নমুনা: তাণ্ডবের পরে। হাসনাবাদে। নিজস্ব চিত্র
গোষ্ঠী কোন্দলের জেরে এ বার শাসকদলের দলীয় কার্যালয় ভাঙচুর ঘটনা ঘটল হাসনাবাদের দক্ষিণ ভেবিয়া হাটখোলায়।
পুলিশ জানিয়েছে, বুধবার রাতে তৃণমূলের পার্টি অফিসে কয়েকজন কর্মী আলোচনা করছিলেন। সে সময়ে কিছু যুবক মোটরবাইক নিয়ে এসে এলোপাথাড়ি গুলি ও বোমা ছোড়ে বলে অভিযোগ। মোটরবাইকে আসা যুবকেরা কার্যালয়ের ভিতরে ঢুকে ভাঙচুর চালায়। মারধর করা হয় কয়েকজনকে। দলের একটি সূত্র জানাচ্ছে, গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই এই ঘটনা। এলাকায় পুলিশি টহল চলছে।
উত্তর ২৪ পরগনার জেলা সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, ‘‘দলে কোনও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব চলবে না। সকলকে এক সঙ্গে থাকতে হবে। যদি গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রমাণ মেলে, তা হলে উপযুক্ত সাজা পাবে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘দলের অনুমতি ছাড়া কোনও কার্যালয় খোলা যাবে না। ওখানে কেন এতগুলি কার্যালয়, তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই এলাকায় তৃণমূলের দু’টি দলীয় কার্যালয় আছে। সেগুলি তৃণমূল নেতা ফিরোজ কামাল গাজি ওরফে বাবু মাস্টারের নেতৃত্বে চলে। সম্প্রতি সেখানে আরও একটি কার্যালয় খোলা হয়। উদ্বোধন করেন তৃণমূলের প্রাক্তন জেলা সহ সম্পাদক সৌরেন পাল ওরফে গুড্ডু। এই দুই গোষ্ঠীর মধ্যেই বিবাদ বলে জানা গিয়েছে।
অভিযোগ, বুধবার রাত ৯টা নাগাদ ৪০-৫০টি মোটরবাইকে বেশ কিছু ছেলে নতুন দলীয় কার্যালয়ে এসে তাণ্ডব চালায়। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, ফিরোজের লোকেরাই মোটরবাইকে ছিল। এলাকায় আতঙ্ক ছড়ায়। দোকান বন্ধ করে লোকে ছুটোছুটি করতে থাকেন। অভিযোগ, তখনই কার্যালয়ে ঢুকে চেয়ার, টেবিল ভাঙচুর চালায় মোটরবাইক আরোহীরা। কার্যালয়ের বাইরে থাকা একটি বাইকও ভেঙে দেওয়া হয়। একটি দোকান থেকে সেলাই মেশিন লুঠ করা হয় বলেও অভিযোগ।
তৃণমূল নেতা সৌরেন পাল বলেন, ‘‘ফিরোজের সভায় লোক হচ্ছে না। আমাদের সভায় লোক হচ্ছে। দক্ষিণ ভেবিয়াতে আমাদের সভা ছিল। তাই এলাকার মানুষকে ভয় দেখাতে ফিরোজের লোকজন আমাদের দলীয় কার্যালয়ে ভাঙচুর করেছে।’’ ফিরোজ অবশ্য বলেন, ‘‘তৃণমূলের অফিস থাকা সত্ত্বেও আর একটি অফিস করা নিয়ে দলীয় কর্মীদের মধ্যে গণ্ডগোল হচ্ছে। এই ঘটনার সঙ্গে কোনও ভাবেই আমি যুক্ত নই। কেউ কেউ আমার নামে মিথ্যা অভিযোগ আনছে।’’
এই ঘটনার পরে স্থানীয় মানুষজন জানান, তৃণমূলের নিজেদের কোন্দলের জেরে তাঁরা আতঙ্কিত। এ নিয়ে বৃহস্পতিবার বিকেলে স্থানীয় বাসিন্দারা সভা ডাকেন। পুলিশ জানিয়েছে, বিবদমান দু’পক্ষই অভিযোগ দায়ের করেছে। এখনও কেউ গ্রেফতার হয়নি। তদন্ত চলছে।