নিহত সোমনাথ মণ্ডল।
ষোলো দিন আগে সোনারপুর থেকে অপহৃত ব্যবসায়ী সোমনাথ মণ্ডলের দেহ মিলল বাসন্তীর ১ নম্বর গরানবোস এলাকার মাতলা নদীতে।
তদন্তে নেমে কয়েক জনকে গ্রেফতারের পরেই পুলিশ জানতে পেরেছিল, মুক্তিপণ না মেলায় বছর আঠাশের ওই ব্যবসায়ীকে খুন করা হয়। কিন্তু দিন কয়েক ধরে তল্লাশির পরেও সোমনাথের দেহ মেলেনি। রবিবার ভোরে গরানবোসের কিছু বাসিন্দা নদীতে মৃতদেহটি দেখে পুলিশে জানান।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, ইমারতি দ্রব্যের ব্যবসায়ী সোমনাথের বাড়ি সোনারপুরের ভবানীপুর এলাকায়। গত ১৮ ডিসেম্বর বিকেলে দোকানে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে তিনি আর ফেরেননি। পরে তাঁর মোটরবাইকটি উদ্ধার হয় সুভাষগ্রামে। ১৯ ডিসেম্বর সকালে সোমনাথের পরিবার বারুইপুর থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করে। ওই রাতেই ৫০-৬০ হাজার টাকা মুক্তিপণ চেয়ে ওই ব্যবসায়ীর বাড়িতে ফোন যায়। তদন্তে নেমে পুলিশ সুভাষগ্রাম থেকেই রায়দিঘির বাসিন্দা দিলীপ পুরকাইতকে গ্রেফতার করে।
শোকাহত মা।
পুলিশ সূত্রে খবর, জেরায় দিলীপ জানায়, বাসন্তীর গরানবোসে স্বপন সর্দার নামে এক ব্যক্তির বাড়িতে সোমনাথকে রাখা হয়। সেখানে সোমনাথকে না পেয়ে স্বপনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাকে জেরা করে বাসন্তী থেকে হাবিবুল্লা মল্লিক নামে আর এক জনকে ধরা হয়। তদন্তকারীদের দাবি, সোমনাথের জ্যাঠার বাড়িতে ভাড়া থাকত দিলীপ। সেই সুবাদেই সোমনাথের সঙ্গে আলাপ। পরে দিলীপ সুভাষগ্রামে বাড়ি ভাড়া নিয়ে চলে যায়। মুক্তিপণের জন্য দিলীপই সোমনাথকে অপহরণের ছক কষে। পুলিশের দাবি, জেরায় দিলীপ, স্বপন ও হাবিবুল্লা কবুল করে, মুক্তিপণের টাকা না মেলায় ২০ ডিসেম্বর রাতে সোমনাথকে শ্বাসরোধ করে খুন করে মাতলা নদীতে ফেলে দেয় তারা।
রবিবার দেহ উদ্ধারের পরে খুনে জড়িত অভিযোগে গরানবোস থেকে স্বপনের বোন মমতা বিবিকেও পুলিশ গ্রেফতার করে। বারুইপুর আদালতে এ দিনই তাকে পাঁচ দিন পুলিশ হেফাজত দেন বিচারক। তদন্তকারীদের দাবি, ঘটনায় আরও কয়েক জন জড়িত। তাদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।
—নিজস্ব চিত্র।