প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা এনে ইতিমধ্যে বামেদের হাতে থাকা তিনটি পঞ্চায়েত ছিনিয়ে নিয়েছে তৃণমূল। এ বার তৃণমূলের লক্ষ্য বামেদের স্বরূপনগর ব্লকের বাঁকড়া-গোকুলপুর গ্রাম পঞ্চায়েতটি। ওই পঞ্চায়েতের প্রধানের বিরুদ্ধেও তারা ইতিমধ্যেই দুর্নীতি এবং স্বজনপোষণের অভিযোগে অনাস্থা এনেছে। আগামী ১৮ ডিসেম্বর ভোটাভুটি হওয়ার কথা।
সম্প্রতি তৃণমূল প্রার্থী কপিলকৃষ্ণ ঠাকুরের মৃত্যুতে বনগাঁ লোকসভায় উপনির্বাচন আসন্ন। স্বরূপনগর বিধানসভা কেন্দ্রটি বনগাঁ লোকসভার মধ্যে পড়ে। বিধানসভাটি তৃণমূলের দখলে থাকলেও ২০১৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনের শেষে ওই ব্লকের মোট ১০টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ৭টিতে জয়ী হয়ে প্রধান গঠন করে বামফ্রন্ট। ৩টিতে জয়ী হয় তৃণমূল। পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির আসনটিও তৃণমূল-কংগ্রেসের কাছ থেকে বামফ্রন্টের হস্তগত হয়। এই পরিস্থিতিতে বনগাঁ লোকসভা উপনির্বাচনে স্বভাবতই বাড়তি সুবিধা মিলবে বলে আশা করছিলেন বামফ্রন্টের নেতৃত্ব। কিন্তু গত কয়েক মাসের মধ্যে স্বরূপনগরে বামেদের সদস্যেরা একের পর এক তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় একটার পর একটা গ্রাম পঞ্চায়েত বামেদের হাতছাড়া হওয়া শুরু হয়েছে।
ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যে তেঁপুল-মির্জাপুর, গোবিন্দপুর এবং বিথারি-হাকিমপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে বামেদের বিরুদ্ধে অনাস্থা এনে জয়ী হয়েছে তৃণমূল। ফলে এই মুহূর্তে স্বরূপনগর ব্লকে বামেদের দখলে আছে বালতি-নিত্যান্দকাটি, শাঁড়াপুল-নির্মাণ, চারঘাট এবং বাঁকড়া-গোকুলপুর এই ৪টি পঞ্চায়েত। অন্য দিকে তৃণমূলের ৩টি থেকে বেড়ে ৬টি পঞ্চায়েত দখলে এসেছে। সেগুলি হল, সগুনা, কৈজুড়ি, স্বরূপনগর-বাংলানি, তেঁপুল-মির্জাপুর, গোবিন্দপুর এবং বিথারি-হাকিমপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রধানের আসন দখলে এনেছে। বিথারি-হাকিমপুর পঞ্চায়েতে তৃণমূলের প্রধান হন সেরিনা খাতুন মির্জা।
স্বরূপনগর পঞ্চায়েত সমিতির মোট আসন ৩০টি। তার মধ্যে বামেদের ১৯টি এবং তৃণমূলের দখলে ১১টি আসন রয়েছে। যে ভাবে গ্রাম পঞ্চায়েতের বাম সদস্যেরা একে একে তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন, তাতে খুব শীঘ্রই পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যেরাও তাদের দলেই যোগ দেবেন বলে দাবি করেছেন ব্লক তৃণমূল নেতা রমেন সর্দার। তিনি বলেন, “রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর উন্নয়নমূলক কাজে সামিল হতে সকলে তৃণমূলে আসছেন। তা ছাড়া, কাজ না করায় সিপিএম নেতৃত্বের উপরেও মানুষ বিশ্বাস হারিয়েছে।” ব্লক বামফ্রন্টের আহ্বায়ক হামালউদ্দিন আহমেদ আবার বলেন, “ভয় দেখিয়ে, টাকার লোভ দিয়ে তৃণমূল আমাদের সদস্যদের ভাঙিয়ে নিচ্ছে। তবে পঞ্চায়েত সমিতি হাতছাড়া হওয়ার কোনও লক্ষণ নেই। তৃণমূল সদস্যেরা যে ভাবে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে রেখেছে, তাতে আমাদের পঞ্চায়েত সদস্যেরা নিশ্চিন্ত মনে কাজ করতে পারছেন না।”