বসিরহাটে বৃদ্ধা খুনের পিছনে প্রমোটার-চক্র

প্রৌঢ়া খুনের অভিযোগে অবসরপ্রাপ্ত এক শিক্ষক-সহ সাত জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পুলিশের দাবি, জেরায় ধৃতেরা স্বীকার করেছে, মহিলার বসত বাড়ির এবং লাগোয়া প্রায় বিঘা খানেক জমি হাতিয়ে নিতে ওই বাড়ির কেয়ারটেকারকেই ‘বরাত’ দিয়েছিল তারা। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, লতিকা দাস নামে ওই মহিলাকে কার্যত জোর করেই তাঁর জমি সংক্রান্ত কাগজে সই করাতে চেয়েছিল বাড়ির কেয়ারটেকার স্মরজিত্‌ দাস। বাধা দেওয়ায় তাঁকে খুন করা হয়। এই খুনের পিছনে জমি-ব্যবসায়ীদের হাত রয়েছে বলেও পুলিশের অনুমান।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বসিরহাট শেষ আপডেট: ২৮ জানুয়ারি ২০১৫ ০১:৫৯
Share:

প্রৌঢ়া খুনের অভিযোগে অবসরপ্রাপ্ত এক শিক্ষক-সহ সাত জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পুলিশের দাবি, জেরায় ধৃতেরা স্বীকার করেছে, মহিলার বসত বাড়ির এবং লাগোয়া প্রায় বিঘা খানেক জমি হাতিয়ে নিতে ওই বাড়ির কেয়ারটেকারকেই ‘বরাত’ দিয়েছিল তারা। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, লতিকা দাস নামে ওই মহিলাকে কার্যত জোর করেই তাঁর জমি সংক্রান্ত কাগজে সই করাতে চেয়েছিল বাড়ির কেয়ারটেকার স্মরজিত্‌ দাস। বাধা দেওয়ায় তাঁকে খুন করা হয়। এই খুনের পিছনে জমি-ব্যবসায়ীদের হাত রয়েছে বলেও পুলিশের অনুমান। বসিরহাটের এসডিপিও অভিজিত্‌ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ওই বৃদ্ধা খুনের ঘটনায় ইতিমধ্যে সাত জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের মধ্যে রয়েছেন শহ্কর বিশ্বাস নামে এক জন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকও রয়েছেন।” ধৃতদের বসিরহাট এসিজেএম আদালতে তোলা হলে বিচারক তাদের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত পুলিশ হাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।

Advertisement

পুলিশ জানায়, শুক্রবার দুপুরে বসিরহাটের দালালপাড়া এলাকায় জোড়া পুকুরের ধারে অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকা লতিকা দে’র দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে তাঁকে। জেরার সময়ে কথাবার্তায় অসংলগ্নতা ধরা পড়ায় ওই বাড়ির কেয়ারটেকার স্মরজিত্‌কে সে দিনই গ্রেফতার করে পুলিশ। ইটিন্ডার স্কুলে শিক্ষকতা করতেন লতিকাদেবী। অবসরের পরে শরীর বিশেষ ভাল ছিল না তাঁর। বছর কয়েক আগে স্বামী মারা যাওয়ার পরে তাঁকে দেখভালের জন্য কেয়ারটেকার হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছিল স্মরজিত্‌কে।

নিঃসন্তান লতিকা দাসের ওই সুবিশাল বাড়িটার উপরে বেশ কিছু দিন ধরেই নজর পড়েছিল স্থানীয় জমি-বাড়ির দালাল চক্রের। শঙ্কর বিশ্বাস, বিশ্বজিত্‌ মল্লিক-সহ জনা দশেকের ওই সিন্ডিকেট বেশ কিছু দিন ধরেই ওই বাড়ি ও জমি হাতানোর চেষ্টা করছিল বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, টাকার টোপ দিয়ে লাভ না হওয়ায়, নিঃসঙ্গ ওই মহিলাকে ভয় দেখানোও শুরু করে ছিল ওই জমি ব্যবসায়ীরা। তাতেও কাজ না হওয়ায় তারা এ বার টোপ দেয় স্মরজিত্‌কে। জেরায় ওই কেয়ারটেকার যুবকটি জানায়, ওই মহিলাকে দিয়ে জমিটি লিখিয়ে নিতে পারলে নগদ ৫০ হাজার টাকা এবং জমি হস্তান্তরের সময়ে আরও বড় অঙ্কের টাকার ‘লোভ’ দেখানো হয়েছিল সিন্ডিকেটের পক্ষ থেকে। ‘সুপারি’র ৩০ হাজার টাকা চেক মারফত আগাম দেওয়ায়ও হয়েছিল ওই কেয়ারটেকারকে। পুলিশের কাছে তা কবুল করেছে স্মররজিত্‌।

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন