দুমড়ে গিয়েছে গাড়ি। নিজস্ব চিত্র।
গ্রাম থেকে গাড়ি ভাড়া করে মেলায় গিয়েছিলেন নয় যুবক। বীরভূমের পাথরচাপুড়ি দাতাবাবার মেলায় আড়াই দিন কাটিয়ে বাড়ির দিকে রওনা হয়েছিলেন বর্ধমানের পূর্বস্থলীর ওই যুবকেরা। মাঝ পথে গাড়িতে ট্রাকের ধাক্কা প্রাণ কাড়ল আট জনের।
রবিবার ভোরে কাঁকসার ধোবারুতে, পানাগড়-দুবরাজপুর রাজ্য সড়কে কী কারণে দুর্ঘটনা ঘটল, সে নিয়ে ধন্দে পুলিশ। প্রাথমিক অনুমান, গাড়ি বা ট্রাক, কোনও একটির চালক তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়েছিলেন। ডিভাইডার না থাকা রাস্তায় সামনের কোনও গাড়িকে টপকে যেতেও আলু বোঝাই ট্রাকটি পাশের লেনে এসে থাকতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। মুখোমুখি ধাক্কায় গাড়িটি দুমড়ে-মুচড়ে যায়।
বর্ধমান জেলায় গত এক সপ্তাহে জাতীয় বা রাজ্য সড়কে একের পর এক দুর্ঘটনা ঘটেছে। গত সপ্তাহেই বর্ধমানের রথতলায় দুর্গাপুর এক্সপ্রেস ওয়েতে পিচ বোঝাই ডাম্পারের নীচে চেপ্টে সাত গাড়ি আরোহী মারা যান। বহু ক্ষেত্রে চালকদের বেপরোয়া গতিই যে দুর্ঘটনা ডেকে আনছে, তা মানছেন রাজ্যের আইজি (ট্রাফিক) মনোজ বর্মা। এ দিন কাঁকসার দুর্ঘটনাস্থল ঘুরে তিনি জানান, যান চলাচলে নজরদারি বাড়াতে সিসিটিভি বসানো হবে।
আরও পড়ুন: চুড়ি-খেলনা আর এল না, শোকে গ্রাম
পূর্বস্থলীর ডাঙাপাড়া গ্রামের আলিমুদ্দিন শেখ (৩৫), মারফত শেখ (৩২), সৈয়দ শেখ (২৬), সুকুর আলি শেখ (২৪), সাইদুল শেখ (৩২), বাবন শেখ (৩৫), কাবুল শেখ (২৫) এবং বছর তিরিশের কিতাব আলি শেখ রবিবার দুপুরে বাড়ির পথে রওনা হন। আলিমুদ্দিন ও মারফত দুই ভাই। গাড়ি চালাচ্ছিলেন আব্দুল আলিম শেখ (৩৫)। এই আট জনেরই মৃত্যু হয়েছে। গুরুতর জখম কিতাব বর্ধমান মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন। পুলিশ জানায়, ট্রাকের চালক ও খালাসি চম্পট দেয়।
রবিবার সকালে ডাঙাপাড়া গ্রামে খবর পৌঁছনোর পরেই কান্নার রোল ওঠে। মৃতদের কেউ আনাজ বেচে, কেউ তাঁত বুনে, কাঠ কেটে সংসার চালাতেন। প্রতি বছরই গাড়ি ভাড়া করে পাথরচাপুড়ি মেলায় যান গ্রামের মানুষ। এ দিন গ্রামে গিয়ে স্থানীয় বিধায়ক তথা মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ জানান, মৃতদের পরিবারকে দু’লক্ষ টাকা ও তাঁতযন্ত্র দিয়ে সাহায্যের চেষ্টা চলছে। তাঁদের সন্তানের পড়াশোনার ভার নেবে পঞ্চায়েত সমিতি।