চিকিৎসাধীন ৬ জন ডেঙ্গি-আক্রান্ত

হাসপাতালের ছাদ চুঁইয়ে পড়ছে জল

বৃষ্টি হলেই ছাদ থেকে জল পড়ে। পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখতে হয় রোগীর বিছানা। মেজাজে ঘুরে বেরায় কুকুর-বেড়াল। জঞ্জালের স্তূপ আনাচ-কানাচে। হাসপাতালের মধ্যেই জমা জলে ডেঙ্গির মশার লার্ভা জন্মাচ্ছে বলে অভিযোগ।

Advertisement

দিলীপ নস্কর

রায়দিঘি শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০১:৩৭
Share:

আগাছায় ভরা হাসপাতাল চত্বর। নিজস্ব চিত্র।

বৃষ্টি হলেই ছাদ থেকে জল পড়ে। পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখতে হয় রোগীর বিছানা। মেজাজে ঘুরে বেরায় কুকুর-বেড়াল। জঞ্জালের স্তূপ আনাচ-কানাচে। হাসপাতালের মধ্যেই জমা জলে ডেঙ্গির মশার লার্ভা জন্মাচ্ছে বলে অভিযোগ। এরই মধ্যে জ্বর এবং ডেঙ্গির উপসর্গ নিয়ে অনেকে ভর্তি হচ্ছেন। কয়েক জনের রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু মিলেছে ইতিমধ্যে। তবু এই ভাবেই চলছে রায়দিঘি গ্রামীণ হাসপাতাল।

Advertisement

ওই হাসপাতালের উপরে এলাকার কয়েক হাজার মানুষ নির্ভরশীল। হাসপাতাল এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় ৫০ বছর আগে হাসপাতালটি তৈরি হয়েছিল। গত এক মাসে যেখানে জ্বর নিয়ে প্রায় ১১০০ জন ভর্তি হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ১৫ জনের রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু ধরা পড়েছে। ৬ জন এখনও হাসপাতালে ভর্তি।

যদিও এই হাসপাতালে ডেঙ্গির চিকিৎসার প্রায় কোনও পরিকাঠামোই নেই। রোগীর রক্তের নমুনা ডায়মন্ড হারবার জেলা হাসপাতাল অথবা কলকাতার হাসপাতালে পাঠাতে হয়। ফলে রিপোর্ট আসতে দেরি হয়। ডেঙ্গিতে আক্রান্ত রোগী ও তাঁদের পরিবারের লোকজনের অভিযোগ, হাসপাতালে সব সময়ে চিকিৎসক থাকেন না। ওয়ার্ডের ভিতরে জল জমে থাকে। অভিযোগ, নজরদারির অভাবে সেই জলেই জন্মাচ্ছে ডেঙ্গির লার্ভা।

Advertisement

হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্তমানে ৯ জন চিকিৎসক এবং ৮ জন নার্স রয়েছেন। ৬০টি শয্যা থাকলেও তবে বেশির ভাগ সময়েই শয্যা সংখ্যার থেকে বেশি রোগী ভর্তি থাকেন। প্রতি দিন বহির্বিভাগে ভিড় জমান প্রায় ৩০০ জন রোগী। চাপ সামলাতে হিমশিম খেতে হয় স্বাস্থ্যকর্মীদের।

রায়দিঘির বিএমওএইচ প্রণবেশ হালদার সমস্যার কথা মেনে নিয়ে বলেন, ‘‘ডেঙ্গি আক্রান্ত তিন জনকে ডায়মন্ড হারবার জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল। সেখান থেকে তাঁদের কলকাতায় পাঠিয়েছে বলে খবর পেয়েছি।’’ হাসপাতালের বেহাল পরিকাঠামো নিয়ে তিনি জানান, পরিস্থিতির হাল ফেরানোর জন্য স্বাস্থ্য দফতরে একাধিক বার জানিয়েছেন। এখনও কোনও উত্তর আসেনি।

হাসপাতাল চত্বরে ঘুরে দেখা গেল, ওয়ার্ডের কয়েকটি জায়গায় সিলিং থেকে চাঙড় খসে পড়েছে। সেখান থেকে চুঁইয়ে পড়ছে বৃষ্টির জল। সেই জলেই ভরে গিয়েছে হাসপাতালের মেঝে। নিকাশি নালায় জমে রয়েছে আবর্জনা।

হাসপাতালের এক কর্তা জানান, মাস কয়েক আগেও চাঙড় ভেঙে এক জন রোগী আহত হয়েছিলেন। তখন প্রশাসন এবং শাসক দলের পক্ষ থেকে ছাদ সংস্কারের আশ্বাস মিলেছিল। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। হাসপাতালের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক স্বাস্থ্যকর্মীর অভিযোগ, ‘‘আমরা নিরাপত্তার অভাবে ভুগছি। কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে রোগীর আত্মীয়েরা আমাদের উপরে চড়াও হন। বৃষ্টি হলেই ওয়ার্ডে জল জমে যাচ্ছে। কাজ করতে অসুবিধা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন