আহত নোয়াপাড়া থানার আইসি স্বপন সাহা।—নিজস্ব চিত্র।
এক জুয়াড়ি ও তার দলবলকে ধরতে গিয়ে মার খেল পুলিশ। মঙ্গলবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে জগদ্দল থানার কাঁকিনাড়ায় ১৯ নম্বর গলিতে।
পুলিশ জানিয়েছে, দীপক বর্মা নামে ওই জুয়াড়ি ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের বিভিন্ন জায়গায় লক্ষ লক্ষ টাকার জুয়ার বোর্ড চালায় বলে খবর ছিল। এ দিন বাড়ির ছাদেই অন্য জুয়াড়িদের নিয়ে সে আসর বসিয়েছে খবর পেয়ে পুলিশ রাত সাড়ে দশটা নাগাদ বাড়ি ঘিরে ফেলে। দরজা খুলতে দেরি করায় পুলিশ অন্য একটি দরজা দিয়ে ঢোকার চেষ্টা করলে দীপকের বাবা হীরালালবাবু, মা মায়াদেবী, ঠাকুমা যশোদাদেবী এবং দীপকের দুই ভাই রবি ও কিরণ বাধা দেয় বলে অভিযোগ।
ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের গোয়েন্দা প্রধান অজয় ঠাকুর বলেন, “দীপকের বাড়িতে গেলে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ছোড়া হয়। ইটের ঘায়ে আইসি-সহ চার পুলিশ কর্মী জখম হয়েছেন। পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। তারপর দীপকের পরিবারের সদস্যরা অসুস্থ হওয়ার ভান করেছেন। সেই সুযোগে দীপক ও তার দলবল পালিয়েছে।” গোয়েন্দা প্রধানের দাবি, “পুলিশ মার খেলেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে শেষ পর্যন্ত কড়া পদক্ষেপ করেনি। কিন্তু পুলিশের কাজে বাধা দেওয়া, হামলা ও সরকারি সম্পত্তি নষ্টের অভিযোগে মামলা দায়ের হয়েছে।” দীপকের খোঁজে ইতিমধ্যেই শিল্পাঞ্চলের অন্য থানাগুলি ছাড়াও হাওড়া, হুগলি ও নদিয়ার থানাগুলিকে সতর্ক করা হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, গত গণেশপুজোর আগে টিটাগড় থেকে অস্ত্র-সহ এক যুবককে পুলিশ গ্রেফতার করে। জেরায় সে’ই দীপকের নাম ও এক একটি জুয়ার বোর্ড থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা আয়ের হদিশ দেয়। ওই যুবকদের একটি দল বোমা ও আগ্নেয়াস্ত্র-সহ দীপকের জুয়ার বোর্ড পাহারার দায়িত্বে থাকত বলে পুলিশ জানিয়েছে। জগদ্দলে গণেশ পুজোর চলটা বেশি। এ বারও গণেশ পুজোর সময় বিভিন্ন জায়গা থেকে জুয়ার বোর্ডের খবর পুলিশের কাছে এসেছিল। কিন্তু পুজোর সময় ভিড় সামলাতে ব্যস্ত থাকায় জুয়ার ঠেকে হানা দেওয়ার ক্ষেত্রে খুব একটা তৎপর ছিল না জগদ্দলের পুলিশ। ইতিমধ্যে জগদ্দল থানার আইসি সাসপেন্ড হওয়ায় পাশের নোয়াপাড়া থানার আইসি জগদ্দলের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন। তিনিই দীপকের বাড়িতে মঙ্গলবার রাতে দলবল নিয়ে অভিযান চালান।