অর্থ-সংগ্রহ: নিজস্ব চিত্র
অঝোরধারে বৃষ্টি হচ্ছে। তার মধ্যেই কাদাভরা মাঠে ফুটবল খেলছে ছেলেরা। গ্রামবাংলার পরিচিত দৃশ্য।
বর্ষা জমতেই তাই গ্রামবাসীদের চাঁদায় ছয় দলের ফুটবল টুর্নামেন্ট শুরু হল বসিরহাটে। ছোট জিরাকপুর গ্রামে আয়োজিত এই টুর্নামেন্টে যোগদান করেছে ট্যাঁটরা, তাঁতিপাড়া, বিশ্বাসপাড়া, রাধাগোবিন্দ কলোনি, ঠাকুরতলা এবং ছোট জিরাকপুর গ্রামের ছেলেরা। স্থানীয় সোলার মাঠে দু’টি গ্রুপে ভাগ করে লিগ ও নক আউট পর্যায়ের খেলা হবে। ফাইনাল খেলা ৩০ জুলাই।
তবে প্রতিযোগিতার আয়োজন করতে কেন গ্রামবাসীদের সাহায্য নিতে হল সোলার মাঠ ফুটবল কমিটিকে? কমিটির সদস্য তুহিন দাস, রাকেশ বিশ্বাস, মানস বিশ্বাসেরা জানিয়েছেন, এক সময়ে সারা বছরই এই মাঠে ফুটবল খেলা হতো, ভিড় জমাতেন দর্শকেরা। এমনকী স্থানীয় অনেক ছেলেই কলকাতার বিভিন্ন দল ও রাজ্য পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় খেলেছে। ইদানীং আগ্রহ কমছে ফুটবলে। তাঁদের কথায়, “পুরনো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতেই আশেপাশের গ্রামের ছেলেদের নিয়ে এই ফুটবল লিগ শুরু করা হল।”
আয়োজক কমিটির আরও তিন সদস্য গৌতম বিশ্বাস, সন্দীপ বিশ্বাস, নিমাই মণ্ডল জানিয়েছেন, ১৬ জুলাই শুরু হয়েছে ফুটবল লিগ খেলা। তাঁরা বলেন, “এক সময় ছেলেরা এখানে নিয়মিত ফুটবল খেলত। স্থানীয় মানুষের মধ্যে খেলাধুলোর প্রতি আগ্রহ বাড়ানোর জন্য মেয়েদের ফুটবলের ম্যাচেরও আয়োজন করা হয়েছিল। বসিরহাট লিগের সুপার ডিভিশন ও ফার্স্ট ডিভিশনে যোগদান করে এখানকার ছেলেরা। ২০১৬ সালে অনূর্ধ্ব-১৪ বাংলার ফুটবল দলের অধিনায়ক হয়েছিল এলাকার এক ফুটবলার।” পাশাপাশি, স্থানীয় লিবার্টি ক্লাব ও জিরাকপুর স্পোর্টিং ক্লাবের পক্ষ থেকে সপ্তাহে তিন দিন স্থানীয় ফুটবল কোচ সমীরণ ব্রহ্মের তত্ত্বাবধানে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে।
এমন ফুটবল-সংস্কৃতি যেখানে, সেই এলাকা যাতে কোনও ভাবেই পিছিয়ে না পড়ে তাই বাড়ি বাড়ি গিয়ে চাঁদা তুলে টুর্নামেন্ট চালু করা হয়েছে। এখন ফের বিকেল হলেই মাঠ ভরে যাচ্ছে দর্শকে। ফলে ছোট জিরাকপুরের আনন্দের আর শেষ নেই!