দুর্ঘটনার পরে মেলা ফাঁকা, মাথায় হাত দোকানিদের

নিরঞ্জন গোলদার আগে দোকান দিতেন। তিনি মারা যাওয়ার পরে স্ত্রী কাঞ্চনা তিন মেয়ে, নাতি-নাতনিদের নিয়ে দোকান পাতেন। ডালা-ফুল বিক্রি করেন। তাঁর দোকানটি তুলনায় শক্তপোক্ত ভাবে তৈরি হওয়ায় ভাঙেনি।

Advertisement

অরুণাক্ষ ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ২৫ অগস্ট ২০১৯ ০১:০৪
Share:

ফাইল চিত্র।

কচুয়ায় লোকনাথ মন্দিরের বাইরে পুজোর ডালা বিক্রির দোকান দিয়েছিলেন মোহিত ঘোষ। দোকান ভেঙে মালপত্র প্রায় সবই তলিয়ে গিয়েছে পুকুরে। শনিবার দুপুরে পুকুরে নেমে সে সব খোঁজার চেষ্টা করছিলেন। মাথা চাপড়াতে চাপড়াতে বললেন, ‘‘আমাদের সর্বনাশ হয়ে গেল। প্রাণটুকু বেঁচেছে ঠিকই। কিন্তু আমাদের কত ক্ষতি হল, তার খোঁজ তো কেউ নিল না!’’ তুলনায় পাকাপোক্ত দোকান বানিয়েছিলেন অসিত ঘোষ। তাঁর মনোহারি দোকানটি অক্ষত আছে। বললেন, ‘‘৫০০০ টাকা দিয়ে ডেকরেটর ডেকে দোকান বানিয়েছিলাম। অনেকের আর্থিক সঙ্গতি নেই। তাঁরা কম খরচে কোনও রকমে ছাউনিটুকু দিয়েছিলেন। সে দোকানগুলিই ভেঙেছে ভিড়ের চাপে।’’ যাঁরা দোকান দিয়েছিলেন পুকুর পাড়ে, তাঁরা সকলেই গত তিরিশ বছর ধরে, মেলা শুরুর সময় থেকে আসছেন বলে জানালেন।

Advertisement

নিরঞ্জন গোলদার আগে দোকান দিতেন। তিনি মারা যাওয়ার পরে স্ত্রী কাঞ্চনা তিন মেয়ে, নাতি-নাতনিদের নিয়ে দোকান পাতেন। ডালা-ফুল বিক্রি করেন। তাঁর দোকানটি তুলনায় শক্তপোক্ত ভাবে তৈরি হওয়ায় ভাঙেনি। দোকানিরা জানালেন, পঞ্চায়েত থেকে ৩-৫০ টাকা করে নিলেও আরও কিছু খরচ গুনতে হয়। যেমন, যে বাড়ির সামনে দোকান হচ্ছে, সেই বাড়ির মালিককে প্রতিদিন দু’তিনশো টাকা করে দিতে হয়। এ ছাড়া, বিদ্যুতের খরচ। প্রতি দিন জন্য ৫০ টাকা প্রতি দিন প্রতি পয়েন্টের জন্য দিতে হয়। বিক্রি মন্দ হয় না মেলার তিন দিনে। পরেও কয়েক দিন ভিড় থাকে ভালই। ফলে খরচপাতি উঠেই আসে। কিন্তু এ বার পরিস্থিতি আলাদা। বৃহস্পতিবার রাতে পদপিষ্ট হয়ে পাঁচ জনের মৃত্যুর পরে মেলাপ্রাঙ্গণ সুনসান। মাথায় হাত গরিব ছোট দোকানিদের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন