বারাসতের চাঁপাডালির মোড়ে সিসি ক্যামেরা। —নিজস্ব চিত্র।
সল্টলেক-রাজারহাটের পরে এ বার বারাসত-মধ্যমগ্রাম। আর তৃতীয় ধাপে অশোকনগর।
অপরাধ রুখতে শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে বসছে সিসিটিভি। কিছু বিশেষ জায়গাতেও থাকবে লুকোনো ক্যামেরা। কিছু ঘটলে সিসিটিভির ফুটেজ দেখে তদন্তে নামবে পুলিশ। ক্যামেরা বসানো প্রায় শেষ। বারাসত ও মধ্যমগ্রামে এই ব্যবস্থার উদ্বোধন হবে সোমবার।
সল্টলেকে লাগাতার চুরি ডাকাতির পরে মাস চারেক আগেই বিভিন্ন জায়গায় সিসিটিভি বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিধাননগর পুলিশের এক কর্তার কথায়, এর আগে কিছু দুর্ঘটনাপ্রবণ মোড়ে ট্রাফিকে নজরদারির জন্য কিছু সিসিটিভি বসানো ছিল। বেশ কিছু চুরি-ডাকাতি-ছিনতাইয়ের পরে সেই সিসিটিভির ফুটেজ তদন্তে সাহায্য করেছিল। এর পরেই সল্টলেকের আরও কিছু এলাকায় সিসিটিভি বসে। সল্টলেক ও রাজারহাটের আরও কিছু জায়গায় সেই কাজ এখনও চলছে।
শুধু সল্টলেকই নয়, এমন অভিজ্ঞতা হয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা পুলিশেরও। বছর তিনেক আগে বারাসত স্টেশন সংলগ্ন কাছারি ময়দান এলাকায় পরপর অপরাধ হয়। ২০১১-র ১৪ ফেব্রুয়ারি দিদির সম্ভ্রম রক্ষা করতে গিয়ে মত্ত দুষ্কৃতীদের হাতে খুন হয় মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী রাজীব দাস। তার পরে ওই এলাকায় লাগাতার চুরি, ছিনতাই, ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। দুষ্কৃতীদের তাড়া করায় পুলিশকে গুলিও করা হয়।
এর পরেই কাছারি ময়দান সংলগ্ন এলাকায় কিছু সিসিটিভি বসে। তবে তা ছিল জেলা প্রশাসনের উদ্যোগ। পুলিশের দাবি, তার পর থেকে ওই এলাকায় সেই ফুটেজের ভিত্তিতে ধরা পড়ে দুষ্কৃতীরা। এলাকায় অপরাধ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আসে। এর পরেই অপরাধ রুখতে বারাসতের বিভিন্ন মেয়েদের স্কুল ও কলেজের ছাত্রী ও শিক্ষক-শিক্ষিকাদের নিয়ে বৈঠক করে পুলিশ-প্রশাসন। বারাসতের বিভিন্ন মোড়ে সিসিটিভি বসানোর প্রস্তাব আসে সেই বৈঠকেও।
হাবরায় রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের বিধায়ক তহবিলের টাকায় বসে প্রায় ২০টির মতো সিসিটিভি। পুরসভার উদ্যোগে বনগাঁতেও কয়েকটি মোড়ে সিসিটিভি বসানো হয়। উত্তর ২৪ পরগনার পুলিশ সুপার তন্ময় রায়চৌধুরী বলেন, “যে ক’টি জায়গায় সিসিটিভি বসেছে, সেখানে অপরাধ দমনে বাস্তবিকই পুলিশের অনেক সুবিধা হয়েছে। এই জায়গাগুলিতেও সিসিটিভি বসানোর প্রস্তাব দিয়েছিলাম আমরা। সাংসদের উদ্যোগে তাঁর তহবিলের টাকায় কাজটা হচ্ছে।”
বারাসতের সাংসদ তহবিল থেকে গোটা এলাকায় সিসিটিভি বসাতে খরচ হচ্ছে ১ কোটি টাকার মতো। তার মধ্যে বারাসত-মধ্যমগ্রামে প্রায় ৩০ লক্ষ টাকায় বসছে ৩০টির মতো ক্যামেরা। কোন কোন এলাকায় ক্যামেরা বসবে, তা ঠিক করেছে উত্তর ২৪ পরগনা পুলিশ। ক্যামেরা বসানোর কাজ দেখভাল করছে বারাসত ও মধ্যমগ্রাম পুরসভা।
বারাসতের সাংসদ কাকলি ঘোষদস্তিদার বলেন, “সল্টলেকের বিভিন্ন জায়গায় সিসিটিভি বসিয়ে সুফল মিলেছে। বারাসত ও মধ্যমগ্রামে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি পুলিশও ক্যামেরা বসাবার দাবি করেছিল। সেইমতো ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।” কাকলীদেবী বলেন, “অপরাধ রুখতে এর পরের ধাপেই অশোকনগর এবং হাবরার আরও কিছু জায়গায় সিসিটিভি বসবে।”