মাটি চাপা পড়ে মৃত ৩ বালিকা

রবিবার বাঁকুড়ার পাত্রসায়রের আখড়াশাল গ্রামের মেটেপাড়ায় এই ঘটনায় জখম হয়েছে আরও দুই খুদে।

Advertisement

তারাশঙ্কর গুপ্ত

পাত্রসায়র শেষ আপডেট: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০২:৫২
Share:

রবিবার দুপুরে ছ’-সাত জন খেলতে খেলতে গর্তে ঢুকে পড়লে দুর্ঘটনা ঘটে। প্রতীকী ছবি।

রাস্তার ধারে ডাঁই করে রাখা ছিল মাটি। পাশে খোঁড়া গর্ত। সেখানে খেলতে নেমে আচমকা মাটি চাপা পড়ে মৃত্যু হল তিন বালিকার। রবিবার বাঁকুড়ার পাত্রসায়রের আখড়াশাল গ্রামের মেটেপাড়ায় এই ঘটনায় জখম হয়েছে আরও দুই খুদে।

Advertisement

মৃত পূজা বাউড়ি (১০), শিল্পা বাউড়ি (১৩) ও রিয়া বাউড়ির (৯) বাড়ি ওই এলাকাতেই। পূজার ভাই, বছর পাঁচেকের কৃষ্ণ বাউড়ি ও বৃষ্টি বাউড়ি নামে বছর ছয়েকের আর এক বালিকাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। এসডিপিও (বিষ্ণুপুর) সুকোমলকান্তি দাস বলেন, ‘‘এলাকার ছেলেমেয়েরা মাটির ঢিবিতে গুহার মতো গর্ত করেছিল। রবিবার দুপুরে ছ’-সাত জন খেলতে খেলতে সেই গর্তে ঢুকে পড়লে দুর্ঘটনা ঘটে।’’ যদিও আইএনটিটিইউসি-র পাত্রসায়র ব্লক সভাপতি প্রভাত মুখোপাধ্যায় অভিযোগ করেন, দিন পনেরো আগে রাস্তার কাজের জন্য ঠিকাদার পাশে গর্ত খুঁড়ে মাটি তোলেন। সেখানেই চাপা পড়েছে খুদেরা।

প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, আখড়াশাল গ্রামে দ্বারকেশ্বর নদীর পাড় ঘেঁষে গ্রাম সড়ক যোজনায় রাস্তা তৈরি হচ্ছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন এলাকার পাঁচ বালক-বালিকা রাস্তার কাজের জন্য রাখা মাটির পাশে গর্তে নেমেছিল। তাদের অভিভাবকেরা দিনমজুরি করেন। দুপুরে তাঁরা বাড়িতে ছিলেন না। দুর্ঘটনার সময়ে খেলার এক সঙ্গী গর্তের বাইরে ছিল। সে-ই এলাকায় খবর দেয়। স্থানীয় লোকজন কোদাল, বেলচা নিয়ে মাটি সরিয়ে ছেলেমেয়েগুলিকে বার করেন। বিষ্ণুপুর হাসপাতালে নিয়ে গেলে তিন জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানান চিকিৎসকেরা।

Advertisement

আরও পড়ুন: কে খুঁড়েছে গর্ত, বিতর্ক পাত্রসায়রে

পূজার মাসি অর্চনা বাউড়ি বলেন, ‘‘কয়েক বছর আগে দিদির স্বামী মারা যান। আজ মেয়েটাও চলে গেল। ছেলেটা হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছে!’’ বৃষ্টির বাবা উত্তম বাউড়ির বক্তব্য, “বেশ কয়েক দিন ধরে মাটি কেটে গর্ত করা ছিল। বাচ্চারা খেলার ছলে নেমেছে। গর্তগুলি দেখাশোনার লোক থাকলে এই বিপদ হয়তো ঘটত না।’’ কাজের বরাতপ্রাপ্ত ঠিকাদারের সঙ্গে ফোনে চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি। জবাব মেলেনি মেসেজেরও। মহকুমাশাসক (বিষ্ণুপুর) মানসকুমার মণ্ডল বলেন, ‘‘বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের কর্মীদের পাঠানো হয়েছে। আর কেউ চাপা পড়ে রয়েছে কি না দেখা হচ্ছে।’’ তবে বাঁকুড়া জেলা পরিষদ ও পূর্ত দফতরের কর্তাদের দাবি, দুর্ঘটনার খবর শোনেননি। এমনটা ঘটে থাকলে তদন্ত হবে বলে তাঁদের আশ্বাস।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন