দিন সাতেকের ফোনালাপের পরে ‘বান্ধবী’র সঙ্গে দেখা করতে এসেছিল বছর তিরিশের যুবকটি। ইতিউতি ঘোরাঘুরির পরে বান্ধবীর দেখা মিলল বটে! কিন্তু গোলাপের বদলে জুটল কাঁটা। রেস্তোরার বদলে স্থান হল শ্রীঘরে। ঘটনাস্থল সোমবার সন্ধ্যার বসিরহাটের মাদুরহাটা। ধৃতের পোশাকি নাম মনিরুল ইসলাম ওরফে বাবু। পেশায় দর্জি। বছর ছাব্বিশের ওই যুবকের বাড়ি বাদুড়িয়ার জশাইকাটিতে। পুলিশ বলছে, সেলাই-ফোরাইয়ের মাঝে ফাঁক পেলেই একটিই কাজ তার। মহিলাদের ফোন করে ভাব জমানো। তার পরে কুপ্রস্তাব। তার ফোনের বহরে জীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল বহু মহিলার।
বেশ কিছু দিন ধরে বসিরহাট আদালতের এক মহিলা আইনজীবীর মোবাইলে ফোন আসতে থাকে মনিরুলের। প্রথমটায় মক্কেল হিসেবে পরিচয় দিয়ে এটা-সেটা জানতে চায়। তার পরে অবশ্য খোলস ছেড়ে কুপ্রস্তাব দিয়ে বসে। সহকর্মীদের পরামর্শে পুলিশের দ্বারস্থ হন ওই আইনজীবী। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, ভুয়ো পরিচয়পত্র দিয়ে সিমকার্ড কিনে ফোন করত ওই যুবক।
ফাঁদ পাতে পুলিশ। এক মহিলা পুলিশকর্মী যুবকের মোবাইলে ফোন করে বন্ধুত্ব করেন। হোয়াটস অ্যাপে ছবিও পাঠান। আর লোভ সামলাতে পারেনি মনিরুল। দেখা করার প্রস্তাব দেয়। এরই অপেক্ষায় ছিল পুলিশ। ঠিক হয়, মাদুরহাটায় দেখা হবে। সেই মতো এ দিন সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ নতুন লুঙ্গি আর টি-শার্ট পরে সেখানে চলে আসে মনিরুল। আগে থেকেই বাহিনী নিয়ে সেখানে সাদা পোশাকে ফাঁদ পেতেছিলেন বসিরহাট থানার আইসি গৌতম মিত্র। ধরা পড়ে মনিরুল। পুলিশ জানতে পারে, নানা উপায়ে মহিলাদের ফোন নম্বর জোগাড় করত ওই যুবক। তারপরে উত্যক্ত করত তাঁদের। মাস চারেক আগে বিয়ে হয়েছে মনিরুলের। তারপরেও স্বভাব বদলায়নি। তদন্তকারী এক অফিসারের কথায়, “ধৃত যুবকের মোবাইলে প্রায় সব নম্বরই মহিলাদের। ঘুরিয়ে ফিরিয়ে প্রতিদিন জনা কুড়ি মহিলাকে ফোনে বিরক্ত করত সে।”