স্বামী ছিলেন এক লগ্নি সংস্থার এজেন্ট। কিন্তু তাঁর হয়ে আমানত সংগ্রহের কাজটা করতেন স্ত্রী-ও। সারদা-কাণ্ডের পর থেকে এই সংস্থাতেও লেনদেন কার্যত বন্ধ হয়ে যায়। টাকা ফেরত দেওয়ার চাপ আসছিল গ্রাহকদের থেকে। চলছিল গালমন্দও। রবিবার অস্বাভাবিক মৃত্যু হল স্ত্রীর। ঘটনাটি ঘটেছে ডায়মন্ড হারবারের মানিকা গ্রামে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম সুপা বাগ (২৭)। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, মানসিক অবসাদে ওই বধূ আত্মঘাতী হয়েছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সুপাদেবীর স্বামী রবিন কয়েক বছর ধরেই ‘রিস্তা’ নামে একটি লগ্নি সংস্থার এজেন্টের কাজ করতেন। স্বামী বিভিন্ন এলাকা থেকে টাকা সংগ্রহ করতেন। স্ত্রী ওই গ্রামেরই বাসিন্দা ও পরিজনদের কাছ থেকে টাকা তুলতেন। সারদা কাণ্ডের পর ওই সংস্থার লেনদেন প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। প্রতিনিয়ত টাকা ফেরতের দাবিতে তাঁর বাড়িতে আমানতকারীরা চড়াও হচ্ছিল বলে অভিযোগ। কিন্তু এই টাকা তাঁরা ফেরত দিতে পারছিলেন না। এই নিয়ে স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে বছর খানেক ধরেই বিবাদ চলছিল। রবিনবাবু বলেন, “এলাকা থেকে প্রায় ৬-৭ লক্ষ টাকা আমরা দু’জনে মিলে তুলেছিলাম। কিন্তু সেই টাকা ফেরত দিতে না পারায় আমাকে রাস্তাঘাটে গালিগালাজ করছিল আমানতকারীরা। মারধরেরও হুমকি দেয় তাঁরা।”
আমানতকারীরা প্রায়ই বাড়িতে এসে সুপাদেবীকে নানা কটূ কথা বলছিলেন বলেও অভিযোগ। এতে সুপাদেবীর সঙ্গে রবিনবাবুর অশান্তি চরমে ওঠে।
রবিবার সন্ধ্যায় বাড়িতে ফিরে রবিনবাবু দেখেন, বারান্দা ও ঘরের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ। অনেক ডাকাডাকির পরও দরজা না খোলায় তিনি দরজা ভেঙে ঘরে ঢোকেন। গামছার ফাঁস লাগানো ঝুলন্ত অবস্থায় সুপাদেবীকে উদ্ধার করে ডায়মন্ড হারবার জেলা হাসপাতালে নিয়ে যান স্বামী। সেখানেই চিকিত্সকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। দেহটি ময়না-তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।