বিশ্বজিৎ মণ্ডল
এক যুবকের মৃতদেহ উদ্ধার হতেই শনিবার সকালে রণক্ষেত্রের চেহারা নিল উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গা। ওই যুবককে খুন করা হয়েছে দাবি তুলে, পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার প্রতিবাদে সোয়াই-শ্বেতপুর এলাকায় পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায় জনতা। অবরোধ তুলতে গেলে পুলিশের সঙ্গে কার্যত খণ্ডযুদ্ধ শুরু হয় জনতার। পুলিশকে তাক করে ইট ছোড়া হয়। জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ লাঠি চালায় বলেও অভিযোগ। যদিও সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে পুলিশ। ঘটনায় তেমন ভাবে কেউ আহত না হলেও তিন জনকে আটক করেছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, শুক্রবার রাত থেকেই নিখোঁজ ছিলেন সোয়াই-শ্বেতপুরের ব্যবসায়ী বিশ্বজিৎ মণ্ডল (৩৫)। শনিবার সকালে এলাকারই একটি রাস্তার পাশে পাঁচিলে তাঁর মৃতদেহ মেলে। তা দেখেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন এলাকাবাসী। তাঁদের দাবি, এটি নিছক অস্বাভাবিক মৃত্যু নয়, পরিষ্কার খুনের ঘটনা। এর পরেই সকাল ৮টা থেকে দেগঙ্গার বিড়া থেকে বদরগামী রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখানো শুরু করে জনতা।
এ দিন স্থানীয়েরা অভিযোগ তোলেন, এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি দিনের পর দিন খারাপ হচ্ছে। সমাজবিরোধীরা এলাকায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। গাড়ি থামিয়ে ডাকাতির ঘটনাও হামেশাই ঘটছে। অথচ পুলিশ কার্যত নিষ্ক্রিয় হয়ে রয়েছে। দেগঙ্গার যে জায়গায় এ দিন মৃতদেহটি মেলে সেখানে কিছু দিন আগেও একটি খুন হয় বলে জানিয়েছেন এলাকার মানুষ।
তাঁদের ক্ষোভ, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে পুলিশকে জানিয়েও ফল হচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে পুলিশ অবরোধ তুলতে গেলে পুলিশকে লক্ষ্য করে শুরু হয় ইট বৃষ্টি। পরিস্থিতি হাতের বাইরে যাচ্ছে দেখে পুলিশ লাঠি চালালে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে জনতা। ঘণ্টা দুয়েক পরে সকাল ১০টা নাগাদ অবরোধ ওঠে। মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়না-তদন্তের জন্য বারাসত হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ।
বিশ্বজিৎবাবুর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, তিনি ওই এলাকার বাসিন্দা না হলেও বৈবাহিক সূত্রে দেগঙ্গায় থেকে দুধের ব্যবসা করতেন। শুক্রবার রাতে বন্ধুদের সঙ্গে পিকনিক করার কথা বলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আর ফেরেননি তিনি। শনিবার সকালে উঁচু একটি পাচিলে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ঘটনার তদন্ত চলছে। ময়না-তদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলেই কী ভাবে মৃত্যু হয়েছে তা জানা যাবে।’’