WB Municipal Election

West Bengal Municipal Election 2022: অন্তরালে প্রার্থী ও প্রশ্নে পুলিশ, সরগরম কামারহাটি

মোটের উপরে শান্তিপূর্ণ ভোট হয়েছে বরাহনগর, পানিহাটিতে। সকালে সর্বত্র বুথ ফাঁকা থাকলেও বেলায় ভোটারের সংখ্যা যেমন বেড়েছে, বহিরাগতদের বাইকের দৌড়ও সেই সঙ্গে বাড়ে।

Advertisement

শান্তনু ঘোষ

শেষ আপডেট: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৬:৩৬
Share:

কামারহাটির ২৯ নম্বর ওয়ার্ডে ভাঙচুর করা হচ্ছে একটি গাড়ি। নিজস্ব চিত্র।

খোদ শাসকদলের প্রার্থী বেপাত্তা। গোলমাল থামাতে গিয়ে জখম পুলিশও। এমনকি, শাসকদলের প্রার্থী বহিরাগতদের নিয়ে এসেছেন, এই অভিযোগ তুলে একদল যুবককে বেধড়ক পেটালেন স্থানীয়েরা। আর গোটা বিষয়ে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিতর্ক উস্কে দিলেন স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক। এ হেন ঘটনায় রবিবার, পুরভোটের সকাল থেকে বিকেল সরগরম রইল কামারহাটি।

প্রার্থী-তালিকা ঘোষণার পর থেকেই সমস্যা শুরু হয়েছিল কামারহাটির এক থেকে সাত নম্বর ওয়ার্ডে। সাংসদ সৌগত রায় বলেন, “চিন্তা থাকলেও সেখানে শান্তিপূর্ণ ভোটই হয়েছে।” সূত্রের খবর, বিকেলে চার নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূল ও সিপিএমের সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে দুষ্কৃতীদের ছোড়া গুলি লেগেছে এক এসআই-এর পায়ে। যদিও পুলিশ প্রশাসন কিছু জানায়নি। এ দিন দুপুর থেকে সাতটি ওয়ার্ডের অলিগলিতে ঢুকে লাঠি উঁচিয়ে লোকজনকে তাড়া করেছে পুলিশবাহিনী। পাঁচ নম্বরের তৃণমূল প্রার্থী আব্দুল খালেক নির্দল প্রার্থী অন্নুর বিরুদ্ধে সকাল থেকেই মারধর, বোমাবাজির অভিযোগ তোলেন। কামারহাটির ২, ৩, ৪, ৫, ৬, ১২, ১৫ ও ২৩ নম্বর ওয়ার্ডে নির্দল প্রার্থীরাই ছিলেন শাসকদলের মূল কাঁটা। সেই খোঁচাতেই কি ২৩ নম্বরের তৃণমূল প্রার্থী সুশান্ত রায় বেপাত্তা?

Advertisement

এ দিন সকাল থেকে খোঁজ মেলেনি তাঁর। ওই ওয়ার্ডের কোথাও তৃণমূলের ব্যানার বা দেওয়াল লিখনও চোখে পড়েনি। বরং ছিল জোড়া পাতার প্রচার। ইতিউতি দেখা গিয়েছে সিপিএমের প্রচারও। অধিকাংশ লোকজনও বললেন, “এখানে সিপিএমের সঙ্গে নির্দলের লড়াই। ভোট ঘোষণার পর থেকেই তৃণমূল প্রার্থী কার্যত নিরুদ্দেশ।” বিষয়টি লজ্জাজনক বলে জানিয়ে সাংসদ সৌগত রায় বলেন, “জানি না, কে টিকিট দিয়েছেন। তবে ওঁকে বলেছিলাম প্রচারে নামতে। কিন্তু তা-ও করলেন না। ভোটের দিনও থাকলেন না। হয়তো কাউকে জিতিয়ে দিতেই এমন করলেন।” অভিযোগ উড়িয়ে সুশান্ত ফোনে বললেন, “আমি অসুস্থ। চিকিৎসার জন্য দূরে আছি। বিকেল পাঁচটার মধ্যে এলাকায় ফেরার চেষ্টা করব।”

খবরাখবর রাখছেন কী ভাবে? “শরীর ভাল নেই, বেশি কথা বলতে পারছি না।” বলেই ফোন রেখে দিলেন মেট্রো রেলের চাকরি থেকে স্বেচ্ছাবসর নেওয়া সুশান্ত। তাঁর বিরুদ্ধে নির্দল প্রার্থী সোমনাথ রায়চৌধুরী (বাবু) বললেন, “৩৪ নম্বর ওয়ার্ডে স্ত্রীর নাম ছিল। সংশোধনে সেটি বাদ হয়ে গেল। দীর্ঘ দিন দলের স্বার্থে কাজ করেও ন্যূনতম সম্মান পেলাম না। তাই পরিবার ও দলের কর্মীদের সম্মান রক্ষার্থে নির্দল প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছি।”

Advertisement

এ দিন সকাল থেকে বিটি রোড সংলগ্ন জগন্নাথ মন্দিরে কিংবা ব্যক্তিগত অফিসে বেশি থেকেছেন সোমনাথ। ময়দানে শাসকদল না থাকাতেই কি এতটা নিশ্চিন্ত? সোমনাথের কথায়, “উনি দলের একনিষ্ঠ কর্মী। শুনেছি, অসুস্থতার কারণে প্রথম দিন থেকে প্রচারও করতে পারেননি। কর্মী ও সাধারণ মানুষ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে জোড়া পাতার প্রচার করে দিদিকে (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) সম্মান জানিয়েছেন।” আপনি তো দলের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে নির্দল প্রার্থী হয়েছেন। দল বহিষ্কার করল না কেন? তাঁর উত্তর, ‘‘আমি কোনও পদাধিকারী নই। দলে ছিলাম, দলেই আছি।’’

২৯ নম্বরের তৃণমূল প্রার্থী নির্মলা রাই আবার সকাল থেকে অভিযোগ তোলেন দলেরই একাংশের বিরুদ্ধে। দুপুরে তিনি বহিরাগতদের ঢুকিয়ে ভোট করাচ্ছেন, এমন অভিযোগে উত্তর বাসুদেবপুরে একদল যুবককে মারধর করেন স্থানীয়েরা। উল্টে দেওয়া হয় গাড়ি। পুলিশ কয়েক জনকে ধরে। কামারহাটিতে পুলিশ নির্লজ্জ ভূমিকায় ছিল বলে মন্তব্য করেন বিধায়ক মদন মিত্র। খড়দহে দু’-তিনটি ওয়ার্ডে সিসি ক্যামেরা বন্ধ করে ছাপ্পার অভিযোগ উঠেছে। অন্য দিকে, মোটের উপরে শান্তিপূর্ণ ভোট হয়েছে বরাহনগর, পানিহাটিতে। সকালে সর্বত্র বুথ ফাঁকা থাকলেও বেলায় ভোটারের সংখ্যা যেমন বেড়েছে, বহিরাগতদের বাইকের দৌড়ও সেই সঙ্গে বাড়ে। বিকেলে আলমবাজারে বহিরাগত যুবকদের বাইক নালায় ফেলে দেয় পুলিশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন