রামকৃষ্ণপুর থেকে করঞ্জলি মোড় পর্যন্ত বেহাল রাস্তা।—নিজস্ব চিত্র।
সারা রাস্তা জুড়ে খানা-খন্দ ভর্তি। ১১৭ নম্বর জাতীয় সড়কের রামকৃষ্ণপুর মোড় থেকে করঞ্জলি মোড় পর্যন্ত যাতায়াত করতে মাঝেমধ্যেই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন যাত্রীরা। প্রায় বছর খানেক ধরেই সারা রাস্তায় বড় বড় খানা-খন্দ তৈরী হয়েছে। অথচ ওই রাস্তা দিয়ে সারা দিনে কয়েক হাজার গাড়ি চলাচল করলেও প্রশাসন সংস্কারের কোনও উদ্যোগ নিচ্ছে না বলে অভিযোগ।
ওই ১১৭ নম্বর জাতীয় সড়কটি কলকাতায় বেহালা থেকে বকখালি পযর্ন্ত প্রায় ১৪০ কিলোমিটার দীর্ঘ। ওই রাস্তা দিয়ে ধর্মতলা থেকে আমতলা, ডায়মন্ড হারবার, কুলপি, কাকদ্বীপ, নামখানা, পাথরপ্রতিমা, রামগঙ্গা পযর্ন্ত কয়েকশ সরকারি ও বেসরকারি বাস চলাচল করে। এছাড়াও রামনগরের নুরপুর ও রায়চক থেকে কাকদ্বীপ, পাথরপ্রতিমা পযর্ন্ত শতাধিক বেসরকারি মিনি ও লাক্সারি বাস দৈনিক যাতায়াত করে। কাকদ্বীপ মহকুমার সাগর, নামখানা, কাকদ্বীপ, ও পাথরপ্রতিমাএই চারটি ব্লকে স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল, ছাড়াও রয়েছে বিভিন্ন বহু সরকারি প্রতিষ্ঠান। একই ভাবে ডায়মন্ড হারবার মহকুমার ফলতা, মগরাহাট-১ ও ২ মন্দিরবাজার, কুলপি, মথুরাপুর-১,২ ও ডায়মন্ডহারবার-১ ও ২ এই নটি ব্লকে রয়েছে বিভিন্ন সরকারি অফিস কাছারি। ফলে নিত্য প্রয়োজনে ব্যবহার করা হয় ওই রাস্তা। এছাড়াও বকখালি পযর্টন কেন্দ্রে বা সাগরের কপিলমুনি মন্দির দশর্নের জন্য প্রতিদিন বহু মানুষ দূর দূরান্ত থেকে আসেন। ডায়মন্ড হারবার থেকে কাকদ্বীপে যাতায়াতের রাস্তার মধ্যে পড়ে কুলপির রামকৃষ্ণপুর মোড় থেকে করঞ্জলি পযর্ন্ত প্রায় ৮ কিলোমিটার রাস্তাটি।
ওই রাস্তায় নিত্যযাত্রীদের অভিযোগ, কলকাতা বা ডায়মন্ডহারবার থেকে রামকৃষ্ণপুর মোড় পযর্ন্ত বাসে স্বাভাবিক ভাবে যাতায়াত করার পর থেকেই ঝাঁকুনি শুরু হয়। ওই রাস্তাটুকু পার হতে নাভিশ্বাস হয়ে ওঠে সাধারণ যাত্রীদের। কুলপি এলাকার বাসিন্দা রামপ্রসাদ দলুই, জয়ন্ত কয়ালেরা জানান, এই বেহাল রাস্তা দিয়ে ছোট-বড় সব রকমের গাড়ি যাতায়াত করে। বিশেষত ছোট গাড়িগুলি এত ভিড়ে ঠাসা থাকে যে যাতায়াতের সময়ে ঝুঁকি হয়ে যায়। যে কোনও মুহূর্তে দুঘটনার সম্ভাবনা থাকে।
কুলপির বিডিও সেবানন্দ পন্ডা বলেন, “ওই রাস্তার সংস্কারের জন্য একাধিকবার জাতীয় সড়কের দফতরে জানানো হয়েছে। কিন্তু কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।” রাস্তা বেহাল, সে কথা স্বীকার করে নিয়েছেন সুন্দরবন উন্নয়ন দফতরের প্রতিমন্ত্রী মন্টুরাম পাখিরা। তিনি বলেন, “রাস্তার ওই অংশটি জাতীয় সড়কের মধ্যে পড়ায় কেন্দ্রের আর্থিক অনুমোদন ছাড়া সংস্কার করা যাচ্ছে না। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দফতরে জানানো হয়েছে।”
এবিষয়ে জাতীয় সড়ক ডিভিশন নম্বর ১ এর নির্বাহী বাস্তুকার চন্দন সেন বলেন, “ওই রাস্তার সংস্কার এবং চওড়া করার জন্য ১৩ কোটি টাকা অনুমোদন হয়েছে। দরপত্রও ডাকা হয়ে গিয়েছে। তবে বর্ষার পরেই কাজ শুরু হবে। বতর্মানে অস্থায়ী ভাবে সংস্কারের জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’’