স্ত্রীর মৃত্যুর খবরে আত্মঘাতী জওয়ান

ছুটি মঞ্জুর হয়েছিল। বাড়ি ফেরার জন্য ব্যাগও গোছানো হয়ে গিয়েছিল বছর ছাব্বিশের বিএসএফ জওয়ানের। আজ, বুধবার দেগঙ্গার বাড়িতে তিনি ফিরবেন বটে, তবে কফিনে শুয়ে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দেগঙ্গা ও করিমগঞ্জ শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০১৫ ০১:৫৫
Share:

অমিত পাড়ুই ও তুহিনা পাড়ুই

ছুটি মঞ্জুর হয়েছিল। বাড়ি ফেরার জন্য ব্যাগও গোছানো হয়ে গিয়েছিল বছর ছাব্বিশের বিএসএফ জওয়ানের। আজ, বুধবার দেগঙ্গার বাড়িতে তিনি ফিরবেন বটে, তবে কফিনে শুয়ে।

Advertisement

স্ত্রীর অস্বাভাবিক মৃত্যুর খবর পেয়ে সোমবার গভীর রাতে নিজের বন্দুকের গুলিতে আত্মঘাতী হয়েছেন অমিত পাড়ুই নামে অসমের করিমগঞ্জে কর্মরত বিএসএফের ১৩৩ নম্বর ব্যাটালিয়নের ওই জওয়ান। সোমবার রাতেই তিনি খবর পান, কীটনাশক খেয়ে মারা গিয়েছেন স্ত্রী তুহিনা বিশ্বাস পাড়ুই (২০)।

কেন দু’টি জীবন এ ভাবে শেষ হয়ে গেল, তা বুঝতে পারছেন না পরিবার-পরিজন ও আত্মীয়েরা। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের অনুমান, পারিবারিক কিংবা ব্যক্তিগত কারণে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঠিক মতো বনিবনা হচ্ছিল না। যার জেরে
এই ঘটনা।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দেগঙ্গার চৌরাসি পঞ্চায়েতের চিংড়িয়া গ্রামের পাড়ুইপাড়ার বাসিন্দা পরেশ পাড়ুইয়ের তিন ছেলের মধ্যে বড় অমিত। বছর তিনেক আগে বিএসএফে চাকরি পেয়েছিলেন তিনি। ফেসবুকের মাধ্যমে পরিচয় হয় নদিয়ার হাঁসখালি থানার বৈরামপুর মহেশতলার বাসিন্দা মানবেন্দ্র বিশ্বাসের একমাত্র মেয়ে তুহিনার সঙ্গে। দু’জনের প্রেমের সম্পর্ক গভীর হয়। মাস কয়েক আগে দু’জনের বিয়েও হয়।

স্ত্রীকে দেগঙ্গার বাড়িতে রেখে অসমে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী চান্দশ্রীকোণায় কর্মস্থলে ফিরে যান অমিত। পুলিশ জানায়, দিন কুড়ি আগে বাপের বাড়িতে যান তুহিনা। সোমবার রাত ৯টা নাগাদ অমিত বাবাকে ফোন করে জানতে চান, শ্বশুরবাড়ি থেকে কোনও খবর এসেছে কিনা। ছেলের ফোন পেয়ে পরেশবাবু বেয়াইকে ফোন করে বৌমার খবর জানতে চান। সেখান থেকে জানানো হয়, তুহিনা অসুস্থ। কিছুক্ষণ পরেই মানবেন্দ্রবাবু ফোনে খবর দেন, মেয়ে কীটনাশক খেয়ে আত্মঘাতী হয়েছে।

মঙ্গলবার অমিতের মা বন্দনাদেবী বলেন, ‘‘বৌমা কীটনাশক খেয়ে আত্মঘাতী হয়েছে বলে জানার কিছুক্ষণ বাদেই ছেলে ফোন করে বলে, তুহিনা চলে গিয়েছে, আমিও চলে যাচ্ছি। তখনও মনে হয়নি, ও কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারে।’’ বন্দনাদেবী জানান, মঙ্গলবার সকালে নদিয়ায় যাওয়ার জন্য তৈরি হচ্ছিলেন তাঁরা। সে সময়ে দেগঙ্গা থানা থেকে জানানো হয়, সোমবার রাত ১টা নাগাদ ছেলেও আত্মঘাতী হয়েছে।’’

অমিতের বন্ধুদের কথায়, ‘‘এমনিতে ও খুব কম কথা বলত। অভিমানী ছিল। বিয়ের সময়ে স্ত্রীকে বলেছিল, তোমার কিছু হলে আমিও থাকব না। জীবন দিয়ে যেন সে
কথাই রাখল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন