কড়া পদক্ষেপ তৃণমূলে, বহিষ্কৃত ২৪ জন নেতানেত্রী

দল থেকে পাঁচ বছরের জন্য বহিষ্কৃত হলেন উত্তর ২৪ পরগনার ২৪ জন তৃণমূল নেতা। বুধবার দলের জেলা সভাপতি তথা রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক মধ্যমগ্রামে দলের জেলা কার্যালয়ে এক সাংবাদিক সম্মেলনে ওই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে বলেন, ‘‘বহিষ্কৃতদের মধ্যে রয়েছেন ওয়ার্ড সভাপতি, শহর কমিটির সাধারণ সম্পাদক, দলের শ্রমিক বা শিক্ষা ও মহিলা সংগঠনের নেতা-নেত্রী। দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সুব্রত বক্সীর নির্দেশে জেলা কমিটি ওই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বনগাঁ শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০১৫ ০১:২২
Share:

দল থেকে পাঁচ বছরের জন্য বহিষ্কৃত হলেন উত্তর ২৪ পরগনার ২৪ জন তৃণমূল নেতা।

Advertisement

বুধবার দলের জেলা সভাপতি তথা রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক মধ্যমগ্রামে দলের জেলা কার্যালয়ে এক সাংবাদিক সম্মেলনে ওই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে বলেন, ‘‘বহিষ্কৃতদের মধ্যে রয়েছেন ওয়ার্ড সভাপতি, শহর কমিটির সাধারণ সম্পাদক, দলের শ্রমিক বা শিক্ষা ও মহিলা সংগঠনের নেতা-নেত্রী। দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সুব্রত বক্সীর নির্দেশে জেলা কমিটি ওই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’’

জেলা তৃণমূল সূত্রের খবর, পুরভোটে জেলার ৫৮৭টি ওয়ার্ডে প্রার্থী হতে চেয়ে আবেদন জমা পড়েছিল ৫ হাজার ২৮০ জন। এমনও দেখা গিয়েছে একটি ওয়ার্ডের জন্য দশ-বারো জন দাবিদার। কিন্তু প্রার্থী হতে না পেরে ওই ২৪ জন দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধ নির্দল হয়ে দাঁড়িয়ে পড়েন। জেলা নেতৃত্ব প্রথমে তাঁদের মনোনয়ন জমা দিতে বারণ করেছিলেন। কিন্তু তাঁরা মানেননি। প্রার্থী হওয়ার পরেও তাঁদের বসে যেতে অনুরোধ করা হয়েছিল বলে দলের একটি সূত্র জানাচ্ছে। তাতেও তাঁরা কর্ণপাত না করায় দল কড়া সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে বলে শীর্ষ নেতৃত্ব জানিয়েছেন।

Advertisement

গোটা ঘটনায় তৃণমূলের দলীয় কোন্দল প্রকাশ্যে এসেছে। যদিও তা মানতে নারাজ জ্যোতিপ্রিয়বাবু। তাঁর কথায়, ‘‘২০১০ সালের পুর নির্বাচনে এ ধরনের সংখ্যাটা ছিল ৭৮ জন। এ বার অনেক কম।’’

জেলা তৃণমূল সূত্রে জানানো হয়েছে, বনগাঁ, গোবরডাঙা, কামারহাটি, ব্যারাকপুর, নিউ ব্যারাকপুর, খড়দহ, দক্ষিণ দমদম, দমদম, বরাহনগর প্রভৃতি এলাকার নেতা-নেত্রীদের বহিষ্কার করা হয়েছে।

বনগাঁ থেকে বহিষ্কৃত হয়েছেন শহর তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক তথা দলের শিক্ষক নেতা মনোতোষ নাথ ওরফে লাল্টু। দলের সিদ্ধান্তের কথা শুনে লাল্টুবাবু বলেন, ‘‘নির্দল হিসাবে যখন দাঁড়িয়েছি, তখনই জানতাম দল বহিষ্কার করবে। তবে আমি এখনও তৃণমূ‌ল করি। ভবিষ্যতে জয়ী হয়েও তৃণমূল করব।’’ লাল্টুবাবু বনগাঁ পুরসভার ১৮ নম্বর ওয়ার্ড থেকে দলীয় প্রার্থী সুফল হালদারের বিরুদ্ধে নির্দল প্রার্থী হয়েছেন। লাল্টুবাবু বর্হিস্কারের কথা শুনে ওই ওয়ার্ডের বড় অংশের তৃণমূল কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয় কর্মদের একাংশের কথায়, ‘‘আমরা লাল্টুবাবুকে প্রার্থী করেছি। আমরাই তাঁকে জেতাবো। আমাদের কোনও নেতার প্রায়োজন নেই।’’

স্থানীয় এক প্রভাবশালী নেতার কথায়, ‘‘লাল্টুবাবুর বাবা আমৃত্যু ছিলেন বনগাঁ পুরসভার চেয়ারম্যান। তাঁকে আধুনিক বনগাঁ শহরের অন্যতম রূপকার বলে অনেকেই মনে করেন। এতে দলের ক্ষতি হল।’’

অন্য দিকে, গোবরডাঙা থেকে বহিষ্কৃত হয়েছেন শহর তৃণমূল সভাপতি বিশ্বনাথ চক্রবর্তী। তিনি ১৫ নম্বর ওয়ার্ড থেকে নির্দল প্রার্থী হয়েছেন দলীয় প্রার্থী, তথা বিদায়ী উপ পুরপ্রধান অসীম তরফদারের বিরুদ্ধে। অসীমবাবু অন্য ওয়ার্ড থেকে এসে এখানে প্রার্থী হয়েছেন। যা ওয়ার্ডের একাংশের তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা মানতে চাইছেন না। বিশ্বনাথবাবু বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে তৃণমূল করেছিলাম। ভবিষ্যতেও করব। আমার সহকর্মীরাই আমাকে দাঁড় করিয়েছেন।’’ দলের একটি সূত্র জানাচ্ছে, অতীতের মতো এ বারও গোপনে নির্দল প্রার্থীদের কাছে বার্তা দেওয়া হয়েছে, জয়ী হলে ফের তাঁদের দলে সম্মানের সঙ্গে ফিরিয়ে নেওয়া হবে। নির্দল প্রার্থীদের পিছনে বহু জেলা নেতার মদত রয়েছে বলেও সূত্রের খবর। তবে এমন কথা মুখে মানতে নারাজ শীর্ষ নেতৃত্ব।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন