দলীয় কোন্দল ভোগাবে না তো, প্রশ্ন তৃণমূলের অন্দরে

সাদা সুমো গাড়ি থেকে নেমে এগিয়ে এসে বললেন, ‘‘এ বার হেঁটেই মানুষের কাছে পৌঁছতে হবে।’’ এরপরেই দলবল নিয়ে কুলপি বিধানসভার তৃণমূল প্রার্থী যোগরঞ্জন হালদার এগিয়ে গেলেন গ্রামের ভিতরে। ভোটারদের দেখে হাত জোড় করে বললেন, ‘‘ভোটটা আমাকে নয়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই দেবেন।’’

Advertisement

দিলীপ নস্কর

শেষ আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০১৬ ০১:১৩
Share:

সাদা সুমো গাড়ি থেকে নেমে এগিয়ে এসে বললেন, ‘‘এ বার হেঁটেই মানুষের কাছে পৌঁছতে হবে।’’ এরপরেই দলবল নিয়ে কুলপি বিধানসভার তৃণমূল প্রার্থী যোগরঞ্জন হালদার এগিয়ে গেলেন গ্রামের ভিতরে। ভোটারদের দেখে হাত জোড় করে বললেন, ‘‘ভোটটা আমাকে নয়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই দেবেন।’’

Advertisement

একটু এগোতেই পিছন থেকে এক প্রবীণ বাসিন্দার কটাক্ষ ভেসে এল, ‘‘নিজের উপরে ভরসা নেই, তাই মুখ্যমন্ত্রীর নাম করে ভোট চাইতে বেরিয়েছেন!’’ নিবিড় জনসংযোগের দিকে জোর দিচ্ছেন এলাকার জোট প্রার্থী সিপিএমের রেজাউল হক করিম। বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচারের সময় গ্রামের বাড়ির দাওয়ায় বসে জল চেয়ে খাচ্ছেন। গল্পগাছা জুড়ছেন। এলাকায় উন্নয়ন নিয়েও কথা বলছেন। ‘ঘরের লোক’— প্রমাণে চেষ্টা দেখার মতো। এলাকাবাসীর মন্দ লাগছে না বটে, কিন্তু অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, ভোট চলে গেলে এমন ব্যবহারটা থাকবে তো?

১৯৯৮ সালে তৃণমূলের জন্ম হয়েছিল। ২০০১ সালে বিধানসভা নির্বাচনে কুলপি বিধানসভা দখল করেছিল শাসকদল। তখন বিধায়ক হন যোগরঞ্জনবাবু। ২০০৬ সালে পরাজয়ের পরে ফের ২০১১ সালে ভোটে জিতে নির্বাচনে জেতেন যোগরঞ্জন। দলের এমন ধারা উত্থান-পতনের কথা মাথায় রেখে প্রচারে কোথাও খামতি দিচ্ছেন না বিদায়ী বিধায়ক যোগরঞ্জন। উন্নয়নের ফিরিস্তি নিয়ে কথার ফুলঝুরি ছোটাচ্ছেন।

Advertisement

বিরোধীরা পাল্টা প্রচারে বলছে শাসকদলের দুর্নীতির কথা। বিরোধী জোটের প্রার্থী রেজাউল জেলা পরিষদের সদস্য। পেশায় আইনজীবী রেজাউলের দাবি, উন্নয়ন নিয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে শাসকদল।

টেট কেলেঙ্কারি, ইটভাটায় তোলাবাজি, সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা নয়ছয় করার অভিযোগ নিয়ে প্রচার চালাচ্ছেন রেজাউল হকরা। এর পাশাপাশি নারদা, সারদা কাণ্ডে একাধিক দলীয় শীর্ষ নেতৃত্বের নাম জড়িয়ে পড়ার বিষয়টিও জনমানসে হারিয়ে না যায়, চেষ্টায় ত্রুটি রাখছেন না বিরোধীরা।

বিধায়ক ও তাঁর কিছু সঙ্গীর বিরুদ্ধে দলেরই একাংশ এক সময়ে অভিযোগ জানিয়েছিল তৃণমূল ভবনে। উঠছে সে প্রসঙ্গও।

এ হেন প্রচার বা দলের অন্তর্দ্বন্দ্ব ভোগাতে পারে কি?

অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষক যোগরঞ্জনবাবুর জবাব, সবটাই বিরোধীদের অপপ্রচার। বললেন, ‘‘পাঁচ বছরে মানুষের পাশে ছিলাম। এলাকায় যথেষ্ট উন্নয়ন করেছি। মানুষ ঠিক বুঝেই ভোট দেবে।’’

যোগরঞ্জনবাবু এ কথা বললেও দলের সব অংশকে প্রচারে পুরোপুরি নামতে দেখা যায়নি। ফলে তাঁর ঘনিষ্ঠ কর্মীদেরই অনেকের বক্তব্য, ‘‘উন্নয়নের নিরিখে ভোট মানুষ দেবেন তো বটেই। কিন্তু দলের সব পক্ষকে পাশে পেলে বাড়তি সুবিধা হতো।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন