সাহেবখালি নদীর উপরে ফের চালু ভেসেল

দীর্ঘ দিনের দাবি একটা সেতুর। সতেরো বছরে দু’দুবার শিলান্যসের পরেও বাম সরকারের আমলে সেতু তৈরি হয়নি। পরিবর্তে মিলেছিল ভেসেল। কিন্তু তা-ও আবার মাত্র এক দিন চলাচলের পরে বন্ধ হয়ে যায়। হিঙ্গলগঞ্জের ক্ষুব্ধ মানুষ সেতুর ফলক ভেঙে ভাসিয়ে দিয়েছিলেন নদীর জলে। ভেসেল বন্ধ হয়ে গেলে জেটি ভেসে গিয়েছিল জঙ্গলে। ফের প্রায় ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে আনা হয়েছে নতুন ভেসেল। সম্প্রতি কলকাতা থেকে স্যুইচ টিপে হিঙ্গলগঞ্জের নেবুখালি এবং দুলদুলির মধ্যে সাহেবখালি নদী পারাপারের জন্য সেই ভেসেলের উদ্বোধন করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বসিরহাট শেষ আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০১৪ ০০:৩১
Share:

দীর্ঘ দিনের দাবি একটা সেতুর। সতেরো বছরে দু’দুবার শিলান্যসের পরেও বাম সরকারের আমলে সেতু তৈরি হয়নি। পরিবর্তে মিলেছিল ভেসেল। কিন্তু তা-ও আবার মাত্র এক দিন চলাচলের পরে বন্ধ হয়ে যায়। হিঙ্গলগঞ্জের ক্ষুব্ধ মানুষ সেতুর ফলক ভেঙে ভাসিয়ে দিয়েছিলেন নদীর জলে। ভেসেল বন্ধ হয়ে গেলে জেটি ভেসে গিয়েছিল জঙ্গলে। ফের প্রায় ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে আনা হয়েছে নতুন ভেসেল। সম্প্রতি কলকাতা থেকে স্যুইচ টিপে হিঙ্গলগঞ্জের নেবুখালি এবং দুলদুলির মধ্যে সাহেবখালি নদী পারাপারের জন্য সেই ভেসেলের উদ্বোধন করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নেবুখালিতে জেলা পরিষদের সভাধিপতি রহিমা মণ্ডল এক অনুষ্ঠানে তার ফিতেও কাটেন।

Advertisement

সাহেবখালি নদীর উপরে সেতু হলে সামশেরনগর, কালীতলা, রমাপুর, হেমনগর, পারঘুমটি, সর্দারপাড়া, যোগেশগঞ্জ, সাহেবখালি-সহ সুন্দরবন এলাকার বেশ কয়েক হাজার মানুষ উপকৃত হবেন। এলাকার বেশ কয়েকটি হাইস্কুল, প্রাথমিক স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের আর বর্ষার দিনে বিপদের ঝুঁকি নিয়ে নৌকায় নদী পারাপার করতে হবে না। সেতু হলে পর্যটকেরাও দ্রুত গাড়ি নিয়ে সরাসরি সুন্দরবনের ধারে পৌঁছতে পারবেন। সেতু না হলেও ভেসেল চালু হওয়াতেও স্থানীয় মানুষ। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে। ফের উদ্বোধনের পরে বন্ধ হবে না তো ভেসেল?

আপাতত সপ্তাহে তিন দিন ভেসেলটি চলবে বলে জানা গেল। মহকুমা প্রশাসন এবং স্থানীয় সূত্রের খবর, হিঙ্গলগঞ্জের সুন্দরবন-লাগোয়া গ্রামের বাসিন্দারা শহর বসিরহাট-কলকাতার সঙ্গে যোগাযোগের জন্য নেবুখালি এবং দুলদুলির মধ্যে সাহেবখালি নদীর সেতুর দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন বহু কাল আগেই। ১৯৯০ সালে রাজ্যের তৎকালীন পরিবহণ মন্ত্রী শ্যামল চক্রবর্তী সেতুর শিলান্যাস করেন। মাপজোক-মাটি পরীক্ষা হলেও সেতুর কাজ শুরু হয়নি তখন। ক্ষোভ জমতে থাকে এলাকায়। ১৯৯৫ সালে বিধানসভা নির্বাচনের আগে একই সেতুর দ্বিতীয়বার শিলান্যাস করেন রাজ্যের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু। এক বাসে কলকাতায় যাওয়ার স্বপ্নেও দেখানো হয় এলাকার মানুষকে। কিন্তু ওই পর্যন্তই। হচ্ছে-হবে করে শেষ পর্যন্ত আর সেতুর কাজ আরম্ভই হয়নি। এলাকার মানুষ শিলান্যাসের ফলক ভেঙে সাহেবখালি নদীতে ভাসিয়ে দেন। স্থানীয় মানুষের বক্তব্য, ভোট এলেই সেতু তৈরির প্রতিশ্রুতি দেন সব দলের নেতা-নেত্রীরা। কিন্তু ভোট মিটলে কাজের কাজ কিছু হয় না।

Advertisement

২০০৬ সালে রাজ্যের তৎকালীন জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি মন্ত্রী গৌতম দেবকে সঙ্গে নিয়ে ক্রীড়ামন্ত্রী সুভাষ চক্রবর্তী সেতুর পরিবর্তে ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ভেসেলের উদ্বোধন করেন। কিন্তু কোনও এক অজানা কারণে উদ্বোধনের পর দিন থেকেই ভেসেল চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এরপর একদিন দেখা যায়, দুলদুলির দিকের জেটিটাই উধাও হয়ে গিয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শিকল ছিঁড়ে সেটি সুন্দরবনের দিকে ভেসে গিয়েছে। ব্লক প্রশাসনের তৎপরতায় অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে সেটি উদ্ধার করে আনা হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন