিত্র।

গভীর রাতে বাড়িতে ঢুকে এক ব্যক্তিকে গুলি করে খুন করল দুষ্কৃতীর দল। মৃতের নাম, সমীর মিস্ত্রি (৪২)। তিনি তৃণমুল পরিচালিত একটি ট্যাক্সি সংগঠনের সম্পাদক। সোমবার রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ সোনারপুর থানার নোয়াপাড়া এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। তবে মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি।
পুলিশ সূত্রে খবর, নিজের বা়ড়িতে বসে রাতের খাবার খাচ্ছিলেন সুদীপ্ত। ঘরে ছিলেন তাঁর ছেলে ও স্ত্রী মধুরিমা। সুদীপ্তের বৃদ্ধা মা ছিলেন পাশের ঘরে। মধুরিমার দাবি, তিনি খাবার বেড়ে দিয়ে সবে পিছনে ফিরেছিলেন। তখনই আচমকা দু’জন ঘরে ঢুকে গুলি চালায়। কিছু বুঝে ওঠার আগেই দুষ্কৃতীরা পালিয়ে যায়। খাওয়ার পাতেই মাটিতে লুটিয়ে পড়েন সুদীপ্ত। গুরুতর জখম অবস্থায় তাঁকে ই এম বাইপাস সংলগ্ন একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, সুদীপ্তের শ্বাসযন্ত্র ছিন্নভিন্ন হয়ে গিয়েছে।
তদন্তকারীদের অনুমান, কোনও ব্যক্তিগত আক্রোশের জেরে সুদীপ্ত খুন হয়েছেন। সুদীপ্তের ছেলে ও স্ত্রী অবশ্য পুলিশকে জানিয়েছেন, ওই সময় বৃষ্টি পড়ছিল। বৃষ্টির আওয়াজের মধ্যেই আকস্মিক ভাবে দুর্ঘটনাটি ঘটে যাওয়ায় দুষ্কৃতীদের তাঁরা শনাক্ত করতে পারেননি। তবে পুলিশকর্তাদের অনুমান, খুনে সুদীপ্তের পরিচিত কেউ জড়িত। তদন্তকারীদের কথায়, সুদীপ্তের বাড়ি ঘিঞ্জি গলির মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। বাড়ির রাস্তা নখদর্পণে না থাকলে তুমুল বৃষ্টির মধ্যে ওই বাড়িতে পৌঁছনো এবং খুন করে বেরিয়ে যাওয়া সহজ নয়। পুলিশ জানিয়েছে, অত রাতে বাড়ির সদর দরজা কেন খোলা ছিল জিজ্ঞাসা করা হলে পরিজনেরা সঠিক ভাবে কিছু জানাতে পারেননি। এ নিয়েও ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, সোনারপুর স্টেশন মোড় ট্যাক্সিস্ট্যান্ডের সম্পাদক ছিলেন সুদীপ্ত। তাঁর সঙ্গে কোনও গোষ্ঠীর বিরোধ ছিল না। তবে সম্প্রতি তিনি এলাকায় প্রোমোটারি শুরু করেছিলেন। মাসখানেক ধরে ব্যবসা সংক্রান্ত বিষয়ে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন বলে পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে। সুদীপ্তের স্ত্রী মধুরিমা একটি বেসরকারি সংস্থায় চাকরি করেন। তাঁকেও জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মানসিক অবসাদের জেরে সুদীপ্ত সম্প্রতি মদের নেশায় আসক্ত হয়ে পড়েছিলেন। বেশির ভাগ দিনই তাঁর বাড়িতে নানা লোকজনের আনাগোনা চলত। বারুইপুর জেলা পুলিশ সুপার অরিজিৎ সিংহ বলেন, ‘‘সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে মৃতের পরিবারের তরফে নির্দিষ্ট কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়নি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন