ভাঙা পাঁচিলের সামনে জমায়েত। —নিজস্ব চিত্র।
লোকালয়ের মধ্যে ধর্মীয়স্থানের পাশে শিশুদের খেলার জায়গায় আবগারি দফতরের অফিস তৈরির কাজ বন্ধ করে দিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে বসিরহাট পুরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মুনসেফপাড়ায়। বাধ্য হয়ে ঠিকাদার এবং তার লোকজন ফিরে যায়। বিষয়টি নিয়ে বসিরহাটের মহকুমাশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগও জানিয়েছেন বাসিন্দারা। এ বিষয়ে বসিরহাটের মহকুমাশাসক শেখর সেন বলেন, “আবগারি দফতর তাদের নিজেদের জায়গায় বাড়ি তৈরির পরিকল্পনা করে কাজ শুরু করতে গিয়েছিল। বাসিন্দাদের আপত্তি নিয়ে উভয় পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বসিরহাটের মুনসেফপাড়ায় যেখানে আবগারি দফতর তৈরির পরিকল্পনা করা হয়েছে, তার এক পাশে বিচারকদের আবাসন। এক পাশে ক্লাব এবং কালী প্রতিমার থান। আশপাশে বাড়ি। সেখানে এক টুকরো ফাঁকা জমি এবং পাঁচিল দিয়ে ঘেরা আর এক টুকরো জমি আছে। এ দিন সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ ঠিকাদারের লোকজন যন্ত্র নিয়ে পাঁচিল ভাঙতে গেলে এলাকার মানুষ বাধা দেন। মহিলাদের উপস্থিতিই ছিল বেশি। তত ক্ষণে অবশ্য ঠিকাদারের লোকজন পাঁচিলের কিছুটা অংশ ভেঙে ফেলেছে। তবে বাধার মুখে পড়ে শেষমেশ কাজ বন্ধ করে ফিরে যেতে বাধ্য হয় ঠিকাদারের লোকজন। এরপর এলাকার মানুষ সই সংগ্রহ করে লিখিত ভাবে মহকুমাশাসকের কাছে জানান, পাড়ার মধ্যে আবগারি দফতরের অফিস করা যাবে না।
পাড়ার বাসিন্দা তথা বসিরহাট পুরসভার উপ পুরপ্রধান অমিত দত্ত এবং ক্লাব সভাপতি জয়ন্ত ভট্টাচার্য বলেন, “শতাধিক বছরের পুরনো কালী প্রতিমার থান এবং একশো বছরের কাছাকাছি এখানকার প্রভাতী সঙ্ঘ ক্লাব। নানা রকম পুজো হয়। মাঠে বাচ্চাদের নিয়ে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা হয়। চারিদিকে বসতবাড়ি। এই পরিবেশে এলাকার একমাত্র খেলার মাঠ ধ্বংস করে আবগারি দফতরের অফিস তৈরি হলে পরিবেশের ক্ষতি হবে।” শিবপ্রসাদ সেন, মাধুরী বন্দ্যোপাধ্যায়দের বক্তব্য, “একে ধর্মীয়স্থান, তার উপরে শিশুদের খেলার জায়গা। সকাল-সন্ধ্যা বয়স্করা হাঁটাচলা করেন। তাঁদেরকে বঞ্চিত করে ওই জমিতে কোনও ভাবেই আবগারি দফতর করতে দেওয়া হবে না। প্রযোজনে আমরা বৃহত্তর আন্দোলনে নামতে বাধ্য হব।”