আদালতের পথে অনিমা।
স্বামীর সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্ক চুকে গেলেও তারই দলের হয়ে গাড়ি চুরির কাজ চালিয়ে যাচ্ছিল দ্বিতীয় স্ত্রী। চোরাই গাড়ির নম্বরপ্লেট, চ্যাসিস নম্বর বদলের মতো ‘গুরুদায়িত্ব’ ছিল তার। দাঁড়িয়ে থেকে সেই কাজ করাত অনিমা সরকার। চোরাই গাড়ির খদ্দের খুঁজতে বেরিয়েই শেষে পুলিশের জালে ধরা পড়ল ক্যানিঙের জীবনতলার বাসিন্দা ওই মহিলা। তার আরও দুই ‘সহকর্মী’কেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ। চক্রের মূল পান্ডা, অনিমার প্রাক্তন স্বামীর খোঁজ চালাচ্ছে পুলিশ। তবে তদন্তের স্বার্থে তার নাম জানাতে চায়নি তারা।
বুধবার রাতে দু’টি চোরাই গাড়ি-সহ বকখালি থেকে ওই তিনজন ধরা পড়ে। অনিমা ছাড়া ধৃত বাকি দু’জন হল অনন্ত প্রামাণিক ও স্বপন দাস। বাড়ি ফ্রেজারগঞ্জে। গাড়িগুলি আটক করা হয়েছে। সেগুলির নম্বরপ্লেট জাল বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। বৃহস্পতিবার ধৃতদের কাকদ্বীপ এসিজেএম আদালতে তোলা হলে অনিমাকে ৪ দিনের পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক। বাকিদের ১৪ দিন জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পশ্চিম) চন্দ্রশেখর বর্ধন বলেন, ‘‘অনেক দিন ধরে এই গাড়ি পাচার চক্রের খোঁজ চলছিল। আর কোন কোন লিঙ্কম্যান এদের হয়ে কাজ করত, তা দেখা হচ্ছে।’’ পুলিশের দাবি, জয়নগর থানা এলাকা থেকেই গাড়ি চুরি চক্রের কাজ দেখভাল করত অনিমার প্রাক্তন স্বামী। রায়দিঘি, কৈখালি, জয়নগর-সহ বিভিন্ন জায়গায় তাদের ডেরা ছিল বলে জেনেছে পুলিশ।
ধৃতদের জেরা করে পুলিশ জানতে পেরেছে, কাগজপত্র ছাড়াই চোরাই গাড়ি বিক্রি করা হতো গ্রাহকের কাছে। কলকাতা-সহ রাজ্যের বিভিন্ন জেলা শহর থেকে গাড়ি চুরি করে তা ভিন রাজ্যেও পাচার করত অনিমা আর তার সাগরেদরা। ভিনরাজ্য থেকে গাড়ির নকল কাগজপত্র তৈরি করা হতো বলে জানিয়েছে অনিমা। তবে কাগজপত্র ছাড়াও নেহাত কম দামে চোরাই গাড়ি অনেককে বিক্রি করা হতো বলেও জানতে পেরেছে পুলিশ।