রাজু মণ্ডল
যাওয়ার সময়ে বন্ধুদের বলে গিয়েছিলেন, “ট্রেনে আসতে বড্ড কষ্ট হয়। এ বার বাড়ি আসব প্লেনে চেপে।”
কর্মস্থল ত্রিপুরা থেকে ফেরার সময়ে সে কথা রেখেছেন দেগঙ্গার কলসুর গ্রামের ব্রাহ্মণপাড়ায় বাসিন্দা রাজু। তবে বিমানে এসেছে তাঁর কফিন-বন্দি দেহ।” বিএসএফের ১৬৮ নম্বর ব্যাটালিয়নের কনস্টেবল রাজু মণ্ডলের (৩০) সহকর্মীরা জানিয়েছেন, শনিবার সকালে পাহাড়ি পথ ধরে যাওয়ার সময়ে ত্রিপুরার বেলোনিয়া থানার গালাগাছিয়ার হরিশামুখে পথ দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন রাজু। আহত হন আরও কয়েক জন জওয়ান। রবিবার রাজুর দেহ পৌঁছয় দেগঙ্গার বাড়িতে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, রাজুর বাবা বসুদেব মণ্ডল মুদি ব্যবসায়ী। পরিবারের একমাত্র ছেলে রাজু ২০০৯ সালে চাকরি পেয়েছিলেন। নতুন বাড়ির গৃহপ্রবেশের জন্য জানুয়ারি মাসে বাড়িতে আসেন। ৩ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠান মিটিয়ে ৯ ফেব্রুয়ারি কর্মস্থলে ফিরে যান । যাওয়ার আগে বাবা-মাকে বলেছিলেন, “তোমরা এ বার মেয়ে দেখো। বিয়ে করব।” ছেলের জন্য পাত্রী খোঁজার আর সুযোগ পেলেন না বাবা-মা। রবিবার দেহ ফেরার পরে মা গীতারানিদেবী-সহ পরিবারের লোকজন সন্দেহ প্রকাশ করেন। জানান, এটি আদৌ রাজুর দেহ নয়। পরে অবশ্য হাত-পায়ের নখে থাকা কিছু চিহ্ন দেখে দেহ সনাক্ত করেন বসুদেববাবু। গ্রামের বাড়িতেই সহকর্মীরা গানস্যালুট দেন রাজুকে। রাতের দিকে দেহ সত্কারের জন্য নিয়ে যাওয়া হয় কলকাতার নিমতলা শ্মশানে। সেখানে মৃত্যুর শংসাপত্র নিয়ে কিছু জটিলতা দেখা দেয় বলে পারিবারিক সূত্রের খবর। শ্মশান কর্তৃপক্ষ রাজুর মৃত্যুর ফ্যাক্স-বার্তা অ্যাটেস্টেড করে আনতে বলেন।