ধৃত বাসন্তী কুণ্ডু। নিজস্ব চিত্র।
বান্ধবীকে সঙ্গী করে লক্ষ টাকার সুপারিতে দুষ্কৃতীদের দিয়ে স্বামীকে খুন করানোর অভিযোগে আগেই গ্রেফতার হয়েছিলেন সাকিলা বিবি। এ বার পুলিশের জালে ধরা পড়লেন বাদুড়িয়ার তারাগুনিয়া বোসপাড়ায় বাসিন্দা, সাকিলার বান্ধবী বাসন্তী কুণ্ডু।
পুলিশের দাবি, লোক লাগিয়ে খুনের ছক কষেছিলেন বাসন্তী। সুপারির টাকা জোগান সাকিলা। ভাড়াটে দুষ্কৃতীরাই খুন করেছিল সাকিলার স্বামী সিরাজুল মোল্লাকে। এই ঘটনায় জড়িত আরও চারজনের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ। শনিবার বাসন্তীকে বসিরহাটের এসিজেএমের আদালতে তোলা হলে বিচারক তাঁকে ৪ দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।
মঙ্গলবার ভোরে তারাগুনিয়া গ্রামে দুষ্কৃতীদের হাতে খুন হন সিরাজুল মোল্লা। সাকিল পালানোর চেষ্টা করলে গ্রামের মানুষ তাঁকে ধরে মারধর করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়।
পুলিশের কাছে করা অভিযোগে নিহতের মা রাবিয়া বিবি দাবি করেন, বৌমাই লোক লাগিয়ে ছেলেকে খুন করিয়েছে। সাকিলাকে গ্রেফতারের দাবিতে গত বৃহস্পতিবার এলাকার কয়েকশো মানুষ ক্ষোভে ফেটে পড়েন। মহিলার বাড়িতেও ভাঙচুরের চেষ্টা চলে। পুলিশ গিয়ে মহিলাকে ধরে পরিস্থিতি সামাল দেয়। এর পরে আরও এক দফা রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায় জনতা।
সাকিলা ঝাড়ফুঁক করতেন। তদন্তকারী অফিসারদের দাবি, জেরায় তিনি জানিয়েছেন, নানা কারণে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সম্পর্ক ভাল ছিল না। যার জেরে একটা সময়ের পরে সিরাজুলকে নিজের জীবন থেকে সরিয়ে ফেলতে চেয়েছিলেন সাকিলা। বাসন্তী তাঁর পূর্ব পরিচিত। ওই মহিলাই বান্ধীর জীবন থেকে তাঁর স্বামীকে সরানোর ছক কষেন বলে দাবি পুলিশের। দুষ্কৃতীদের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেন।
তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, মধ্যমগ্রামের একজনের মাধ্যমে ১ লক্ষ টাকায় দুষ্কৃতী ভাড়া করা হয়। কী ভাবে সিরাজুলকে খুন করা হবে, তা নিয়ে একপ্রস্ত রেইকি করে দুষ্কৃতীরা। ভোরের দিকে ইটভাটা থেকে ফেরার সময়ে পিছন থেকে মাথায় রডের ঘা দিয়ে খুন করা হয় ওই ব্যক্তিকে।
কেউ যাতে চিনতে না পারে, সে জন্য মুখ ক্ষতবিক্ষত করে দেয় দুষ্কৃতীরা। এরপরে একটি বাগানে আম গাছের সঙ্গে দেহ দড়ি দিয়ে বেঁধে রেখে পালায়। খুনের ঘটনায় সরাসরি যারা হাত লাগিয়েছিল, তাদের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ।