University of Calcutta

‘জাতিবিদ্বেষের’ নালিশ ইতিহাসে

শিক্ষা সূত্রের খবর, কিছু দিন আগে কল্যাণ মণ্ডল নামে এমফিল প্রবেশিকার এক পরীক্ষার্থী উপাচার্যের কাছে অভিযোগ জানান।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৪:২৯
Share:

ছবি: সংগৃহীত।

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগ নিয়ে অভিযোগের শেষ নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের খবর, সম্প্রতি একের পর এক অভিযোগ জমা পড়েছে খোদ উপাচার্যের কাছে। তার মধ্যে তথাকথিত নিম্নবর্ণের এক গবেষক-ছাত্রের প্রতি ‘জাতিবিদ্বেষমূলক’ আচরণের মতো গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। বিষয়টি জানানো হয়েছে আলিপুর থানাতেও।

Advertisement

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের দাবি, ওই গবেষক-ছাত্রের অভিযোগ খতিয়ে দেখার জন্য উপাচার্য সোনালি চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায় বিষয়টি ‘তফসিলি জাতি ও জনজাতি’ সংক্রান্ত সেলে পাঠিয়েছেন। অন্যান্য অভিযোগ পিএইচডি ও এমফিলে ভর্তির ক্ষেত্রে ‘অনিয়ম’ ও ‘স্বজনপোষণ’ সংক্রান্ত।

শিক্ষা সূত্রের খবর, কিছু দিন আগে কল্যাণ মণ্ডল নামে এমফিল প্রবেশিকার এক পরীক্ষার্থী উপাচার্যের কাছে অভিযোগ জানান। পিএইচডি-তে ভর্তি নিয়ে ইতিহাস বিভাগের একাংশের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও স্বজনপোষণের নালিশ জানিয়ে উপাচার্যকে চিঠি দিয়েছেন সন্তু দে নামে এক আবেদনকারীও। এ-সবের মধ্যে ইতিহাস বিভাগের একাংশের বিরুদ্ধে আলিপুর ক্যাম্পাসের এক টিএমসিপি নেতা ঘরে আটকে হেনস্থার অভিযোগও লিখেছেন ফেসবুকে।

Advertisement

একটি বিভাগের বিরুদ্ধে পরপর অভিযোগ উঠতে থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষও উদ্বিগ্ন। বিশেষ করে ‘জাতিবিদ্বেষ’ সংক্রান্ত অভিযোগটি ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছে বলে জানান বহু আধিকারিক। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, মলয় পাতলা নামে এক গবেষক-ছাত্র ১৩ ফেব্রুয়ারি উপাচার্যের দফতরে লিখিত অভিযোগে জানান, ইতিহাসের বিভাগীয় প্রধান শৌভিক মুখোপাধ্যায় এবং কিংশুক চট্টোপাধ্যায় নামে অন্য এক শিক্ষক তাঁর সঙ্গে জাতিবিদ্বেষমূলক আচরণ করেছেন এবং শিক্ষকদের সম্পর্কে আপত্তিকর কিছু পোস্টারের সঙ্গে তাঁর নাম জড়িয়ে মিথ্যা ঘটনায় ফাঁসানোর চেষ্টা করছেন। ওই ধরনের পোস্টারের সঙ্গে তিনি কোনও ভাবেই জড়িত নন এবং সেই পোস্টারে তাঁর জড়িত থাকার কোনও প্রমাণও নেই বলে চিঠিতে লিখেছেন মলয়। তিনি আরও লিখেছেন, ওই সব পোস্টার নিয়ে তাঁর লিখিত জবাব চাওয়া হয়েছে। এক শিক্ষিকার কাছে ঘটনাটি জেনে মলয় ব্যক্তিগত ভাবে বিভাগীয় প্রধানের সঙ্গে দেখা করে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছিলেন। চিঠিতে মলয়ের অভিযোগ, তিনি তথাকথিত নিম্নবর্ণের প্রতিনিধি বলেই তাঁকে এ ভাবে হেনস্থা করা হচ্ছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের খবর, এই প্রথম নয়, ইতিহাস বিভাগে কিছু দিন ধরেই নানা ধরনের অভিযোগ উঠছে। সেই সব অভিযোগ নিয়ে বিভিন্ন সময়ে পোস্টারও পড়েছে ক্যাম্পাসে। তার মধ্যে কয়েকটিতে শিক্ষকদের সম্পর্কে আপত্তিকর মন্তব্য রয়েছে। কিন্তু সেগুলি নিয়ে এত দিনেও যথাযথ তদন্ত হয়নি কেন, সেই প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে।

এ ব্যাপারে বক্তব্য জানতে উপাচার্য সোনালিদেবী এবং সহ-উপাচার্য (শিক্ষা) আশিস চট্টোপাধ্যায়কে ফোন, মেসেজ করেও উত্তর মেলেনি। তবে অন্যতম অভিযুক্ত, ইতিহাসের প্রধান শৌভিকবাবু বলেন, ‘‘তফসিলি জাতি ও জনজাতি সেল ডাকলে সেখানে আমার বক্তব্য জানাব।’’ অন্য অভিযুক্ত কিংশুকবাবুও বলেন, ‘‘এসসি-এসটি সেল ডাকলে নিশ্চয়ই বক্তব্য জানাব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন