madhyamik examination

হার না মানার লড়াই

এই অদম্য মনোভাব দেখাচ্ছে আরও কিছু ছাত্রছাত্রী। বসিরহাট জেলা হাসপাতালের সুপার শ্যামল হালদার বলেন, ‘‘কীটনাশক খেয়ে বা অন্য কারণে অসুস্থ হয়ে, দুর্ঘটনায় চোট পেয়ে হাসপাতালে ভর্তি আরও পাঁচজন পড়ুয়া। তারা যাতে পরীক্ষা দিতে পারে, সে জন্য রাইটার-সহ বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়েছিল।’’ 

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

বসিরহাট শেষ আপডেট: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৩:৩১
Share:

পরীক্ষা কেন্দ্রে হাজির মনিরা। নিজস্ব চিত্র

ইচ্ছাশক্তির কাছে হার মানছে প্রতিবন্ধকতা, শারীরিক সমস্যা।

Advertisement

পারিবারিক গন্ডগোলের জেরে মাথায় শাবলের ঘা পড়ে মধ্যমপুর গুলাইচণ্ডী এলাকার বাসিন্দা সামির আলম গাজির। শুক্রবার রাতে তাকে বসিরহাট সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মাথায় ২২টি সেলাই দিতে হয়েছে। শনিবার সেই অবস্থায় হাসপাতালের বিছানায় শুয়েই মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছে সে।

এই অদম্য মনোভাব দেখাচ্ছে আরও কিছু ছাত্রছাত্রী। বসিরহাট জেলা হাসপাতালের সুপার শ্যামল হালদার বলেন, ‘‘কীটনাশক খেয়ে বা অন্য কারণে অসুস্থ হয়ে, দুর্ঘটনায় চোট পেয়ে হাসপাতালে ভর্তি আরও পাঁচজন পড়ুয়া। তারা যাতে পরীক্ষা দিতে পারে, সে জন্য রাইটার-সহ বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়েছিল।’’

Advertisement

মিনাখাঁর মালিয়ারি গ্রামের মনিরা খাতুনের উচ্চতা মাত্র দু’ফুট। বসতেও পারে না। ধুতুরদহ কল্যাণ পরিষদের এই পড়ুয়াও এ বার মাধ্যমিকে বসেছে। বাবার ভ্যান রিকশাতেই সে আসছে বামুনপুকুর উচ্চ বিদ্যালয়ের পরীক্ষা কেন্দ্রে। স্কুলের একটি আলাদা ঘরে তার জন্য আলাদা ব্যবস্থা হয়েছে। মনিরা বলে, ‘‘আমি চাই, প্রতিবন্ধীরা কোনও ভাবে যেন নিজেদের দুর্বল না ভাবে।’’এ দিন অসুস্থদের উৎসাহিত করতে হাসপাতালে যান মধ্যশিক্ষা পর্ষদের মহকুমা আহ্বায়ক দেবদাস সরকার। তিনি বলেন, ‘‘এই সব ছেলেমেয়েরা আমাদের মুগ্ধ করেছে। ওরা সত্যি‌ই দৃষ্টান্ত।’’

অন্য দিকে, পরীক্ষা দিতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়া দুই ছাত্রীকে পুলিশ হাসপাতালে ভর্তি করার পরেও পরীক্ষা দিয়েছে তারা। দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়কৃষ্ণ মিলন বিদ্যাপীঠের ছাত্রী শঙ্করী জানার সিট পড়েছিল নরেন্দ্রপুর মিলন বিদ্যাপীঠ হাইস্কুলে। দিঘিরপাড় করালিরচক হাইস্কুলের ছাত্রী মেহেবুবা খাতুনের সিট পড়েছিল শ্রীফলতলা চন্দ্রকান্ত হাইস্কুলে। শনিবার পরীক্ষা শুরুর কিছুক্ষণ পরে অসুস্থ হয়ে পড়ে তারা। পুলিশ দু’জনকেই উদ্ধার করে রায়দিঘি গ্রামীণ হাসপাতাল নিয়ে যায়। হাসপাতালে বিএমওএইচ প্রণবেশ হালদার বলেন, ‘‘বেলা ২টো নাগাদ হাসপাতালে আনা হয় দুই পরীক্ষার্থীকে। চিকিৎসার পরে পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে উদ্বেগ থেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েছিল তারা।’’

ইতিহাস পরীক্ষা দিতে বসে অসুস্থ হয়ে পড়ল বনগাঁর এক মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। শনিবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে বনগাঁর সুভাষপল্লি গৌরীসুন্দরী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে। স্কুল কর্তৃপক্ষ বিপাশা নাগ নামে ওই ছাত্রীকে বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে আসেন। চিকিৎসা হয়। পরে হাসপাতালের শয্যা বসেই সে পরীক্ষা দিয়েছে। কুমুদিনী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রী বিপাশার শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা দেখা দিয়েছিল বলে হাসপাতাল সূত্রের খবর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন