ধৃত: রাজু বিশ্বাস ও অলোক বিশ্বাস। নিজস্ব চিত্র
বনগাঁর পুরপ্রধান শঙ্কর আঢ্যের সিল, প্যাড, সই জাল করে বিক্রির একটি চক্রের কথা কানে আসছিল পুর কর্তৃপক্ষ। কিন্তু হাতে নাতে পাকড়াও করা যাচ্ছিল না কাউকে।
এ বার তার প্রত্যক্ষ প্রমাণ মিলল বলে পুরসভা সূত্রের খবর।
শুক্রবার দুপুরে সুভাষপল্লির যুবক সুদীপ্ত বসু পুরসভায় নিজের জমি রের্কড করাবেন বলে আসেন। তিনি পুরপ্রধানের সই করা, সিল মারা শংসাপত্র জমা দেন। ওই শংসাপত্রটি দেখে সন্দেহ হয় সংশ্লিষ্ট বিভাগে পুরকর্মীর। পুর কর্তৃপক্ষ গোটা বিষয়টি জানান শঙ্করবাবুকে।
পুরকর্মীরা ওই যুবককে আটকে রেখে জানতে চান, কোথা থেকে তিনি এমন সই, সিল জোগাড় করেছেন। ওই যুবক জানান, সুভাষপল্লি এলাকায় তাঁর পরিচিত এক ব্যক্তির কাছ থেকে শংসাপত্র সংগ্রহ করেছিলেন। সুদীপ্তর কথায়, ‘‘আমি একটি দোকানে কাজ করি। কাজে না গেলে বেতন কাটা যায়। তাই পরিচিত ওই ব্যক্তিকে বলছিলাম, পুরপ্রধানের শংসাপত্র জোগাড় করে দিতে। তিনি জানিয়েছিলেন, ১০০০ হাজার টাকা লাগবে। দর কষাকষি করে ৮০০ টাকায় শংসাপত্র সংগ্রহ করি।’’
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, সুদীপ্তের কাছ থেকে পুরকর্মীরা খোঁজ পান ওই ব্যক্তির। নাম, অলোক বিশ্বাস। তিনি পেশায় দলিল লেখক। পুরকর্মীরা তাঁকে পুরসভায় ডেকে আনা হয়। পুর কর্তৃপক্ষের দাবি, অলোক ঘটনার কথা স্বীকার করে জানিয়েছেন, তিনি জাল শংসাপত্রটি মনিগ্রামের জনৈক রাজু বিশ্বাসের কাছ থেকে পেয়েছিলেন। রাজুকেও পুরসভায় আনেন কর্মীরা। সে আবার অন্য এক ব্যক্তির নাম জানিয়েছে।
সন্ধ্যায় পুরসভার তরফে অলোক ও রাজুকে বনগাঁ থানার পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। গ্রেফতার করা হয়েছে তাঁদের। শঙ্করবাবু বলেন, ‘‘কিছু দিন ধরেই আমরা খোঁজ পাচ্ছিলাম, আমার শংসাপত্র জাল করে বিক্রি হচ্ছে। আজ হাতেনাতে প্রমাণ মিলল। পুলিশকে বলেছি চক্রের বাকি সদস্যদেরও গ্রেফতার করতে।’’
সাধারণ মানুষকে পুরপ্রধানের আবেদন, ‘‘আমার শংসাপত্র পেতে কেউ যেন দালালের খপ্পরে না পড়েন। সরাসরি পুরসভায় এসে বা অফিসে এসে আমার সঙ্গে দেখা করে শংসাপত্র সংগ্রহ করুন।’’ সীমান্তবর্তী এলাকায় জনপ্রতিনিধিদের শংসাপত্র জাল করে বিক্রি করার চক্রের সন্ধান অতীতেও এখানে পাওয়া গিয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।