হাতজোড় করে অনুরোধ করে গিয়েছিলেন সাংসদ। বলেছিলেন, উন্নয়নের কাজে কোনও রকম বাধা কাম্য নয়। এতে উপকৃত হবেন সব দলে মানুষ। সেই আহ্বানে কাজ দিয়েছে। শনিবার থেকে ফের শুরু হয়েছে থমকে থাকা রাস্তার কাজ।
সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনায় ৫ কোটি ২১ লক্ষ টাকায় বসিরহাটের শাঁখচুড়ো-নিমদাঁড়িয়া থেকে পিঁফার রামনগর পর্যন্ত সাড়ে ৮ কিলোমিটার রাস্তা তৈরির কাজ শুরু হয়। গত দেড় মাস আগে বসিরহাটের সাংসদ ইদ্রিশ আলি ও দীপেন্দু বিশ্বাসের উপস্থিতিতে শিলান্যাস ও কাজ শুরু হয়েছিল। সে সময়ে সাংসদ বলেছিলেন, “রাস্তা তৈরির কাজে যেন কোনও বাধা সৃষ্টি করা না হয়।” কিন্তু অভিযোগ, রাস্তার কাজ এগনোর সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় তোলাবাজদের উত্পাত। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এক দল দুষ্কৃতী ঠিকাদারের শ্রমিকদের উপরে হামলাও চালায়। প্রতিবাদ করলে শ্রমিকদের বেতনের প্রায় সাড়ে ৪ লক্ষ টাকা লুঠ করে পালায়। তিন শ্রমিক আহত হন। শ্রমিকদের মারধরের প্রতিবাদ করায় আটকড়িয়া গ্রামের দু’টি বাড়িতেও হামলা চালিয়ে ভাঙচুর-লুঠপাট করে দুষ্কৃতীরা। সেই থেকে রাস্তার কাজ বন্ধ ছিল।
খবর পেয়ে শুক্রবার রাতে আটকড়িয়া গ্রামে যান ইদ্রিশ, দীপেন্দু-সহ তৃণমূলের নেতারা। ছিলেন থানার আইসি গৌতম মিত্র। স্থানীয় হাটের মাঠে আলো জ্বেলে সর্বদল ভাবে শতাধিক গ্রামবাসী এবং বিশিষ্টজনের বসার জায়গা হয়। গ্রামবাসীদের পক্ষে কাসেম গাজি, বিশ্বজিত্ পালরা বলেন, “দীর্ঘ বছর উন্নয়নের কাজ থেকে বঞ্চিত এই এলাকা। তাই গ্রামের মধ্যে দিয়ে পাকা রাস্তা হবে শুনে খুব ভাল লেগেছিল। গরিব চাষি হলেও রাস্তার জন্য জমি দিয়েছিলাম। কিন্তু বহিরাগত কিছু মানুষ রাজনীতির নাম করে গ্রামে এসে এর জমি নিচ্ছে, ওর গাছ কাটছে। প্রতিবাদ করতে গেলে মারধর করছে।” স্থানীয় পঞ্চায়েতের তরফে আবদুল কাদের সর্দার বলেন, “রাস্তার স্বার্থে আমরা মাটি কাটতে দিয়েছি। অথচ দুষ্কৃতীরা আমাদের মধ্যে বিভেদ করে সুবিধা নেওয়া চেষ্টা করছে।” তাঁর দাবি, নিয়ম এবং পদ্ধতি মেনে কাজ হোক।
সব শুনে দীপেন্দু বলেন, “কোনও রাজনীতি নয়। উন্নয়ন বন্ধ করতে এলে পুলিশ তার ব্যবস্থা করবে।” ইদ্রিশ বলেন, “উন্নয়নের কাজে কোন আপস করা চলবে না। আমাদের মনে রাখতে হবে, রাস্তা ব্যবহার করেন সকলে। যে যা রাজনীতি করুন, গ্রামের রাস্তা হলে সকলেরই সুবিধা হবে। তাই রাস্তার কাজ বন্ধ হবে না। প্রয়োজনে বহিরাগতদের রুখবে পুলিশ।”
সাংসদ সকলের সামনে হাতজোড় করে অনুরোধ করে বলেন, “আপনারা উন্নয়নের কাজ বন্ধ করবেন না।” শনিবার থেকে বন্ধ থাকা রাস্তার কাজ শুরু হবে বলে তখনই জানিয়েছিলেন সাংসদ। সেই মতো শুরুও হয়েছে কাজ। সাংসদ আরও প্রতিশ্রুতি দেন, কাজ দ্রুত শেষ করতে করতে প্রতি পঞ্চায়েত থেকে দু’জনকে নিয়ে দ্রুত আলোচনা হবে। পিঁফা পঞ্চায়েত ভবন থেকে বেলতলা পর্যন্ত এক কিলোমিটার রাস্তা সংস্কারের কাজ সাংসদ কোটার টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।