অনুমোদনহীন ছোট গাড়ির দাপটে জেরবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাস মালিকেরা। বুধবার এক দিনের প্রতীকী বাস ধর্মঘটও পালন জেলার ডায়মন্ড হারবার এবং কাকদ্বীপ মহকুমার মালিকেরা। মন্ত্রী মন্টুরাম পাখিরার আশ্বাসে ধর্মঘট ওঠে।
কেবলমাত্র শাসকদলের মদতে ভর করা এই রুট পারমিট নেই, চালকের লাইসেন্স নেই এ ধরনের ছোট গাড়ির চালকেরাই এখন দক্ষিণ শহরতলির পর থেকে প্রায় কাকদ্বীপ পর্যন্ত রাজত্ব করছে বলে অভিযোগ বাস মালিকদের। যার পিছনে শাসক দলের মদত আছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। জয়েন্ট কাউন্সিল অফ বাস সিন্ডিকেটের নেতা অশোক গায়েন বলেন, “ইচ্ছেমতো পার্কিং করে এই গাড়িগুলি। যেখানে সেখানে দাঁড়িয়ে প্যাসেঞ্জার তোলে। আরও নানা রকম বেআইনি কায়দায় ব্যবসা করে এই সব ডিলাক্স অটো, ট্রেকার, বা অন্য ছোটগাড়িগুলি।” তাঁর অভিযোগ, বেহালার পর থেকে শুরু করে ডায়মন্ড হারবার রোড বরাবর নামখানা পর্যন্ত প্রতিটি জায়গায় এদের দাপটে জেরবার বাস মালিকেরা।
তবে বিনা নোটিসে এই ধর্মঘট ডাকা হয়েছে বলে দাবি করেছেন দুই মহকুমার প্রশাসনিক কর্তারা। যদিও বাস মালিকদের ওই সংগঠনের তরফে দাবি করা হয়েছে, বার বার জেলাশাসকের কাছে এ ব্যাপারে অভিযোগ জানানো হয়েছিল। বাসে প্রচারও হয়েছিল। কিন্তু এই দুই মহকুমায় এদের নিয়ে কোনও ব্যবস্থাই নেওয়া হয়নি। এ রকম বেআইনি গাড়ির সংখ্যা কত তার কোনও হিসেবও প্রশাসনের কাছে নেই। বাস মালিকদের দাবি, তাঁরা ট্যাক্স দিয়ে ব্যবসা করছেন। কিন্চু ছোট গাড়িগুলি এ ভাবে কর ফাঁকি দিয়ে বেআইনি ব্যবসা করে যাত্রীদের ঝুঁকিই বাড়াচ্ছে। কাকদ্বীপের মহকুমাশাসক অমিত নাথ বলেন, “বেআইনি গাড়ি চলাচলের অভিযোগ কোনও জায়গা থেকে আসেনি। ধর্মঘটের কোনও নোটিসও পাইনি।”
ডায়মন্ড হারবার মহকুমাশাসকের দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, দু’মাস আগে এ সমস্ত গাড়িগুলির বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত হয়েছিল। কিন্তু রাজনৈতিক প্রভাবে সে সব বন্ধ হয়ে যায়। মন্টুরামবাবু অবশ্য বলেন, “রাজনীতি কিছু নয়। কিছু বেকার ছেলে কাজ করে খাচ্ছে। তবে আমরা বাস মালিকদের আশ্বাস দিয়েছি, শীঘ্রই এ ব্যাপারে বসে একটি বৈঠকে ঠিক করতে হবে, জাতীয় সড়কের উপরে নয়, এই সব গাড়ি চলবে মূল সড়কের সঙ্গে যোগাযোগকারী রাস্তাগুলিতে।”
সপ্তাহের মাঝখানে কাজের দিন এ রকম ভাবে হঠাত্ বাস বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিপদে পড়েছিলেন অনেক অফিসযাত্রী, স্কুলের শিক্ষক, ছাত্রছাত্রীরা। জয়েন্ট কাউন্সিল অফ বাস সিন্ডিকেটের ডাকা এই কর্মসূচির ফলে ডায়মন্ড হারবার এবং কাকদ্বীপ মহকুমার প্রায় সব বেসরকারি বাস রাস্তা থেকে উধাও হয়ে যায় এ দিন।