এই সেই গোয়ালঘর। নিজস্ব চিত্র।
রোজগার করতে পারেন না বলে তিয়াত্তর বছরের বৃদ্ধর থাকার জায়গা হয়েছিল বাড়ির গোয়ালঘরে। প্রতিবাদ করায় ছেলে ও স্ত্রী-র কাছ থেকে জুটেছিল বেধড়ক মার। সহ্য করতে না পেরে মঙ্গলবার থানায় অভিযোগ করেন ওই বৃদ্ধ। এরপরেই তাঁর স্ত্রী সন্ধ্যা বসু ও ছেলে পলাশ বসুকে গ্রেফতার করে পুলিশ। হাবরার জানাফুল এলাকার আমতলা গ্রামের ঘটনা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই গ্রামের বাসিন্দা পরিতোষ বসু দীর্ঘদিন লটারির টিকিট বিক্রি করে সংসার চালিয়েছেন। কিন্তু এখন তিনি রোজগারে অক্ষম। পলাশবাবুর একটি মুদির দোকান রয়েছে। স্বচ্ছল পরিবার।
পরিতোষবাবু বলেন, ‘‘স্ত্রীর ইন্ধনেই ছেলে ও বৌমা আমাকে ঠিক মতো খেতে দিত না। গোয়ালঘরে গরু ছাগলের সঙ্গে রাখা হয়েছিল।’’ প্রাণনাশের হুমকিও দেওয়া হচ্ছিল বলে অভিযোগ পরিতোষবাবুর।
পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগের কথা জানতে পেরে স্ত্রী, ছেলে ও বৌমা তাঁকে মঙ্গলবার বেধড়ক মারধর করে বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে পুলিশ এসে পরিতোষবাবুকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে যান। প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
এই ঘটনার পরেও পলাশবাবু ও সন্ধ্যাদেবীর কোনও অনুশোচনা নেই বলে পুলিশ জানিয়েছে।
বুধবার দুপুরে ওই বৃদ্ধের বাড়ি গিয়ে দেখা গেল বাড়ির সামনে বড় একটি গোয়ালঘর। সেখানে পাঁচটি বড় গরু ও তিনটি বাছুর রয়েছে। বৃদ্ধকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। তিনি কোথায় তা প্রতিবেশীরা বলতে পারেননি। বাড়িতে কেউ ছিলেন না। এলাকার মানুষ ওই ঘটনা সমর্থন করেন না। এলাকার পঞ্চায়েতপ্রধান অমরেন্দু সোম বলেন, ‘‘পরিতোষবাবুর যাতে খাওয়ার অভাব না হয় দেখব। পরিবারের সঙ্গে যাতে তিনি থাকতে পারেন তার চেষ্টা করব।’’ ঘটনার কথা শুনে রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, ‘‘ওই বৃদ্ধ যদি কোনও হোমে থাকতে চান তার ব্যবস্থা করা হবে।’’
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের বুধবার বারাসত আদালতে তোলা হয়েছিল। বিচারক তাঁদের জামিন দিয়েছেন