ঢোলাহাট কলেজ

আলো-জলের অভাব, তবু চালু হচ্ছে পড়াশোনা

সরকারি অনুমোদনের পরে প্রায় ৬ বছর কেটে গিয়েছে। কিন্তু এখনও কলেজের নিজস্ব ভবন নির্মাণের কাজ শেষ হল না। যা নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার ঢোলাহাট কলেজ কর্তৃপক্ষ থেকে শুরু করে পড়ুয়ারাও। তবে পরিকাঠামোর কাজ শেষ না হলেও আসন্ন নতুন শিক্ষাবর্ষে নতুন ভবনেই ক্লাস শুরু করতে চান কলেজ কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

দিলীপ নস্কর

ঢোলাহাট শেষ আপডেট: ০২ জুন ২০১৫ ০০:৫৮
Share:

এখনও অসম্পূর্ণ কলেজ তৈরির কাজ। —নিজস্ব চিত্র।

সরকারি অনুমোদনের পরে প্রায় ৬ বছর কেটে গিয়েছে। কিন্তু এখনও কলেজের নিজস্ব ভবন নির্মাণের কাজ শেষ হল না। যা নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার ঢোলাহাট কলেজ কর্তৃপক্ষ থেকে শুরু করে পড়ুয়ারাও। তবে পরিকাঠামোর কাজ শেষ না হলেও আসন্ন নতুন শিক্ষাবর্ষে নতুন ভবনেই ক্লাস শুরু করতে চান কলেজ কর্তৃপক্ষ।
এখন পাশে একটি স্কুলের ভবনে কলেজের ক্লাস চলছে। কিন্তু মাস দেড়েক পরে শুরু হতে চলেছে নতুন সেশন। অসমাপ্ত নতুন ভবনেই পঠনপাঠন চালু‌ করতে চাইছেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দেবারতি তরফদার বলেন, ‘‘ওই স্কুলের ঘরে কলেজের ক্লাস চালাতে খুব সমস্যা হচ্ছে। তাই আমরা দ্রুত এই নতুন ভবনে পঠনপাঠন চালু করার উদ্যোগ করেছি। অনলাইনে ভর্তিরও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’’ তিনি আরও জানান, কিছু কাজ করতে টাকার অভাবে করা যাচ্ছে না। সরকারি বরাদ্দের জন্য আবেদন করা হয়েছে।

Advertisement

কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, সুন্দরবন উন্নয়ন পর্ষদ থেকে কলেজের ভবন নির্মাণের জন্য ১ কোটি ৮৭ লক্ষ টাকা অনুমোদিত হয়েছিল। কিন্তু প্রশাসনিক জটিলতায় সে সময়ে কাজ শুরু করা যায়নি। ২০১৩ সালে ফেব্রুয়ারি মাসে নতুন পরিচালন কমিটি গঠিত হয়। তখন প্রথম কিস্তির ১ কোটি টাকা দিয়ে ঢোলাহাট মোড়ের কাছে ১২ বিঘা দানের জমিতে কলেজ ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হয়। বর্তমানে ভবনের মাত্র ৭টি ঘর নির্মাণ হয়েছে। কিন্তু পরিকাঠামোর অভাবে ক্লাস শুরু করা যায়নি ওই ভবনটিতে। এখনও পর্যন্ত কলেজে বিদ্যুৎ সংযোগ ও পানীয় জলের ব্যবস্থা হয়নি। তা ছাড়া, বর্ষা হলেই কলেজের চার দিকে জল জমে থাকে। এত অসুবিধা থাকা সত্ত্বেও ১ জুলাই থেকে ২০১৫-১৬ সেশনের ক্লাস কলেজ কর্তৃপক্ষ ওই ভবনেই শুরু করতে চাইছে।

কলেজটি ২০০৯ সালে অনুমোদন পায়। তারপর থেকেই স্থানীয় ঢোলাহাট হাইস্কুলে পঠনপাঠন চলছে। ওই ভবনে পড়ানো হয় ইংরেজি, বাংলা, ইতিহাস, ভূগোল অর্নাস। তা ছাড়াও দর্শন, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, এডুকেশন ও আরবিও পড়ানো হয়। এই এলাকাটি মূলত সংখ্যালঘু ও তপসিলি জাতি ও উপজাতি অধ্যুষিত এলাকা। বর্তমানে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ৩৫১ জন। শিক্ষক রয়েছেন ২১ জন। এঁদের মধ্যে স্থায়ী পদে ২ জন, সরকারি পার্ট টাইমার চার জন, বাকি ১৫ জন চুক্তি ভিক্তিতে। কম ছাত্রছাত্রী নিয়ে কলেজটি শুরু হয়েছিল ঠিকই, কিন্তু দিন দিন পড়ুয়ার সংখ্যা বাড়ছে। স্কুল ভবনটিতে কলেজ চালানোর জন্য মাত্র ৭টি ঘর দেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে আবার অধ্যাপকদের বসার জন্য, অফিসের কাজ এবং ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের বসার জন্য দু’টি ঘর ব্যবহার করা হয়। ওই কলেজে পড়তে আসেন কুলপি, মন্দিরবাজার, কাকদ্বীপ, পাথরপ্রতিমা, মথুরাপুরের প্রত্যন্ত এলাকার বহু ছেলেমেয়ে। সকাল সাড়ে ৬টায় ক্লাস শুরু হয়। অনেকেই সময় মতো ক্লাসে পৌঁছতে পারেন না। অধিকাংশ শিক্ষক কলকাতা থেকে ওই কলেজে পড়াতে আসেন। তাঁদের ক্ষেত্রেও একই সমস্যা হয়। এ দিকে, সাড়ে ১০টা থেকে স্কুল পড়ুয়ারা আসতে শুরু করে। ফলে সাড়ে ১০টার আগেই কলেজের ক্লাস শেষ করে দিতে হয়। ওই কলেজের সরকারি প্রতিনিধি সৈফুল আলম বলেন, ‘‘টাকার অভাবে তড়িঘড়ি নতুন ভবনের সব কাজ শেষ করা যাচ্ছে না। ভবন নির্মাণের প্রথম কিস্তির ১ কোটি টাকা পেলেও দ্বিতীয় কিস্তির ৮৭ লক্ষ টাকা বাকি রয়েছে। ওই টাকা পাওয়ার জন্য আবেদন করা হয়ছে।’’ তা ছাড়াও, কলেজের নানা আসবাবপত্রের জন্য আরও প্রায় ২০ লক্ষ টাকা লাগবে।’’

Advertisement

কুলপির বিধায়ক যোগরঞ্জন হালদার এবং সুন্দরবন উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী মন্টুরাম পাখিরার স্মরণাপন্ন হয়েছেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। যোগরঞ্জনবাবু বলেন, ‘‘আমার তহবিলের টাকা দিয়ে কলেজে যাতায়াতের একটি রাস্তা করে দিয়েছি। কিছু বেঞ্চ, চেয়ার, টেবিল ও একটি কলেজে জলের ব্যবস্থা করছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন