মিলের সামনে শ্রমিকেরা।
প্রশাসনের আর্জিতে অনশন কর্মসূচি স্থগিত করল রিষড়ার ওয়েলিংটন জুটমিলের তিন শ্রমিক সংগঠন। রবিবার শ্রমিকদের একাংশ মিলের গেটে জড়ো হলে পুলিশ তাঁদের সরিয়ে দেয় বলে অভিযোগ। এ নিয়ে পুলিশের সঙ্গে তাঁদের বচসা হয়। আজ, সোমবার মিল নিয়ে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হওয়ার কথা।
আর্থিক সঙ্কটে বেশি দামে কাঁচা পাট কেনার পরিস্থিতি না থাকা, কম উৎপাদন এবং শ্রমিক সংগঠনের একাংশের অসহযোগিতার কারণ দেখিয়ে চার মাস আগে মিলে তালা ঝোলান কর্তৃপক্ষ। সম্প্রতি মিলে ‘সাসপেনশন অব ওয়ার্ক’ প্রত্যাহার করেন কর্তৃপক্ষ। কিন্তু রক্ষণাবেক্ষণের কাজ শুরু করা নিয়ে তাঁদের বিরুদ্ধে চুক্তিভঙ্গের অভিযোগে সিআইটিইউ, এআইটিইউসি এবং আইএনটিইউসি মিলিত ভাবে রবিবার থেকে রিলে অনশনের কর্মসূচি নিয়েছিল।
মিল সূত্রের খবর, শনিবার রাতে শ্রীরামপুরের যুগ্ম শ্রম কমিশনার এবং আইসি দিব্যেন্দু দাস আন্দোলনকারী শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তাঁরা জানান, সমস্যা সমাধানে আজ, সোমবার ত্রিপাক্ষিক বৈঠক করা হবে। তার আগে তাঁরা যেন অনশনের কর্মসূচি প্রত্যাহার করেন। এর পরেই ওই কর্মসূচি প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেয় তিন শ্রমিক সংগঠন।
আন্দোলনকারী শ্রমিক-নেতাদের বক্তব্য, ওই সিদ্ধান্তের কথা শ্রমিকদের কাছে ঘোষণার জন্য রবিবার সকালে তাঁরা মিলের গেটের সামনে যান। কিছু শ্রমিকও জড়ো হন। শ্রীরামপুর থানার পুলিশ সেখানে মোতায়েন হয়েছিল। তারা শ্রমিকদের জমায়েতে আপত্তি জানায়। তখন দু’পক্ষের বচসা হয়।
এআইটিইউসি নেতা প্রাণেশ বিশ্বাস বলেন, ‘‘অনশন যে হেতু ঘোষিত কর্মসূচি ছিল, তা স্থগিতের কথা শ্রমিকদের জানানো আমাদের কর্তব্য এবং গণতান্ত্রিক অধিকার। কিন্তু পুলিশ তা করতে বাধা দেয়।’’
পুলিশের বক্তব্য, অনশন কর্মসূচি স্থগিতের সিদ্ধান্তের পরেও মিলের সামনে শ্রমিকদের জমায়েত অর্থহীন। আন্দোলনের জন্যই শ্রমিকদের একাংশ সেখানে জড়ো গিয়েছিলেন। সেই কারণেই আপত্তি জানানো হয়।
শুক্রবার মিল-কর্তৃপক্ষ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানান, আজ, সোমবার থেকে রক্ষণাবেক্ষণের কাজ চালু করা হবে। এর পরেও অবশ্য শ্রমিক সংগঠনগুলির তরফে অনশনের কর্মসূচি বহাল রাখা হয়েছিল। শ্রমিক নেতাদের বক্তব্য, আগামী শুক্রবারের মধ্যে শেড মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের কাজ শেষ করে পরের দিন থেকে উৎপাদন চালুর কথা। অযথা দেরি করায় নির্দিষ্ট দিনে উৎপাদন চালু করা যাবে কিনা, সেই প্রশ্ন তাঁরা তুলছেন।
পক্ষান্তরে, মিল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, লোকসান এবং আর্থিক সঙ্কট সত্ত্বেও উৎপাদন চালানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে তাঁদের সদিচ্ছার অভাব নেই। কিন্তু শ্রমিক সংগঠনের একাংশ প্রতি পদে অযথা কর্তৃপক্ষের কাজের বিরোধিতা করছে। তাতে নানা সমস্যা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রেও শ্রমিকপক্ষের একাংশের অসহযোগিতায় স্বাভাবিক পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে বলে তাঁদের অভিযোগ।