কলকাতা হাই কোর্ট। —ফাইল চিত্র।
বিবাহিতা মেয়েকে পিতৃকুলের পারিবারিক সদস্য হিসাবেই গণ্য করার পক্ষে রায় দিল কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ।
রেখা পাল নামে এক মহিলার মামলায় ২০১৪ সালে এই নির্দেশই দিয়েছিলেন হাই কোর্টের তৎকালীন বিচারপতি অশোক দাসঅধিকারী। সেই নির্দেশের বিরুদ্ধে ডিভিশন বেঞ্চে আর্জি জানিয়েছিল রাজ্য সরকার। তবে সরকার পক্ষের দীর্ঘসূত্রিতায় মামলাটি বকেয়া ছিল। শুক্রবার বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চ সরকার পক্ষের আর্জি খারিজ করে দিয়েছে। তার ফলে আগের নির্দেশই বহাল থাকল।
আদালতের খবর, রেখা বীরভূমের বাসিন্দা। বক্রেশ্বর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরির সময়ে তাঁর পৈতৃক জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছিল। ২০১২ সালের অক্টোবরে রাজ্য সরকার একটি নির্দেশিকা প্রকাশ করেছিল। সেই নির্দেশিকা অনুসারে সম্পত্তির ক্ষতিপূরণ হিসেবে রেখা চাকরির আবেদন জানান। কিন্তু রাজ্য সরকার তাঁর আবেদন খারিজ করে দেয়। রাজ্যের যুক্তি ছিল, রেখা বিবাহিত। তাই তিনি বিশেষ কোটায় চাকরি পাওয়ার উপযুক্ত নন। প্রসঙ্গত, বাবার মৃত্যুর পর থেকেই বিধবা মায়ের দেখাশোনা করেছেন রেখা।
রাজ্যের নির্দেশের বিরুদ্ধে ২০১৩ সালে কলকাতা হাই কোর্টের মামলা করেন রেখা। ২০১৪ সালে তৎকালীন বিচারপতি অশোক দাসঅধিকারী রাজ্যের নির্দেশ খারিজ করে জানান, রেখাকে পরিবারের সদস্য হিসাবে ঘোষণা করতে হবে। জমিহারার ক্ষতিপূরণ হিসাবে চাকরি পাওয়ার যোগ্য বলেও তাঁকে গণ্য করতে হবে। রেখার আইনজীবী আশিসকুমার চৌধুরী জানান, যদি বিধবা অথবা বিবাহবিচ্ছিন্না মেয়ে পরিবারের সদস্য হতে পারেন, তা হলে বিবাহিতা মেয়ে কেন সেই সম্মান পাবেন না, সেই প্রশ্ন কোর্টে উঠেছিল। একইসঙ্গে প্রশ্ন উঠেছিল, বিবাহিতা মেয়ে যদি পৈতৃক সম্পত্তি পান তা হলে তাঁকে পরিবারের সদস্য কেন বলা হবে না?
সেই নির্দেশের বিরুদ্ধে ডিভিশন বেঞ্চে আর্জি জানিয়েছিল রাজ্য। তবে প্রায় এক দশক ধরে মামলাটি কার্যত ঝুলেই ছিল। এ দিন রাজ্যের আর্জি খারিজ হওয়ায় পৈতৃক পরিবারের সদস্য হওয়ার অধিকার পেলেন রেখা।
প্রতিদিন ২০০’রও বেশি এমন প্রিমিয়াম খবর
সঙ্গে আনন্দবাজার পত্রিকার ই -পেপার পড়ার সুযোগ
সময়মতো পড়ুন, ‘সেভ আর্টিকল-এ ক্লিক করে