প্রার্থী পাশে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি।—নিজস্ব চিত্র।
উপনির্বাচন কংগ্রেস নেতা-কর্মীদের কাছে সন্মান ও মর্যাদার লড়াই বলে মন্তব্য করলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। বসিরহাট থেকেই নতুন করে রাজ্যের কংগ্রেসের উত্থান হবে বলে দাবি করেছেন অধীরবাবু।
বসিরহাট দক্ষিণ কেন্দ্রে উপনির্বাচনের প্রচারে বুধবার এলাকায় এসেছিলেন প্রদেশ সভাপতি। শাসক দলকে হুঁশিয়ার করে সেখানে তিনি বলেন, “ওরা যদি মনে করে দুর্বৃত্তদের দিয়ে গুণ্ডামি-মস্তানি করে ভোটে জেতার চেষ্টা করবে, তা হলে কিন্তু আমরা বসে থাকব না। রংবাজি-মস্তানি আটকাতে সব রকম ব্যবস্থা নেব। এখানকার প্রতিটি এলাকায় আমাদের একজন করে বিধায়ক থাকবেন।”
দলের প্রার্থী অসিত মজুমদারের সমর্থনে এ দিন অধীর সভা করেছেন রবীন্দ্রভবনে। প্রথমে ঠিক ছিল, সভা হবে একটি অনুষ্ঠানবাড়িতে। কিন্তু ভিড় আন্দাজ করে তড়িঘড়ি রবীন্দ্রভবনের ব্যবস্থা হয়।
অধীরবাবু সেখানে বলেন, “এই উপনির্বাচনে কংগ্রেস ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ পেয়েছে। মনে রাখতে হবে ক্ষমতায় আসার আগে দেওয়া কোনও প্রতিশ্রুতিই রাখতে পারেনি তৃণমূল। কেবল নৈরাজ্য সৃষ্টি করে এই বাংলাকে পিছিয়ে দিয়েছে।” রাজ্য সরকারকে অধীরবাবুর কটাক্ষ, “সামান্য আলুর দাম যারা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না, তারা কী ভাবে সরকার চালাবে?” মুখ্যমন্ত্রীর সাম্প্রতিক সিঙ্গাপুর সফরের প্রসঙ্গ টেনে তিনি তৃণমূলের সমালোচনা করেন। এই প্রসঙ্গেই সিঙ্গুর নিয়ে পূর্বতন বাম সরকারের সমালোচনাও করেন তিনি।
সারদা কেলেঙ্কারি নিয়েও রাজ্যের শাসক দলকে সমালোচনা করতে ছাড়েননি প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। তিনি বলেন, “সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় সারদার মতো ৭২টি অর্থলগ্নি সংস্থা মানুষকে প্রতারণা করে চলেছে।” কংগ্রেসের আন্দোলনের জেরেই সারদা নিয়ে সিবিআই তদন্ত শুরু হয়েছে বলে তাঁর দাবি। অধীরবাবুর কথায়, “বাংলা কেবলই পিছিয়ে চলেছে। এখানে শিল্প নয়, সিন্ডিকেট ব্যবসা হচ্ছে। সরকারি প্রশ্রয়ে দুর্বৃত্ত রাজ শুরু হয়েছে।”
কেন্দ্রে বিজেপি সরকারকেও ছেড়ে কথা বলেননি বহরমপুরের সাংসদ অধীর। তাঁর বক্তব্য, “মাত্র তিন মাসের মধ্যে মানুষ ওদের স্বরূপ চিনেছে। সে কারণেই দেশের কয়েকটি উপনির্বাচনে ভরাডুবি হয়েছে।” সিপিএম অস্তিত্বসঙ্কটে ভুগছে বলে কটাক্ষ করেন তিনি।
বসিরহাট দক্ষিণ কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী ফুটবলার দীপেন্দুকে কটাক্ষ করে অধীরবাবুর বক্তব্য, “খেলোয়াড়ের জায়গা মাঠে, রাজনীতিতে নয়। মনে রাখতে হবে আমরাও কোনও ফুটবলার নিয়ে এখানে খেলাতে পারি। মনে রাখতে হবে, ভাড়াটে সৈনিক (হায়ার করা ফোর্স) দিয়ে লড়াই করা যায় না।” দলে কোনও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব না থাকায় ও নায়ক-নায়িকার চমকের কোটা শেষ হয়ে যাওয়ায় তৃণমূল এখন ‘ফুটবলার-গায়ক ধরেছে’ বলে কটাক্ষ করেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি।
তাঁর মতে, যে কেউ ভোটে যোগদান করতে পারে। কিন্তু তার রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট থাকা জরুরি। সকলে স্থানীয় মানুষকে বিধায়ক হিসাবে দেখতে চান বলেই অসিতবাবুকে ভোট দেবেন বলে আশা প্রকাশ করেন অধীরবাবু।