কয়লা তুলতে খনিতে নেমে মৃত ৩, নিখোঁজ ১

কয়লা তুলতে অবৈধ ভাবে খোলামুখ খনিতে নেমে ধসে চাপা পড়ে মৃত্যু হল দু’ভাই-সহ তিন জনের। নিখোঁজ এক মহিলা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বড়জোড়া শেষ আপডেট: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০১:২০
Share:

তখনও ধসে চাপা পড়ে এক জন। —নিজস্ব চিত্র।

কয়লা তুলতে অবৈধ ভাবে খোলামুখ খনিতে নেমে ধসে চাপা পড়ে মৃত্যু হল দু’ভাই-সহ তিন জনের। নিখোঁজ এক মহিলা। বৃহস্পতিবার সকালে বাঁকুড়ার বড়জোড়ার বাগুলি এলাকার ঘটনা। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত হাবল বাগদি (৫০), তাঁর ভাই বিশ্বনাথ বাগদি (৪৭) এবং কল্পনা বাগদি (৫০) মালিয়াড়ার বাসিন্দা। নিখোঁজ রিঙ্কু বাউড়ির বয়স বছর বাইশ। তিনিও মালিয়াড়াতে থাকেন।

Advertisement

প্রায় ৮০০ হেক্টর এলাকা জুড়ে রয়েছে বড়জোড়া নর্থ কোলিয়ারি। ২০১৫ সালে তার দায়িত্ব পায় পিডিসিএল (পাওয়ার ডেভলপমেন্ট কর্পোরেশন লিমিটেড)। প্রশাসন সূত্রের খবর, পিডিসিএল-এর তরফে একটি ঠিকাদার সংস্থাকে নিয়োগ করা হয়েছে কয়লা তোলার কাজে। এখন কোলিয়ারিতে উত্তোলনের আগের পরিকাঠামো তৈরির কাজ চলছে। পুলিশ সূত্রের দাবি, স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ ওই কোলিয়ারি থেকে অবৈধ ভাবে কয়লা তোলেন। ঝুঁকি নিয়ে গর্ত খুঁড়ে, ভিতরে ঢুকে কয়লা বার করে খোলাবাজারে বেচেন। এ দিন সে ভাবেই কয়লা তোলা চলছিল। আচমকা ধস নামে। চাপা পড়ে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তিন জনের।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তল্লাশি চালিয়েও রাত পর্যন্ত খোঁজ মেলেনি রিঙ্কু বাউড়ির। রিঙ্কুর স্বামী রাকেশ বাউড়ি বলেন, ‘‘খুবই উদ্বেগে রয়েছি। আমাদের দু’বছরের বাচ্চা মা-কে খুঁজছে।’’ স্থানীয় একটি সূত্রের দাবি, ধসে কয়েক জন জখমও হন। তবে সে দাবি উড়িয়ে দিয়েছে পুলিশ।

Advertisement

উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে দেহ। ছবি: বিকাশ মশান

ঘটনায় খনির নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ জানিয়েছেন, মাঝেমধ্যেই পুলিশ কয়লা চুরি রুখতে খনি লাগোয়া এলাকায় অভিযান চালায়। উত্তোলনের দায়িত্ব পাওয়া সংস্থার কিছু নিরাপত্তাকর্মীও মোতায়েন থাকেন। তার পরেও কেন রোখা যাচ্ছে না কয়লা চুরি? বাঁকুড়া জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ তথা বড়জোড়ার তৃণমূল নেতা সুখেন বিদের মন্তব্য, “প্রশাসনিক বৈঠকে বারবার ওই সংস্থাকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তাকর্মী মোতায়েন করতে বলেছি। কিন্তু তারা উদাসীন থাকায় এমনটা হল।’’ ওই ঠিকা সংস্থার এক আধিকারিকের সঙ্গে এ দিন যোগাযোগ করা হলে তিনি বৈঠকে আছেন জানিয়ে ফোন কেটে দেন। পরে আর ফোন ধরেননি। জবাব আসেনি এসএমএস-এর। জেলাশাসক উমাশঙ্কর এস অবশ্য জানিয়েছেন, এ ব্যাপারে কয়লা উত্তোলনকারী সংস্থার কাছে রিপোর্ট চাওয়া হবে। পুলিশ সুপার কোটেশ্বর রাওয়ের আশ্বাস, ‘‘পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করে কড়া পদক্ষেপ করা হবে। কেউ এ নিয়ে অভিযোগ না জানালে, পুলিশ নিজেই তা করবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন