ভোর প্রায় সাড়ে ৪টে। মাতলার ধারে শৌচকর্ম করতে বসেছিলেন এক ব্যক্তি। বিড়িতে সুখটান দিতেই বাঁশির আওয়াজ। প্রশাসনের লোকলস্কর এসে বলল, ‘‘দাদা আর মাঠে নয়। এ বার শৌচালয়ে যেতে হবে।’’ ভোরে এমন দৃশ্যের মুখোমুখি হয়ে ঘাবড়েই গিয়েছিলেন ওই ব্যক্তি।
ক্যানিং ১ বিডিও কিংশুক চন্দ্র, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি পরেশরাম দাসের নেতৃত্বে তৈরি হয়েছে নজরদারি কমিটি। সেখানে রয়েছেন, পঞ্চায়েত প্রধান, পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য, আশা-অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা। ভোর বেলায় তাঁরা মুখে বাঁশি ও হাতে লাঠি নিয়ে বেরিয়ে পড়ছেন মানুষকে সচেতন করতে।
কিংশুকবাবু বলেন, ‘‘অনেকে হয় তো না বুঝেই ফাঁকা জায়গায় মল ত্যাগ করেন। এমন ভাবে রোগ-জীবাণু ছড়ায়। তাঁরা যাতে শৌচালয়ে মলত্যাগ করেন, সে জন্য উঠোন-পিছু একটি করে শৌচালয় সরকারের পক্ষ থেকে তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। মানুষকে সচেতন করতেই এই প্রয়াস।’’ দক্ষিণ ২৪ পরগনার ২৯টি ব্লককে ‘নির্মল বাংলা’র তালিকায় সামিল করতে এবং ‘উন্মুক্ত শৌচবিহীন জেলা’ হিসাবে গড়ে তুলতে ইতিমধ্যেই উদ্যোগী হয়েছেন জেলাশাসক পিবি সালিম। প্রত্যেকটি ব্লকে চলছে বাড়ি বাড়ি শৌচালয় তৈরির কাজ। সুন্দরবনের প্রত্যন্ত গ্রামের মানুষ উন্মুক্ত জায়গায় মলত্যাগ করেই অভ্যস্ত। তা বন্ধের জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে হোর্ডিং, পোস্টার, ব্যানার লাগিয়ে প্রচার চলছিল কিছু দিন ধরে। কিন্তু তাতেও পুরোপুরি লাভ হচ্ছিল না অভিযোগ। সে কারণেই ভোরবেলা নজরদারি কমিটি তৈরি করা হল বলে জানাচ্ছে জেলা প্রশাসনের একটি সূত্র। আগামী মার্চ মাসের মধ্যে দক্ষিণ ২৪ পরগনাকে ‘নির্মল জেলা’ ঘোষণা করার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। সে কারণেই জেলাশাসক পিবি সালিম প্রত্যেকটি ব্লকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন।
ক্যানিং ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি পরেশরাম দাস বলেন, ‘‘গ্রামীণ এলাকার বহু মানুষ এখন খোলা জায়গায় মলত্যাগ করতে অভ্যস্ত। তাঁদের বুঝিয়ে সচেতন করাই আমাদের উদ্দেশ্য।’’