দাম মেটালেন মন্ত্রীই, অভিভূত দোকানি

মন্ত্রীদের দোকানে বসে চা খেতে দেখলেও আগে কখনও কোনও মন্ত্রীকে হাতে করে চায়ের দাম মেটাতে দেখেননি মনোজবাবু। টাকি ধুবার মোড়ে বট-অশ্বত্থ গাছের নীচে দীর্ঘ ৬০ বছরের চায়ের দোকান মনোজ বন্দ্যোপাধ্যায়ের। বাপ-ঠাকুর্দার পরে গত ৩০-৩৫ বছর ধরে দোকান চালাচ্ছেন তিনি। সোমবার দলীয় প্রার্থী দীপেন্দু বিশ্বাসের সমর্থনে সভায় বক্তব্য রাখতে এসে রাজ্যের সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর দোকানে বসেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বসিরহাট শেষ আপডেট: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০১:২৬
Share:

খোসমেজাজে রাজীব। সোমবার তোলা নির্মল বসুর ছবি।

মন্ত্রীদের দোকানে বসে চা খেতে দেখলেও আগে কখনও কোনও মন্ত্রীকে হাতে করে চায়ের দাম মেটাতে দেখেননি মনোজবাবু।

Advertisement

টাকি ধুবার মোড়ে বট-অশ্বত্থ গাছের নীচে দীর্ঘ ৬০ বছরের চায়ের দোকান মনোজ বন্দ্যোপাধ্যায়ের। বাপ-ঠাকুর্দার পরে গত ৩০-৩৫ বছর ধরে দোকান চালাচ্ছেন তিনি। সোমবার দলীয় প্রার্থী দীপেন্দু বিশ্বাসের সমর্থনে সভায় বক্তব্য রাখতে এসে রাজ্যের সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর দোকানে বসেন। চা-ও খান। খাওয়ার শেষে ৪ টাকা চায়ের দাম মেটান। মন্ত্রীর এমন ব্যবহারে অভিভূত মনোজবাবু বলেন, আগে সিপিএম-কংগ্রেসের দু’জন মন্ত্রী এখানে সভা করতে এসে আমার দোকানে চা খেয়েছিলেন। তবে এমন ভাবে কেউ নিজের হাতে দাম মেটাননি এর আগে। রাজীববাবুর ব্যবহারে আপ্লুত দোকানির কথায়, “মন্ত্রীর দেওয়া চায়ের দামটা স্মৃতি হিসাবে গুছিয়ে রাখব।”

এ দিন সন্ধ্যায় টাকি ধুবার মোড়ে মনোজবাবুর চা দোকানের সামনেই ছিল তৃণমূলের প্রচার সভা। রাজীববাবু সেখানে বলেন, “উন্নয়নমুখী টাকির মানুষের জন্য কাজ না করায় এখান থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছিলেন সিপিএমের গৌতম দেব। দমদমে গিয়ে গৌতমবাবু আমাদের ব্রাত্য বসুর কাছে পরাজিত হয়েছেন। টাকির মানুষের কাছে কৃতজ্ঞ, যে তাঁরা এলাকার উন্নয়ন চান।” রাজ্যে উন্নয়নের ফিরিস্তি দিয়ে রাজীববাবু বলেন, “সংবাদমাধ্যমের একাংশ এবং কিছু রাজনীতিবিদ মিলিত ভাবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছেন।” সারদা প্রসঙ্গ টেনে রাজীববাবু আরও বলেন, “মমতা যখন চাইছিলেন, দোষীদের শাস্তি দিয়ে সারদার টাকা গরিব মানুষকে ফিরিয়ে দিতে, সে সময়ে কেউ কেউ এটা নিয়ে নোংরা রাজনীতি শুরু করেছে। যে সব এজেন্ট গরিব মানুষকে ভুল বুঝিয়ে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে, তাদের না ধরে কেবলমাত্র রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে সিবিআই তদন্ত শুরু করেছে।”

Advertisement

একই মঞ্চে সভায় রাজ্যের পর্যটনমন্ত্রী ব্রাত্য বসু এ দিন বলেন, “বিধবা বিবাহের প্রচলন, বাল্য বিবাহের অবসান ঘটাতে গিয়ে বিদ্যাসাগরকে কত অপমান সহ্য করতে হয়েছে। রামমোহন রায়কে কত গালাগাল খেতে হয়েছে। শিকাগো সম্পর্কে বিবেকানন্দের কথায় অবিশ্বাস করা হয়েছে। এমনকী, নোবেল পুরস্কার পাওয়ার পরে এই বাংলার একজন নোবেল কমিটিকে চিঠি দিয়ে দাবি করেছিলেন, অমর্ত্য সেন চোর।” তাঁর মতে, “আসলে যে-ই বাংলার উন্নয়নের কাজ করতে চান, তাঁকেই গালাগাল শুনতে হয়। মমতাকেও গালাগাল শুনতে হচ্ছে।” সাংসদ অর্পিতা ঘোষ বলেন, “সারদার একটা চ্যানেলে সাত মাস কাজ করেছিলাম। আমার এফআইআরেই কিন্তু সুদীপ্ত সেন ধরা পড়েছে। আমাদের যদি খারাপ উদ্দেশ্য থাকত, তা হলে কি সুদীপ্ত সেনের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ করতাম?”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন