বেসরকারি সংস্থায় লক্ষাধিক টাকার ডাকাতি মগরাহাটে

টহলরত দুই সিভিক ভলান্টিয়ার্সকে ধরে নিয়ে গিয়ে মগরাহাটের আমড়াতলা এলাকার একটি বেসরকারি চিকিত্‌সা-বর্জ্য পরিশোধন প্রকল্পে ঢুকে কয়েক লক্ষ টাকার জিনিসপত্র লুঠ করল সশস্ত্র দুষ্কৃতীরা। সোমবার গভীর রাতের ঘটনা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ডায়মন্ড হারবার শেষ আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০১৪ ০১:২১
Share:

লন্ডভন্ড আলমারী।—নিজস্ব চিত্র।

টহলরত দুই সিভিক ভলান্টিয়ার্সকে ধরে নিয়ে গিয়ে মগরাহাটের আমড়াতলা এলাকার একটি বেসরকারি চিকিত্‌সা-বর্জ্য পরিশোধন প্রকল্পে ঢুকে কয়েক লক্ষ টাকার জিনিসপত্র লুঠ করল সশস্ত্র দুষ্কৃতীরা। সোমবার গভীর রাতের ঘটনা। ওই প্রকল্পের কর্মী এবং নিরাপত্তারক্ষীদের দুষ্কৃতীরা মারধর করে এবং বেঁধে রাখে বলে অভিযোগ।

Advertisement

ওই এলাকায় রাতে পুলিশ বা সিভিক ভলান্টিয়ার্সদের টহলদারি থাকলেও চুরি-ছিনতাই, লুঠপাট থেমে নেই। নতুন করে এই ডাকাতির ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে। ওই প্রকল্পের ম্যানেজিং ডিরেক্টর মনোহরকান্ত বর্মন বলেন, “আমরা দূষণ নিয়ন্ত্রণ রাখার কাজ করি। রাজ্যের অন্য জেলাতেও পরিষেবা দিই। শিল্প কারখানায় এ রকম আক্রমণ হলে আমরা কাজ করব কীভাবে? ভীষণ অনিশ্চয়তায় ভুগছি।”

মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত ওই ডাকাতির ঘটনায় পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। তবে, তদন্তকারীদের অনুমান, প্রকল্পের কেউ দুষ্কৃতীদের তথ্য দিয়ে সাহায্য করেছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পশ্চিম) আভারু রবীন্দ্রনাথ বলেন, “আমরা অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তও শুরু হয়েছে।”

Advertisement

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ ওই প্রকল্পের সামনে ধামুয়া-আমতলা রোডে টহল দিচ্ছিলেন অভিষেক ভৌমিক এবং জয়দেব মণ্ডল নামে দুই সিভিক ভলান্টিয়ার্স। প্রকল্পের দেওয়াল ঘেঁষে দু’জনকে গাঁড়িয়ে থাকতে দেখে তাঁরা সজাগ হন। থানায় ফোন করতে গেলে ওই দুই দুষ্কৃতী তাঁদের ধরে ফেলে। তরোয়াল এবং রিভলভার ঠেকিয়ে তাঁদের কাছ থেকে পরিচয়পত্র বের করে নেয়। মারধরও করে বলে অভিযোগ। এর পরে দুই সিভিক ভলান্টিয়ার্সকে সঙ্গে নিয়েই ছ’জন দুষ্কৃতী গেট টপকে প্রকল্পে ঢোকে। স্টাফ কোয়ার্টারে তখন তিন জন কর্মী ছিলেন। তারা কিছু বুঝে ওঠার আগেই দুষ্কৃতীরা তরোয়াল এবং ভোজালি নিয়ে ঢুকে পড়ে। এক জন ভবনের ছাদে উঠে সাইরেনের তার কেটে দেয়। ভেতরে তখন প্লান্টের পাঁচজন কর্মী ছিলেন। তাদের তরোয়াল দেখিয়ে দুই সিভিক ভলান্টিয়ার্সদের নিয়ে ঢুকে পড়ে দুষ্কৃতীরা। হাত বেঁধে প্লান্টের পাঁচজন ও দুই সিভিক ভলান্টিয়ার্সকে স্টাফরুমের একটি ঘরে আটকে রাখে। পাহাড়ায় ছিল ২২ থেকে ২৫ বছরের দুই তরোয়ালধারী দুষ্কৃতী। এর পর স্টাফ রুমের চারটি ঘরে তাণ্ডব চালায় ডাকাতরা। আলমারি ভেঙে দামি পার্টস থেকে শুরু করে সিসিটিভি পর্যন্ত নিয়ে নেয় তারা। প্লান্ট থেকেই রেঞ্জ জোগাড় করে দামি পার্টস খুলে নেয়।

অভিষেকবাবু বলেন, “মারধর করার পর ডাকাতি করতে হবে বলে আমাদের টানতে টানতে নিয়ে যায় ওই সংস্থায়।” প্লান্টের কর্মী সৌরভ হালদার বলেন, ‘‘ভাবতেও পারিনি কারখানায় ডাকাত পড়বে। বুঝতে পারলাম যখন, কোনওরকমে মোবাইলগুলি লুকনোর চেষ্টা করছিলাম। মুখ ঢাকা অবস্থায় এসে ওরা কোনও কথাবার্তা ছাড়াই মারধর শুরু করে আমাদের।” এর পর একটি মিনিডোর গোছের গাড়ি ঢোকানো হয় গেট থেকে প্রায় ১২০ ফুট পিছনে অটোক্লেভ মেশিনের কাছে। তাতে মালপত্র তুলে ভোর সাড়ে তিনটে নাগাদ চম্পট দেয় ডাকাতদের দলটি। ছাড়া পেয়ে প্লান্টের কর্মীরা থানায় খবর দেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন