দীর্ঘদিন আগে কাজ শুরু হয়েছিল ঠিকই। কিন্তু জমি জটে থমকে গিয়েছে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র শক্তিশালী করার কাজ।
কাকদ্বীপের চারটি ব্লকে বিদ্যুৎবণ্টন সংস্থার অসংখ্য গ্রাহকের বিদ্যুতের সংযোগ রয়েছে, কিন্তু ভোল্টেজ বাড়ছে না। এক মহিলার আপত্তিতে প্রায় ছ’মাস হল ১২ কোটি টাকার ওই প্রকল্পের কাজ বন্ধ বলে অভিযোগ। পঞ্চায়েত সমিতি, এলাকার মন্ত্রী এবং কুলপির বিধায়কের কাছে চিঠি দেওয়ার পরেও তাঁরা নজর দিচ্ছেন না বলেও দাবি স্থানীয় মানুষের।
বিষয়টি নিয়ে বিরক্ত খোদ বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, ‘‘ওই প্রকল্পটি হয়ে যাওয়ার কথা ছিল। খতিয়ে দেখছি কোথায় সমস্যা হচ্ছে।’’
বছর দেড়েক আগে কাকদ্বীপের কাশীনগর সাব স্টেশন থেকে সংযোগ টেনে ঝুমাই নস্কর হয়ে কুলপির শিমুলবেড়িয়ায় হওয়ার কথা ছিল ৩৩ কেবির সাব স্টেশন। তাতে মথুরাপুর, কাকদ্বীপ, পাথরপ্রতিমা এবং কুলপি ব্লকের বেশ কিছু এলাকায় বিদ্যুতের ভোল্টেজ বাড়বে বলে দাবি দফতরের ইঞ্জিনিয়ারদের। ৩০ কিলোমিটার রাস্তা জুড়ে বড় ওই প্রকল্পের কাজও চলছিল জোরকদমে। কিন্তু ঝুমাই নস্কর এলাকার এক মহিলার আপত্তির জেরে তা হঠাৎই আটকে গিয়েছে।
গত মাসে জেলার প্রশাসনিক বৈঠকে লো ভোল্টেজের এই সমস্যা মুখ্যমন্ত্রীর কাছেও তুলে ধরেছিলেন দফতরের কর্তারা। তখনই ঠিক হয়, শিমুলবেড়িয়া সাবস্টেশনটি দ্রুত চালু করা গেলে এই সমস্যার হাত থেকে মুক্তি পাবে ওই চারটি ব্লকের অসংখ্য গ্রাহক। সেই মতো সাবস্টেশনটি পুজোর আগেই উদ্বোধনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছিল। ঠিকাদার সংস্থার এক কর্মী বলেন, ‘‘প্রকল্পের ৯০ শতাংশ কাজ হয়ে গিয়েছে। আর মাত্র এক দেড় কিলোমিটার লাইন টানার কাজ বাকি। এই সমস্যার কথা আমরা বিদ্যুৎ দফতরকে জানিয়েছি।’’
বিদ্যুৎ প্রকল্পের কর্তারা প্রায় দু’সপ্তাহ আগে চিঠি লিখে কাকদ্বীপ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিকে জানিয়েছেন, নেতাজি পঞ্চায়েতের সানকিবেড়িয়ার বাসিন্দা সেরিনা বিবি প্রকল্পের কাজ বাধা দিচ্ছেন। তাই লাইন টানার কাজ শেষ হয়নি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই মহিলা দাবি করেছেন, যে এলাকা দিয়ে লাইন টানা হচ্ছে, তা তাঁর সম্পত্তির মধ্যে পড়েছে। বাধা পেয়ে প্রকল্পের কাজ খানিকটা ঘুরিয়ে নিতে গিয়েছিল ঠিকাদাররা। কিন্তু সে ক্ষেত্রে আবার অন্য বাসিন্দাদের আপত্তির মুখে পড়েন তাঁরা। যাবতীয় জট পেকেছে জুমাইনস্কর এলাকাতেই।
কেন এত দিনেও জট খুলছে না? কাকদ্বীপ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বুদ্ধদেব দাস বলেন, ‘‘বিষয়টি জানি না। খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’