ছাত্র খুনে আরও পাঁচ অভিযুক্ত

ঠাকুরপুকুরে ছাত্রকে মিটিয়ে মারার ঘটনায় আরও পাঁচ জনের বিরুদ্ধে হরিদেবপুর থানায় অভিযোগ করল নিহতের পরিবার। গণপিটুনিতে নিহত ছাত্র অনিরুদ্ধ বিশ্বাসের পরিবারের সদস্যরা বৃহস্পতিবার রাতেই ওই পাঁচ জনের নামে অভিযোগ জানিয়েছিলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ জুন ২০১৬ ০৯:০৬
Share:

ঠাকুরপুকুরে ছাত্রকে মিটিয়ে মারার ঘটনায় আরও পাঁচ জনের বিরুদ্ধে হরিদেবপুর থানায় অভিযোগ করল নিহতের পরিবার।

Advertisement

গণপিটুনিতে নিহত ছাত্র অনিরুদ্ধ বিশ্বাসের পরিবারের সদস্যরা বৃহস্পতিবার রাতেই ওই পাঁচ জনের নামে অভিযোগ জানিয়েছিলেন। যদিও শুক্রবার রাত পর্যন্ত ওই পাঁচ জনের কাউকেই পুলিশ গ্রেফতার করতে পারেনি। অনিরুদ্ধের পরিবারের তরফে এ দিন বলা হয়, অনিরুদ্ধকে মারধরের ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া চিন্ময় সরকার এবং বিনোদ বাল্মীকি ছাড়া আরও কয়েক জন ছিল বলে তাঁরা জানতে পেরেছেন। সেই মতো বৃহস্পতিবার রাতে পাঁচ জনের বিরুদ্ধে নতুন করে অভিযোগ জানানো হয়।

গত শুক্রবার হরিদেবপুর থানা এলাকার সত্যজিৎ পার্কের বাসিন্দা অনিরুদ্ধ পাড়ার একটি কুয়োর পাড়ে বসে বন্ধু সুপ্রতিমের সঙ্গে গল্প করছিলেন। বেশ কয়েক দিন ধরে জন্ডিসে ভোগার পরে সে দিনই একটু ভাল বোধ করায় তিনি বন্ধুর সঙ্গে বেরিয়েছিলেন। অভিযোগ, এই সময় আম চুরির অপবাদ দিয়ে পাশের পাড়ার কয়েক জন তাঁকে মারধর করলে ঘটনাস্থলেই অসুস্থ হয়ে পড়েন অনিরুদ্ধ। মঙ্গলবার রাতে একবালপুরের এক বেসরকারি হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়।

Advertisement

অনিরুদ্ধের পরিজন ও বন্ধুদের অভিযোগ, সে দিন ঘটনার পরে পাড়ার লোকজনও সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেনি। কে বা কারা তাঁদের ছেলেকে এমন ভাবে মারল, অনিরুদ্ধর মা ঝর্ণাদেবী বারবার ঘটনাস্থলে গিয়ে জিজ্ঞাসা করলেও কেউ মুখ খোলেননি। এই ঘটনার পর অনিরুদ্ধের পরিবারের তরফে হরিদেবপুর থানার পুলিশের বিরুদ্ধেও অসহযোগিতার অভিযোগ করা হয়েছিল। এ দিন বিরোধী দলের দুই নেতা, কংগ্রেসের আব্দুল মান্নান এবং‌ সিপিএমের সুজন চক্রবর্তী অনিরুদ্ধের বাড়িতে গেলে তাঁদের সঙ্গে কথা বলার সময়ে পরিবারের সদস্যরা ফের পুলিশের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ জানান। তাঁদের দাবি, এক সপ্তাহ হয়ে গেলেও পুলিশ বাকি অভিযুক্তদের গ্রেফতার করতে পারেনি।

অনিরুদ্ধের বাবা বিশ্বজিৎ বিশ্বাস, মা ঝর্ণাদেবীর পাশাপাশি পরিবারের অন্যদের সঙ্গেও কথা বলেন মান্নান ও সুজন। পরে তাঁরা জানান, এই ঘটনার সঙ্গে তাঁরা রাজনীতিকে জড়াতে চান না। বৃহত্তর স্বার্থে এ ধরনের ঘটনা বন্ধ করার জন্যই তাঁরা এই সব পরিবারের পাশে দাঁড়াতে চাইছেন। বৃহস্পতিবার স্থানীয় বিধায়ক, মেয়র তথা রাজ্যের মন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায়ও অনিরুদ্ধের পরিবারকে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে এসেছিলেন।

এ দিন অনিরুদ্ধের পরিবারের সঙ্গে দেখা করার পরে মান্নান বলেন, ‘‘গত কয়েক মাসে চুরির অপবাদে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় একের পর এক পিটিয়ে মারার ঘটনায় আমরা আতঙ্কিত। প্রশাসনকে কঠোর হাতে এই সমস্ত ঘটনার মোকাবিলা করতে হবে। না হলে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা বাড়বে।’’ আর সুজন বলেন, ‘‘আইনের শাসন আস্তে আস্তে দুর্বল হয়ে যাচ্ছে। প্রশাসনকে শক্ত হাতে এই সব ঘটনার মোকাবিলা করতে হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement