প্রণাম: মন্দিরে ভক্তেরা। নিজস্ব চিত্র
বাঙালির দোল পূর্ণিমার পর দিন, হোলি উৎসবে যখন মেতে ওঠে গোটা দেশ, তখনই আবিরের রঙে মাতেন গাইঘাটার ইছাপুর এলাকা এবং সংলগ্ন কয়েকটি গ্রামের মানুষ। কয়েকশো বছর ধরে এই ঐতিহ্য মেনে আসছেন এখানকার মানুষ।
স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, ১৬৫১ সালে এখানে গোবিন্দ মন্দির প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠা করেন রঘুনাথ চক্রবর্তী চৌধুরী। তাঁর বংশধর অখিলেশ চৌধুরী জানালেন, সে সময় থেকেই এখানে পূর্ণিমার পর দিন প্রতিপদের দোল উৎসব হয়ে আসছে। গোবিন্দ ঠাকুরের পায়ে আবির দিয়ে তারপর এখানকার মানুষ বসন্তোৎসব শুরু করেন। ছোটরা রং-পিচকিরি তুলে রাখে এই দিনটার জন্যই। বাইরে বাইরে যাঁরা থাকেন, তাঁরাও গ্রামের উৎসবের দিনগুলিতে ফেরেন।
গোবিন্দ মূর্তিটি কোষ্ঠী পাথরের। প্রতি বছর দোল পূর্ণিমা ছেড়ে যাওয়ার পরে মন্দিরের সামনে গোবিন্দ ঠাকুরের অধিবাস পুজো শুরু হয়। পুজো শেষে ঠাকুরকে রাজবেশ পরিয়ে ঘুম পাড়ানো হয়। ভোরে আনা হয় দোলমঞ্চে। সেখানে পুজোর পরে পুরোহিত প্রথমে তিনবার দেবতার পায়ে আবির দেন। তারপরেই শুরু হয়ে যায় প্রতিপদের দোল উৎসব। প্রতিপদের দোল উৎসবকে কেন্দ্র করে সাত দিনের মেলা বসে। স্থানীয় বাসিন্দা আশিস দত্ত জানালেন, যাত্রারও আয়োজন হয় এই উপলক্ষে। সোমবার সকালে এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, হাজার হাজার মানুষ লাইনে দাঁড়িয়ে। হাতে আবির। ঠাকুরের পায়ে আবির দিচ্ছেন তাঁরা। সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে এই পর্ব। ঠাকুরের পায়ে আবির দেওয়ার পরে নিজেদের মধ্যে দোল খেলা শুরু করেন সকলে। সন্ধ্যায় ঠাকুরকে ডাবের জলে স্নান করানো হয়। তারপরে পোশাক পরিয়ে পান্তা ভাত, সব্জি দিয়ে খাওয়ানো হয়। খাওয়া-দাওয়া শেষ হলে মন্দিরে ঘুম পাড়িয়ে দেওয়া হয় গোবিন্দকে।