শোক: কান্নায় ভেঙে পড়েছে সুস্মিতা। ছবি: সামসুল হুদা
শেষ পর্যন্ত জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষায় বসা হল না মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত ভাঙড়ের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী সুস্মিতা প্রামাণিকের। দলের গোষ্ঠী-সংঘর্ষে রবিবার ভাঙড়ে খুন হন তৃণমূল কর্মী মনু প্রামাণিক। সুস্মিতা তাঁরই মেয়ে।
বাবা খুন হওয়ার পর থেকে মাঝেমধ্যেই জ্ঞান হারাচ্ছিল মেয়েটি। সোমবার থেকে শুরু হয়েছে মাধ্যমিক। সুস্মিতা যাতে পরীক্ষায় বসতে পারে, সে জন্য এ দিন কলকাতা লেদার কমপ্লেক্স থানার তরফে সব রকম সাহায্যের আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সুস্মিতা রাজি হয়নি বলে পুলিশ জানিয়েছে। সুস্মিতা বলে, ‘‘বাবাই যখন চলে গেল, তখন পরীক্ষা দিয়ে আর কী হবে! সব শেষ হয়ে গেল মনে হচ্ছে।’’ রবিবার দুপুরে বামনঘাটার বগডোবা এলাকায় জলাভূমি দখল নিয়ে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে খুন হন মনু। পুলিশ জানিয়েছে, মনুর স্ত্রী সুকুলিদেবীর অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে। বামনঘাটা পঞ্চায়েতের প্রধান অমরেশ মণ্ডল, তৃণমূল নেতা প্রদীপ মণ্ডল-সহ মোট ১১ জনের নামে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তার ভিত্তিতে সোমবার জলধর মণ্ডল ওরফে গোগা নামে এক মূক-বধির যুবককে বগডোবা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিরা পলাতক। মনুর ছেলে সূর্য বলেন, ‘‘বাবা বাজারে যাবে বলে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল। তার পরে আমার এক বন্ধু এসে খবর দেয়, বাবাকে মারধর করা হচ্ছে। আমরা ছুটে গিয়ে দেখি বাবা মাটিতে পড়ে রয়েছে। মাথা ফেটে রক্ত বেরোচ্ছে। যারা বাবাকে খুন করল তাদের শাস্তি চাই।’’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বগডোবার প্রায় পাঁচ বিঘার একটি জলাভূমি রবিবার দুপুরে ঘিরতে যায় তৃণমূল প্রভাবিত স্থানীয় একটি ক্লাবের সদস্যেরা। সেই দলে মনুও ছিলেন। কিন্তু তৃণমূল নেতা নিত্যগোপাল মণ্ডল ও তাঁর অনুগামীরা বাধা দিতে গেলে সংঘর্ষ হয়। মনুর মাথায় বাঁশ দিয়ে মারা হয়। হাসাপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও তাঁকে বাঁচানো যায়নি।