কিশোরী মেয়েকে কোদাল দিয়ে কুপিয়ে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার করা হল বাবাকে। রবিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে বনগাঁ থানার সুটিয়া গ্রামে। পুলিশ জানিয়েছে, নিহতের নাম অঞ্জলি সিংহ (১৬)। ধৃতের নাম রাম সিংহ। দেহটি ময়না-তদন্তের জন্য বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে পাঠিয়েছে পুলিশ। উদ্ধার করা হয়েছে রক্তমাখা কোদালটিও। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের অনুমান, পারিবারিক নানা কারণে মেয়ের সঙ্গে বাবার সম্পর্ক ভাল ছিল না। তাদের মধ্যে বিবাদ লেগেই থাকত। তার জেরেই ওই ঘটনা। ঘটনার তদন্ত চলছে।
পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আদতে উত্তর প্রদেশের বাসিন্দা রাম কয়েক বছর আগে সুটিয়া গ্রামে এসে বসবাস শুরু করে। সে ঠিকা শ্রমিকের কাজ করত। তার চার ছেলে-মেয়ে। অঞ্জলি মেজো। বছর দেড়ের আগে স্থানীয় ভুলোট গ্রামের এক যুবকের সঙ্গে তার বিয়ে হয়. কিন্তু স্বামীর সঙ্গে বনিবনা না হওয়ার গত তিন মাস ধরে মেয়েটি বাপের বাড়িতে থাকত। রবিবার সকাল ৬টা নাগাদ রাম কাজে বের হওয়ার সময়ে অঞ্জলি তাকে কটূ মন্তব্য করে বলে অভিযোগ। তার পর রাম মেয়েকে কিল ঘুষি মারতে থাকে। অভিযোগ, সে সময় রাম কোদাল দিয়ে মেয়ের গলায়-মুখে কোপ মারতে থাকে। ঘটনাস্থলেই মারা যায় ওই কিশোরী।
এ দিন সকালে রামের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল, বাড়িতে রয়েছে অঞ্জলির ভাই, চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র বিজয়। সে বলে, “সকালে ঘুমিয়ে ছিলাম। চিত্কার শুনে ঘরের বাইরে এসে দেখি দিদি উঠোনে পড়ে আছে। রক্তে মাখামাখি। বাবা পালিয়ে যায়। দিদির বিয়ের আগে ও পরে এক জনের সঙ্গে মেলামেশা করত। বাবা তা নিয়ে ওকে প্রায়ই বকাবকি করত।” বাসিন্দারা জানিয়েছেন, মেয়েকে খুন করে পালিয়ে যাওয়ার পথে বিএসএফ জওয়ানেরা রাস্তায় আটকে রাখেন রামকে। পুলিশ গিয়ে তাকে গ্রেফতার করে। নিহত কিশোরীর মা নীলিমাদেবী কলকাতায় পরিচারিকার কাজ করেন। খবর পেয়ে বাড়ি ফিরেছেন। কাঁদতে কাঁদতে বললেন, “আমার স্বামী ঠিক মতো কাজকর্ম করত না। যা নিয়ে আমরা অশান্তিতে ছিলাম।” নিহতের মামি বিপুলদেবী বলেন, “রামের স্বভাব-চরিত্র এক্বারেই ভাল ছিল না। মেয়েকেও কুপ্রস্তাব দিত। রাজি না হওয়ার ওর উপরে রাগ ছিল।”